
নাড়ির টানে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদ করতে এরইমধ্যে ঢাকা ছাড়া শুরু করেছেন নগরবাসী। ঈদের আগে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) ছিল শেষ কর্মদিবস। অনেকে আবার এদিনও ছুটি নিয়েছেন। সে হিসাবে বৃহস্পতিবার থেকেই তাদের ছুটি শুরু। বাস, ট্রেনের মতো প্লেনেও শুরু হয়েছে বাড়ি ফেরা। বৃহস্পতিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের আগের কয়েক দিন ভিড় থাকবে। অভ্যন্তরীণ রুটে চলাচলকারী বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট বিক্রি এরইমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এমনকি ফিরতি টিকিটও শেষ হওয়ার পথে। যেসব টিকিট অবশিষ্ট আছে, সেগুলো বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে যাত্রীদের ভিড়। তারা বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের কাউন্টারের সামনে বোর্ডিং পাস নিচ্ছেন। আবার অনেকেই বোডিং পাস নিয়ে চেকিং ইন করে ফ্লাইটে ওঠার অপেক্ষায় রয়েছেন। আর নিরাপত্তা কর্মী বিশেষ করে এভসেক ও এয়ারফোর্স সদস্যরা নিপুণভাবে পর্যবেক্ষণে রেখেছেন সবকিছু।
পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সৈয়দপুরগামী পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে জানালেন, ‘অনেক দিন পর পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে রংপুর যাচ্ছি। পুলিশের চাকরির সুবাদে বেশিরভাগ ঈদ কেটেছে কর্মস্থলে। এবার একটু সুযোগ হয়েছে, তাই সবাইকে নিয়ে যাচ্ছি। সড়কপথে ঝামেলা, রাস্তায় যানজট থাকে, মূলত সে কারণে বিমানে যাচ্ছি।’
বাড়ছে ঈদ উপলক্ষে বাড়িমুখী যাত্রীদের ভিড় কথা হয় বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা আবিদ হাসানের সঙ্গে। তিনিও যাচ্ছেন রংপুরে।
আবিদ হাসান বলেন, ‘যারা একটু সচ্ছল তারা রাস্তার ভোগান্তি এড়াতে চান। যেহেতু দেশীয় এয়ারলাইন্সের সংখ্যা বেড়েছে, টিকিট করতেও সমস্যা হয় না, সে কারণে অনেকেই এয়ারে যাওয়াটাকে স্বাচ্ছন্দ্য মনে করেন।’
এদিকে ঈদ উপলক্ষে যাত্রী চাহিদার কথা বিবেচনা করে এয়ারলাইন্সগুলো তাদের ফ্লাইট সংখ্যাও বাড়িয়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স চারটি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মুখপাত্র বোসরা ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঈদে যাত্রী চাহিদার কথা বিবেচনা করে আমরা বিভিন্ন রুটে ৪টি বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করছি।’ তিনি বলেন, ‘বিশেষ ফ্লাইটসহ রেগুলার ফ্লাইটের টিকিট প্রায় শেষ হয়ে গেছে।’
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম বলেন, ‘অন্যান্যবারের চেয়ে এবার ঈদে যাত্রী সংখ্যা কম। আমাদের নিয়মিত ফ্লাইটই রয়েছে। আমরা ফ্লাইট বাড়ায়নি।’
তিনি বলেন, ‘স্কুল-কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগে থেকে ছুটি হওয়ার কারণে অনেকে আগেই চলে গেছে। এর মধ্যে রাস্তার জ্যামও নেই। ট্রেনও অনেক স্বাচ্ছন্দ্যে চলছে। আর যমুনায় পৃথক রেললাইন হওয়ায় ট্রেনের সংখ্যাও বেড়েছে।’
‘সব মিলিয়ে ফ্লাইটের সংখ্যা না বাড়িয়ে আমাদের রেগুলার যে ফ্লাইট রয়েছে—সেগুলোতেই কাভার হয়ে যাবে। যদি যাত্রীর চাপ বেশি থাকতো, তবে আমরা ফ্লাইট বাড়াতাম।’
ঈদ উপলক্ষে অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে যাত্রীদের নিরাপত্তায় কোনও সমস্যা যাতে না হয়, সে ব্যাপারে এয়ারফোর্স ও এভসেকের সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম।
বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আমাদের সদস্যরা আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। আশা করি কোনও সমস্যা হবে না।’