Image description

জুলাই অভ্যুত্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত অটোরিকশাচালক শহীদ আকাশের পরিবার এখন চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। স্বামীকে হারিয়ে তার স্ত্রী সংসার চালাতে একসময় ভিক্ষাবৃত্তিতে নামতে বাধ্য হন। তিন সন্তান, যার মধ্যে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী, তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে আকাশের বিধবা স্ত্রীর।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট উত্তরা রাজউক মার্কেটের সামনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার পথে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আকাশ। মৃত্যুর পর পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে তার স্ত্রী ও সন্তানেরা।

"আমার স্বামী রিকশা চালিয়ে সংসার চালাতেন, এখন আমাদের দেখার কেউ নেই। দুই মেয়ে লেখাপড়া করে, ছোট ছেলে প্রতিবন্ধী, সে কথা বলতেও পারে না। আমি দুটো বাসায় কাজ করতাম, কিন্তু এখন শরীর সায় দেয় না," কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন আকাশের স্ত্রী।

মৃত্যুর পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন পরিবারটিকে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিলেও, বেশিরভাগই ছিল শুধু আশ্বাসের বন্যা। জাতীয় নাগরিক কমিটির সার্জিস আলম ৩০ হাজার টাকা সহায়তা করেছিলেন, জামায়াতে ইসলামী থেকে এসেছিল দুই লাখ টাকা, যা ঋণ পরিশোধেই শেষ হয়ে যায়। সরকারি কোনো সহযোগিতা এখনো পর্যন্ত মেলেনি।

শহীদ আকাশের বড় মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। তিনি বলেন, "আমার বাবা আমাদের পড়াশোনা করানোর স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু বাবার মৃত্যুর পর আমরা জানি না কীভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যাব।"

পরিবার জানায়, জুলাই ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তা পেতে কাগজপত্রের জটিলতায় আটকে রয়েছে। এই সাহায্য আদৌ মিলবে কি না, তা নিয়েও তারা সন্দিহান।

"আমরা গরিব হতে পারি, কিন্তু আমাদেরও বেঁচে থাকার অধিকার আছে। সরকার যদি একটু সুদৃষ্টি দেয়, তাহলে অন্তত বেঁচে থাকতে পারব," বলেন আকাশের স্ত্রী।

শহীদ আকাশের পরিবার এখনো ন্যায্য অধিকার ও সরকারি সহায়তার আশায় দিন কাটাচ্ছে।