Image description

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১৩৫ জন কর্মকর্তাকে মঙ্গলবার দেশের ১৩৫টি কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। তবে তাদের একজন এক বছর আগে, আরেকজন দুই বছর আগে মারা গেছেন। কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন প্রায় দুই বছর আগে মারা গেছেন। তাকে সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন করা হয়েছে। অন্যজন রংপুরের পীরগাছা কলেজের অধ্যক্ষ পদে নাম আসা কারমাইকেল কলেজের ইতিহাসের অধ্যাপক মোহা. আব্দুল মুত্তালিব। তিনি এক বছরের বেশি সময় আগে মারা গেছেন।

কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মির্জা মো. নাসির উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রণালয়ের তিনটি তালিকার একটির ৩৭ জনের তালিকায় ১৩ নম্বরে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ পদে মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনকে পদায়ন করা হয়। তিনি কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল মারা যান।

প্রায় দুই বছর আগে মারা যাওয়া স্বামীকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়নের খবরে বিস্মিত হয়েছেন অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীনের স্ত্রী তাহমিনা শবনম। তিনি বলেন, ‘জামাল মারা যাওয়ার দুই মাস পর একটি গোয়েন্দা সংস্থা থেকে পদোন্নতির বিষয়ে কিছু তথ্য জানতে চায়। আমি বলেছিলাম তিনি মারা গেছেন। এরপরও হয়তো ভুল করে আমার মৃত স্বামীকে অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।’

এই দম্পতির কন্যা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা। সহপাঠীর প্রেম প্রত্যাখান করায় উত্ত্যক্তের শিকার হয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাঁয়ের বাসায় আত্মহত্যা করেন।

আক্ষেপ করে স্কুলশিক্ষিকা তাহমিনা শবনম বলেন, ‘মেয়ের চলে যাওয়া, তার বিচার না পাওয়া। মেয়ের আগে তার বাবার মৃত্যু—সব মিলিয়ে আমি আর নিতে পারছি না। আমার স্বামী তার প্রাপ্য সম্মানটি দেখে যেতে পারলেন না।’

তিনি বলেন, ‘একই ঘটনা ঘটেছে আমার মেয়ের বেলায়ও। আত্মহননের দুই মাস পর গত বছরের ১৯ মে অবন্তিকার স্নাতকের (এলএলবি অনার্স) চূড়ান্ত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়। এতে সে সিজিপিএ ৩ দশমিক ৬৫ পেয়ে আইন বিভাগে তৃতীয় স্থান অধিকার অর্জন করে।’

অবন্তিকার মা আরও বলেন, ‘মৃত্যুর সামান্য আগে অবন্তিকা ফেসবুক পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের তার সহপাঠী ছাত্রলীগ ক্যাডার আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর (সাময়িক বরখাস্ত) দ্বীন ইসলামের বিরুদ্ধে হয়রানি ও উৎপীড়নের নানা অভিযোগ করে। মামলায় আত্মহত্যার প্ররোচনার সংশ্লিষ্টতা পেয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে উভয়ে জামিনে মুক্ত। আমার করা মামলা এখন নিশ্চুপ পড়ে আছে। একবছরের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও চার্জশিট দেয়নি পুলিশ।’