Image description

বরিশালে ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী মাসুদ খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত প্রেমিকা হালিমা বেগম শান্তাসহ (৩১) বাবা শওকত হোসেন মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত ২টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার জাগুয়া ইউনিয়নের মোল্লার দোকান থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

 

রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান।

মাসুদ খুনের ঘটনায় তার ভাই করনের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার করে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে টাকা ছিনিয়ে নিতে প্রেমিকা শান্তা মাসুদকে ছুরিকাঘাত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ভাই মো. করন।

 

তাদের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে পাশে থাকা ছুরি অসাবধানতাবসত মাসুদের পেটে ঢুকেছে বলে দাবি করেছে প্রধান অভিযুক্ত শান্তা।

 

প্রাথমিক তদন্তের সূত্র ধরে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাজীব রেজা জানান, অভিযুক্ত হাফিজা বেগম ওরফে শান্তার সঙ্গে ভিকটিম মাসুদুর রহমানের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং দীর্ঘদিন থেকে শান্তা তার (নিহত ব্যবসায়ীর) টাকাপয়সা আত্মসাৎ করে আসছে।

 

প্রাথমিক তদন্তে আরও জানা গেছে, অভিযুক্ত শান্তা ঘটনার দিন ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানকে প্ররোচিত করে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে যায় এবং বিয়ে করার জন্য মৌখিকভাবে চাপ প্রয়োগ করে। তবে তাতে রাজি না হলে অভিযুক্ত শান্তা তার অপর সহযোগী অভিযুক্তদের সহায়তায় ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে। পাশাপাশি ব্যবসায়ী মাসুদুর রহমানের সঙ্গে থাকা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

 

মামলার তথ্য ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, তিন মাস আগে নগরীর নতুনবাজার এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে মাসুদের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় নথুল্লাবাদ এলাকার শওকত হোসেনের মেয়ে শান্তা। দুই সন্তানের জনক প্রেমিক মাসুদের স্ত্রী কয়েক মাস আগে মারা গেছেন।

 

এদিকে প্রবাসীর স্ত্রী শান্তার দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। প্রেমের সূত্র ধরে মাসুদ প্রেমিকা শান্তর বাসায় প্রায়ই যাওয়া-আসা করতেন। এর অংশ হিসেবে গত শুক্রবার রাতে শান্তার কলেজ অ্যাভিনিউর ভাড়া বাসায় যায় মাসুদ। সেই সময় তর্কবিতর্কের সময় মাসুদের পেটে ধারালো ছুরি ঢুকিয়ে দেয় শান্তা।

 

তবে মাসুদের ভাই করনের দাবি, মাসুদের সঙ্গে থাকা ব্যবসার দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নিতে মাসুদের পেটে ছুরিকাঘাত করেছে শান্তা। ঘটনার সময় আরও বেশ কয়েকজন ছিল। এরপর বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার মারা যান মাসুদ।

 

এরপর ওই দিনই নিহত মাসুদের ভাই মো. করন বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় শান্তাসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

 

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, দায়ের হওয়া মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। গ্রেফতার দুই ব্যক্তিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।