Image description
MD Nezam ( মো: নেজাম)

 
আরাফাত রহমান কোকো কখনো রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। কিন্তু তৎকালীন সেনা প্রধান জেনারেল মইন ও তার সহযোগীরা বেগম খালেদা জিয়াকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করতে তার ছোট ছেলে কোকোকে টার্গেট করে।
 
তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগতেন— ইনহেলার ছাড়া দম বন্ধ হয়ে আসত। অথচ সেই সময় পরিকল্পিতভাবে তার চরিত্র হত্যা করা হয়, তাকে মাদকাসক্ত বলে অপবাদ দেওয়া হয়। ঠিক এখানেই তারা সুযোগ নেয়…
 
সেই দিনের কথা মনে আছে— খালেদা জিয়া দিনের পর দিন গুলশান কার্যালয়ে বন্দী। পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস— সব লাইন কেটে দেওয়া হয়, খাবারও বন্ধ! আর এই নিদারুণ সময়েই আসে সেই হৃদয়বিদারক খবর— কোকো ভাই চলে গেছেন… শোকে ভেঙে পড়েন খালেদা জিয়া।
 
তার লাশ যখন দেশে আনা হয়, অবরুদ্ধ কার্যালয়েই শেষবারের মতো সন্তানকে দেখেন মা… কিন্তু তখনও নিষ্ঠুরতার শেষ হয়নি।
 
দ্রুত লাশ দাফনের তাড়া দেওয়া হলে, খালেদা জিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেছিলেন—
"ঢেকে দিও না, বাবার মুখটা আরেকটু দেখি..."
আহারে মা! সন্তানের লাশ চোখের সামনে… কীভাবে সহ্য করলেন?
 
খালেদা জিয়ার এক সময়ের অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও পুরাতন ড্রাইভার, যিনি বর্তমানে প্রাক্তন এক প্রধান বিচারপতির পরিবারের ড্রাইভার হিসেবে কর্মরত, একদিন আমাকে বলেছিলেন— আরাফাত রহমান কোকো ছোটবেলা থেকেই ভদ্র, নম্র এবং ধার্মিক ছিলেন। তিনি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন, বিনয়ী ছিলেন, আর তারেক রহমানের তুলনায় একেবারেই ভিন্ন চরিত্রের মানুষ ছিলেন।
 
তার অকাল মৃত্যু আমাকে গভীরভাবে ব্যথিত করেছিল। অথচ বিএনপির অনেক স্বার্থান্বেষী নেতা সেই স্মৃতিগুলো যেন ভুলে গেছেন। রাজনীতির নির্মম বাস্তবতায় অনেক ভালো মানুষের জীবন হিংস্র রাজনৈতিক সংস্কৃতির বলি হয়েছে।
 
আমি বিশ্বাস করি, রাজনীতি ইতিবাচক হওয়া উচিত— যেখানে অন্যায় বিচার করতে দলীয় পরিচয় মুখ্য না হয়ে ন্যায় ও সত্যই প্রধান হওয়া উচিত। এই দেশের নোংরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা অনেক সম্ভাবনাময় মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে, তাদের স্বপ্নকে বিলীন করে দিয়েছে। আমাদের উচিত দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে সত্যকে সম্মান জানানো এবং একটি সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা, যেখানে আদর্শ ও নৈতিকতা রাজনীতির মূল চালিকাশক্তি হবে।

 

May be an image of 3 people and hospital