
রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে ‘টেস্ট ড্রাইভের’ কথা বলে ৮৫ লাখ টাকা দামের টয়োটা হেরিয়ার জিপ ছিনতাইয়ের ঘটনায় গাড়ি ও বিদেশি পিস্তলসহ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতের নাম আহসান আহমেদ ওরফে মাসুম (৩৬)।
সোমবার রাত ৩টার দিকে গুলশান থানার ৪১ নম্বর রোডের আমারি ঢাকা নামক হোটেলের সামনে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারের সময় তার হেফাজত থেকে ছিনতাই হওয়া জিপ গাড়ি, একটি ম্যাগাজিনসহ পাঁচ রাউন্ড গুলিভর্তি বিদেশি পিস্তল ও তিনটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, পরীবাগ গার্ডেন টাওয়ারে অবস্থিত একটি গাড়ির শো-রুমের স্বত্বাধিকারী মাশরুর নাঈর (২৯) জাপানিজ গাড়ির একজন আমদানিকারক ও ডিস্ট্রিবিউটর। গত ৭ মার্চ বিকালে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি ফোন করে টয়োটা হেরিয়ার জিপ গাড়ি ক্রয় করার জন্য মাশরুর নাঈরের সঙ্গে কথা বলেন। কথাবার্তার এক পর্যায়ে মাশরুর নাঈর সেই ব্যক্তিকে তার বাসার গ্যারেজে গাড়ি দেখার জন্য আসতে বলেন। পরদিন রাতে সেই ব্যক্তি বাসার গ্যারেজে আসেন এবং গ্যারেজের বাইরে আরও দুইজন অবস্থান করেন।
এসময় একটি টয়োটা হেরিয়ার জিপ গাড়ি টেস্ট ড্রাইভ দেওয়ার জন্য মাশরুর নাঈরের চাচাতো ভাই মো. পিয়াল মাহমুদকে নিয়ে সেই অজ্ঞাতনামা তিন ব্যক্তি গাড়িটিতে উঠেন। তারা গাড়িটি চালিয়ে পিজি হাসপাতালের সামনে মেট্রোরেল স্টেশনের সামনে গিয়ে গাড়িটি থামিয়ে তাদের একজন পিয়াল মাহমুদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে গাড়িটি নিয়ে চলে যান। ঘটনার কিছুক্ষণ পর ছিনতাইকারীরা মাশরুর নাঈরের হোয়াটসঅ্যাপে একটি বার্তা দিয়ে মামলা না করার জন্য ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি না জানানোর জন্য হুমকি দেন।
এ ঘটনায় গাড়ির মালিক মাশরুর নাঈরের অভিযোগের ভিত্তিতে শাহবাগ থানায় গত ৯ মার্চ একটি মামলা রুজু করা হয়। এ মামলায় সোমবার রাত আনুমানিক ৩টার দিকে গুলশান থানার ৪১ নম্বর রোডের আমারি ঢাকা নামক হোটেলের সামনে অভিযান পরিচালনা করে আহসান আহমেদ ওরফে মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তার হেফাজত থেকে ছিনতাই হওয়া জিপ গাড়ি, একটি ম্যাগজিনসহ পাঁচ রাউন্ড গুলিভর্তি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আহসান আহমেদ ওরফে মাসুমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ জানায়, তিনি বুয়েটের একজন সাবেক শিক্ষার্থী এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে অত্যন্ত দক্ষ। তিনি একজন পেশাদার অপরাধী। এর আগে ছিনতাইসহ এরকম বহু অপরাধের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন বলে স্বীকার করেছেন।
মাসুম গাড়ি ছিনতাই করে নিয়ে পরবর্তীতে গাড়ির মালিকদের কাছে গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ দাবি করতেন। গ্রেপ্তারকৃত মাসুমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় গাড়ি ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।