Image description

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দেশের বিভিন্ন সংসদীয় আসনে এরই মধ্যে তাদের খসড়া প্রার্থী ঘোষণা করেছে। রমজান মাসকে কেন্দ্র করে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ, পেশাভিত্তিক বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তির সঙ্গে ইফতার আয়োজনের মাধ্যমে একধরনের গণসংযোগ চালিয়েছেন এসব প্রার্থী।

কেন্দ্রীয় নেতারাও বিভিন্ন নগর-মহানগরে গিয়ে এসব আয়োজনে অংশ নিয়েছেন। কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো নির্দিষ্ট নির্দেশনা না থাকলেও ঈদ এবং ঈদের ছুটিকে কাজে লাগাতে চান ঘোষিত প্রার্থীরা।

ঢাকা ও অন্যান্য মহানগরে অস্থায়ীভাবে বসবাস করলেও যাঁরা যে আসনে প্রার্থী হয়েছেন, তাঁরা মূলত ঈদের সময় নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় থাকার পরিকল্পনা করছেন। ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ করে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের সুযোগ কাজে লাগাতে চান তাঁরা। জামায়াতের স্থানীয় নেতারা মনে করছেন, বড় বাজেটের প্রচারণার সুযোগ না থাকায় এলাকার মানুষের মন জয় করাই তাঁদের প্রধান কৌশল।

একাধিক জামায়াত নেতা ও সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা ১৫ বছর ধরে অনেক জামায়াত নেতা নিজ এলাকায় প্রকাশ্যে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেননি, এমনকি নিজ এলাকায় যেতেও পারেননি।

এবার সেই সুযোগ এসেছে এবং অনেক এলাকায় ঈদগাহের নেতৃত্বও দিচ্ছেন তাঁরা। দীর্ঘদিনের দূরত্ব কাটিয়ে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশা তাঁদের।

দলটির ঝালকাঠি জেলা আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান জানান, স্থানীয়ভাবে তাঁরা রমজান মাসজুড়ে গণসংযোগ চালিয়েছেন। ঈদের নামাজে সব নেতাকর্মীকে নিজ নিজ এলাকায় ঈদগাহে গিয়ে নামাজ পড়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

তবে অনেক নেতা ও প্রার্থী ওমরাহ পালন করতে যাওয়ায় তাঁদের পরিবর্তে অন্য নেতারা দায়িত্ব পালন করবেন। পিরোজপুরের দুটি আসনে প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর দুই ছেলে। পিরোজপুর-১ (সদর, ইন্দুরকানি ও নাজিরপুর) আসনে মাসুদ সাঈদী এবং পিরোজপুর-২ (নেছারাবাদ, কাউখালী ও ভাণ্ডারিয়া) আসনে শামীম সাঈদী। বর্তমানে তাঁরা ওমরাহ পালন করছেন এবং ঈদের পর এলাকায় ফিরে মতবিনিময়সভা ও গণসংযোগ চালাবেন।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার কালের কণ্ঠকে জানান, অনেক নেতা বর্তমানে দেশের বাইরে আছেন এবং কেউ কেউ ইতিকাফে বসেছেন।

ঈদের পর তাঁদের সঙ্গে আলোচনার পর কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে। এ ছাড়া ঈদের পর ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর ঐক্যপ্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা চলবে।

ঢাকা-১৫ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি রমজান মাসজুড়ে সারা দেশে বিভিন্ন ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়েছেন, বক্তব্য দিয়ে মানুষের মন আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। বর্তমানে ইতিকাফে থাকা আমির ঢাকায় নিজ বাসায় ঈদ উদযাপন করবেন এবং স্থানীয় মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের ২০০১ সালে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন, এবারও একই আসন থেকে প্রার্থী হবেন। তিনি নিজ এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন এবং স্থানীয় মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

চট্টগ্রাম-১৪ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসনের প্রার্থী নায়েবে আমির মাওলানা শামসুল ইসলাম ঈদে সাতকানিয়ায় নিজ বাড়িতে থাকবেন। সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার খুলনার খানজাহান আলী থানায় নিজ বাড়িতে ঈদ উদযাপন করবেন এবং গণসংযোগ চালাবেন। তিনি ২০০১ সালে খুলনা-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন, এবারও একই আসনে প্রার্থী।

এ ছাড়া সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম কুমিল্লার লাকসামে, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়, সাবেক এমপি জামিলুর রহমান আযাদ ঢাকার বসুন্ধরায়, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জম হোসাইন হেলাল বরিশালে, মাওলানা মো. শাহজাহান চট্টগ্রাম মহানগরীতে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ঢাকার উত্তরায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করবেন।