
প্রবাসে থাকা ১৮ বছরের কম বয়সি বাংলাদেশিরা পাবে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)। এজন্য ১৮ বছর বা তার বেশিদের পাশাপাশি ১৬ ও ১৭ বছর বয়সিদের অগ্রিম দুই বছরের তথ্য নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের দফায় দফায় ভোটার করার ঝামেলা কমাতে এ উদ্যোগ নিচ্ছে ইসি। তাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় নাম যুক্ত হবে। ইসির একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আমার দেশকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, বিদেশি পাসপোর্টধারী দ্বিতীয় জেনারেশনকে জাতীয় পরিচয়পত্রের আওতায় আনারও চেষ্টা করছে কমিশন। এক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির বাবা-মাকে অবশ্যই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হতে হবে। এ বিষয়ে ইসি থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সম্প্রতি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে নির্বাচন কমিশনের এ বার্তা বিদেশের বাংলাদেশি মিশনগুলোতে পাঠানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এনআইডি উইংয়ের ডিজি একেএম হুমায়ুন কবির আমার দেশকে বলেন, প্রবাসে থাকা বাংলাদেশিদের অতিরিক্ত দুই বছরের তথ্য সংগ্রহ করার চিন্তা করছি। যে তথ্য নেওয়া হবে, সবারই বয়স হবে ১৮ বছরের নিচে। তারা আমাদের রেমিট্যান্সযোদ্ধা। তাদের সেবাটি সহজীকরণ ও নিরবচ্ছিন্ন করাটা গুরুত্বপূর্ণ। তথ্য সংগ্রহের পর তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হবে। বয়স ১৮ বছর হলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে জাতীয় ভোটার তথ্যভান্ডারের সার্ভারে তথ্য আপলোড হয়ে ভোটার হয়ে যাবে তারা।
নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ১৮ বছরের নিচে প্রবাসীদের এনআইডি দেওয়া হবে। যাদের পিতা-মাতা বাংলাদেশি কিন্তু যারা সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিক এবং পাসপোর্টধারী, তাদের দ্বিতীয় জেনারেশন হিসেবে এনআইডি দেওয়া হবে। এটা কার্যকর করার জন্য আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি। এ বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশি মিশনগুলোকে জানিয়ে দেবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্বের ৮০টি দেশে বাংলাদেশি দূতাবাস ও মিশন রয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে বর্তমানে সাতটি দেশে ভোটার কার্যক্রম চলমান। আরো ৩৩টি দেশে এ কার্যক্রম শুরুর জন্য সচেষ্ট ইসি। ইসির কর্মকর্তারা কেবল প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশে ফিরে আসেন। সেবাটি দিয়ে থাকেন দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের ভোটার করার বিষয়ে অভিজ্ঞতা কম। তাই দূতাবাস ও মিশনের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোটার কার্যক্রম চালু রাখায় অনেক ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিজস্ব দায়িত্বের বাইরে প্রবাসীদের ভোটার সেবা দিতে হচ্ছে। ফলে প্রবাসীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না।
নির্বাচন কমিশন থেকে দক্ষ দুজন করে কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে প্রত্যেক দেশে স্থায়ী নিয়োগ দেওয়া হলে প্রবাসীদের ভোটার করা কাজটি সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ ভোটার করার বিষয়টি একটি চলমান প্রক্রিয়া।
বর্তমানে ১৮ বছরের কম বয়সি বাংলাদেশি নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশি প্রবাসীদের ক্ষেত্রে নিয়মটি চালু ছিল না। যাদের বয়স ১৬ ও ১৭, তাদের তথ্য সংগ্রহ এবং ছবি তুলে ডাটা নিবন্ধনের জন্য কমিশন সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নিবন্ধিত সবাইকে এনআইডি দেবে ইসি। একই সঙ্গে ১৮ বা তার বেশি বয়সিদের ভোটার করা হবে।