Image description

সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে উত্তাল এখন ভারতের রাজনীতি। এর প্রভাব পড়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষোভ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। আর এই ঘটনার জন্য বিজেপি ও কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আরএসএসকে দায়ী করেছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গে শান্তি ফেরাতে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন তিনি।

খোলা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী ‘শান্তি’র আবেদন করে লিখেছেন, পশ্চিমবঙ্গে হঠাৎ করে বিজেপি এবং তার সঙ্গীরা আক্রমণাত্মক হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ-ও (আরএসএস)! মমতা লিখেছেন, রাজ্যে যে মিথ্যার প্রচার চলছে তার মূলে রয়েছে আরএসএস।

মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, প্ররোচনার কারণে ঘটে যাওয়া দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাকে ব্যবহার করে বিভেদের রাজনীতির খেলা খেলতে চাইছে বিজেপি এবং আরএসএস। 

এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ‘দয়া করে ধীর এবং শান্ত থাকুন। সাম্প্রদায়িক অশান্তি রোখা হবেই। এই অশান্তির নেপথ্যে যারা রয়েছে, তাদের কড়া হাতে দমন করা হবে বলেও জানান মমতা। একই সঙ্গে রাজ্যের সকল সম্প্রদায়ের মানুষকে একে অপরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করার আহ্বানও জানান মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা তার খোলা চিঠিতে অভিযোগ করেন, রামনবমীর দিনে অশান্তি করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যে শান্তিপূর্ণভাবে রামনবমী পালিত হয়। সেই কারণেই সংশোধিত ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে সংগঠিত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কিছু বিষয়কে ব্যবহার করতে চায় কেউ কেউ।

মমতার আরও অভিযোগ, বিজেপি এবং তার সঙ্গীরা যা প্রচার করছে তা মিথ্যা। তাদের কথায় অপব্যাখ্যা ভর্তি। মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ‘দয়া করে ওদের কথায় বিশ্বাস করবেন না। আমরা সকলে মিলেমিশে থাকতে চাই। ওরা সঙ্কীর্ণ নির্বাচনী রাজনীতির কথা ভেবে আমাদের মধ্যে ভাগাভাগি করতে চায়।’

মুখ্যমন্ত্রী জানান, আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে তার সরকার। সরানো হয়েছে দুজন পুলিশ অফিসারকেও। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত করছে। উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানিয়ে মমতা লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ অন্যান্য রাজ্যের মতো নয়। এখানে সংবিধান-বিরোধী ব্যবস্থা কায়েম নেই। বাস্তবিকই বাংলা সব অর্থেই অগ্রণী রাজ্য।’

মমতা টেনেছেন উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, বিহার, মণিপুরের অশান্তির ঘটনার প্রসঙ্গও। তবে শেষে তিনি আরও একবার সকলকে সংযত থাকার আহ্বান জানান।

সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভ হয়েছে মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলার বেশ কিছু এলাকায়। কিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়েছে যে, মুর্শিদাবাদের বেশ কয়েকটি এলাকায় সংঘর্ষে প্রাণহানিও ঘটেছে। অশান্তি ছড়িয়েছে সুতি, জঙ্গিপুর, শমসেরগঞ্জ এবং ফরাক্কায়। আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। অশান্তির কারণে ঘরছাড়াও অনেকে। তাদের ঘরে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।