
সমবায় সমিতি, বণিক সমিতিসহ নানা ধরনের সমিতি দেখা গেলেও এবার দেখা পাওয়া গেল মাংস সমিতির। গরুর মাংসের দাম দেশের নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে গেছে অনেক আগেই। তাই ঈদের সময় এই পরিবারগুলোর মাংসের চাহিদা মেটাতে ১০ বছর আগে শুরু হয় মাংস সমিতি।
স্থানীয়দের কাছে এই সমিতি মাংস সমিতি, গোস্ত সমিতি, এমনকি গরু সমিতি নামেও পরিচিত। পবিত্র ঈদুল ফিতরে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে কম দামে মাংস পৌঁছে দিতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামে গড়ে উঠেছে এই সমিতি।
এলাকার দরিদ্র-পীড়িত মানুষের কথা ভেবে এই সমিতির উদ্যোগ নিয়েছিলেন শহীদুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রতি সপ্তাহে এলাকার বিভিন্ন পরিবার তার কাছে ১০০ করে জমা দেয়। বছরের ৫২ সপ্তাহে হয় ৫২ হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে ঈদের আগে তিনি গরু কিনে আনেন। সেই গরু জবাই করে প্রতিটি পরিবার পায় ৮ কেজি করে মাংস, সাধারণত যা একবারে কেনার সামর্থ্য থাকে না এসব পরিবারের।
শহীদুল ইসলাম বলেন, 'আমরা এখানে যে সমস্ত গরিব মানুষদের নিয়ে যাই, তাদের একবারে এতো পরিমাণ মাংস একবারে কেনার তৌফিক নাই। সেই ক্ষেত্রেই এই সমিতিটা গড়ানো আর এতে সমস্ত লোক খুশি। পাড়ার লোকরাও দেখে একটা গরিব মানুষও ৮ কেজি করে মাংস নিয়ে যাচ্ছে। এটা সবার চোখের পড়ে, আনন্দ লাগে।'
মাংস সমিতির সঙ্গে যুক্ত গ্রামের বাসিন্দারা জানান, সমিতির কারণে তাদের ঈদ আয়োজনে খরচ কমেছে। বাজার দরের চেয়ে তুলনামূলক কম দামে এখান থেকে মাংস পান বলেও জানান তারা।
মাংস সমিতির এক সদস্য বলেন, 'অল্প অল্প করে প্রতি সপ্তাহে ৫০ টাকা কিংবা কেউ ১০০ টাকা করে জমা দিয়ে সারা বছর টাকা গোছাই। এরপর ঈদের সময় ওই টাকাটা একবারে এই গরুগুলো কেনা হয়।' বর্তমানে সমিতিতে ৩৯টি গরু জমা আছে বলেও জানান তিনি।
সমিতির উদ্যোক্তা শহীদুল ইসলাম জানান, তিনি যতোদিন বেঁচে আছেন, ততোদিন এই মাংস সমিতি চালিয়ে যাবেন। এভাবেই এলাকার গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চান তিনি।