Image description
সাবেক এমপি মহারাজসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে আট মামলা

ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তাঁর স্ত্রী রুখমীলা জামানসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) মামলাটি করা হয়েছে। কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ সবুর, সাবেক পরিচালক মো. শাহ আলম, ব্যাংকের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বজল আহমেদ বাবুল, সাবেক পরিচালক রোকসানা জামান চৌধুরী, বশির আহমেদ, নুুরুল ইসলাম চৌধুরী, সৈয়দ কামরুজ্জামান, তৌহিদ সিপার রফিকুজ্জামান, হাজি আবু কালাম, সাবেক পরিচালক ইউনুছ আহমদ, আফরোজা জামান, মো. জোনাইদ শফিক, সাবেক এমডি মোহাম্মদ শওকত জামিল, ব্যাংকের খাতুনগঞ্জ শাখার শাখাপ্রধান আরফানুল ইসলাম, সাবেক এভিপি মোহাম্মদ আনিছুল ইসলাম, আনিসুর রহমান ও সাবেক সিনিয়র অফিসার মুনতাকা মুহাম্মদ সাইয়্যিদ।

এ ছাড়া ক্লাসিক ট্রেডিংয়ের মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলম, ইমিনেন্ট ট্রেডিংয়ের মালিক শেখ ফুরকানুল হক চৌধুরী, ইম্পেরিয়াল ট্রেডিংয়ের মালিক মো. আব্দুল আজীজ ও মডেল ট্রেডিংয়ের মালিক মোহাম্মদ মিছাবাহল আলমকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং, ক্লাসিক ট্রেডিং ও মডেল ট্রেডিং নামের নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ২০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে লোপাট করেন এবং পরবর্তী সময়ে তা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে আড়াল করেন। 

এদিকে পিরোজপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দীন মহারাজসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে আটটি মামলা করেছে দুদক। পিরোজপুরের বিভিন্ন উপজেলায় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ না করেই এক হাজার ৭৯ কোটি টাকার বেশি আত্মসাতের অভিযোগে এই মামলা করা হয়। গত মঙ্গলবার দুদকের পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো করা হয়। মামলার পরদিন এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। মহারাজ ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আলী আখতার হোসেন ও মো. আব্দুর রশীদ খান, পিরোজপুর এলজিইডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুস সাত্তার হাওলাদার প্রমুখ।

এ ছাড়া গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পিরোজপুর এলজিইডির হিসাবরক্ষক এ কে এম মোজাম্মেল হক খান, ডিস্ট্রিক্ট অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স অফিসার মো. মোহাসীন, মো. মাসুম হাওলাদার, নজরুল ইসলাম ও সাবেক অফিসার মো. আলমগীর হাসান।

দুদক সূত্র জানায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আয়রন ব্রিজ পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন উপজেলায় ১২৮টি স্কিমের কাজ না করেই ২৭৭ কোটি ৫৭ লাখ ৯৮ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রথম মামলাটি করা হয়।

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠমো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দুটি স্কিমের কাজ না করেই ১০ কোটি ৫০ লাখ ৩৯ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দ্বিতীয় মামলা করা হয়।

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৬৪টি স্কিমের বিপরীতে ২০৬ কোটি ৬০ লাখ ৫৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তৃতীয় মামলা করা হয়।

জেলা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৩১টি স্কিমের বিপরীতে ৯০ কোটি ৮৬ লাখ ১৯ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চতুর্থ মামলা করা হয়।

বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের আওতায় পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ১১৮টি স্কিমের কাজ না করে ৪০৮ কোটি ৫৭ লাখ ৮৯ হাজার ৪০০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পঞ্চম মামলা করা হয়।

উপজেলা শহর (নন-মিউনিসিপ্যাল) মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ও মৌলিক অবকাঠামো প্রকল্পের আওতায় দুটি স্কিমের কাজ না করে তিন কোটি ৭৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ষষ্ঠ মামলা করা হয়।

বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুর জেলা বিজেপি প্রকল্পের আওতায় পিরোজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৩১টি স্কিমের বিপরীতে ৭০ কোটি ৬৭ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সপ্তম মামলা করা হয়।

এ ছাড়া পল্লী সড়ক ও কালভার্ট মেরামত কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় দুটি স্কিমের কাজ না করে ১০ কোটি ৫০ লাখ ৩৯ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অষ্টম মামলা করা হয়।