Image description
অবৈধভাবে ২ বছর ধরে করছেন সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাজ । প্রশ্নপত্র মুদ্রণ , ফলাফল প্রকাশ ও সনদ দেন নিয়োগহীন ব্যক্তি । প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা , শিক্ষাজীবন নিয়ে শঙ্কা ।
একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র ছাপা , পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ , সার্টিফিকেটে স্বাক্ষর , বিভিন্ন কার্যাদেশ বা সরবরাহ আদেশে স্বাক্ষর , পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন , বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অগ্রিম টাকা উত্তোলন — এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ একজন ভুয়া ‘ সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ' করবেন , তা ভাবা যায় না । কিন্তু অভাবনীয় এসব ঘটনা ঘটছে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ( এসএমইউ ) । এই কথিত সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ( এইসি ) হলেন বিলাল আহমদ চৌধুরী । আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এমন তথ্য । এ - সংক্রান্ত তথ্য - প্রমাণ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে । ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী , অস্থায়ী চাকরির বৈধতা শেষ অনেক আগেই । সরকারি বেতনও বন্ধ হয়েছে প্রায় ২ বছর আগে । তবু তিনি ২ বছর ধরে সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাজ সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন । সদ্য সাবেক ভিসি ও রেজিস্ট্রার তাঁকে এসব কাজের দায়িত্ব দিয়েছিলেন । কিন্তু বেতন দেননি । অভিযোগ রয়েছে , বেতন না দিলেও কাগজ কেনার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে এই ‘ সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক'কে । বৈধ নয় , এমন ব্যক্তির স্বাক্ষরিত সার্টিফিকেটগুলোর বৈধতার প্রশ্নে নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ব্যাপক

দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষার্থীরা । এসএমইউসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান , ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি ভিসি হিসেবে যোগ দেন ডা . এনায়েত হোসেন । শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মকর্তা - কর্মচারীদের নিয়োগের মেয়াদ বৃদ্ধি না করে সব নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করেন ভিসি । ওই বছরের ১৪ জুন উপাচার্য ২৩৯ জন কর্মকর্তা - কর্মচারীর বেতন বন্ধ করে তাঁদের মধ্য থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ ম সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিজের পছন্দমতো রেজিস্ট্রার , সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা , হিসাবরক্ষক ও ক্যাশিয়ার এবং ২৬ আগস্ট আরও ২৭ জনকে কর্মকর্তা - কর্মচারী অস্থায়ী ভিত্তিতে পুনরায় নিয়োগ দেন । যদিও এর আগে চিঠি দিয়ে অ্যাডহক ( অস্থায়ী ) নিয়োগ বন্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছিল ইউজিসি । সদ্য সাবেক ভিসি এ এইচ এম এনায়েত হোসেন যে দুই দফা নিয়োগ দিয়েছিলেন , তার কোথাও সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদে বিলাল হোসেন চৌধুরীর নাম নেই । অথচ দুই বছর ধরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাসংক্রান্ত সব কাজ করে যাচ্ছেন । অনিয়মের অভিযোগে প্রথম ভিসি ড . মোরশেদ আহমেদ চৌধুরীসহ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের যে মামলা চলছে , সেটির ৭ নম্বর আসামি এই বিলাল । নথিপত্র বলছে , এসএমইউর ২০২০-২১ সেশনের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে ২০২৩ সালের ৩ আগস্ট । বিলাল চৌধুরীর স্বাক্ষরে ওই মাসের ২৮ তারিখে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সনদ দেওয়া হয় । টেন্ডার অর্ডারে স্বাক্ষর : বিলাল আহমদ চৌধুরী ২০২৪ সালের ৭ জুলাই ‘ সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ' হিসেবে বিভিন্ন পরীক্ষার ১৯ হাজার কপি মূল উত্তরপত্রের ওয়ার্ক অর্ডার ( সরবরাহ আদেশ ) দেন

২০২৪ সালের ৮ মে এসএমইউর ৪৩৬ নম্বর ভাউচারে পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন সম্মানী নিয়েছেন বিলাল । বিএসসি ইন মেডিকেল টেকনোলজি ( ল্যাবরেটরি ) প্রথম বর্ষ জানুয়ারি ২০২৪ পরীক্ষার একটি কেন্দ্র তিনি ৭ দিন পরিদর্শন করেছেন । নগরের শাহি ঈদগাহের আরটিএমআই মেডিকেল টেকনোলজি ইনস্টিটিউট পরিদর্শনে দৈনিক ৩ হাজার ৫০০ টাকা করে মোট ২৪ হাজার ৫০০ টাকা নেন । এ ব্যাপারে জানতে সাবেক ভিসি এ এইচ এম এনায়েত হোসেন , রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মো . ফজলুর রহমান ও নিয়োগহীন ' সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ' বিলাল আহমদ চৌধুরীর মোবাইল ফোনে একাধিকার কল করলেও তাঁরা রিসিভ করেননি । পরে এনায়েত হোসেন ও বিলাল চৌধুরীর পক্ষে দুজন লোক এই প্রতিবেদককে ফোন করে সংবাদ প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেন । এসএমইউর নবনিযুক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ডা . মো . জিয়াউর রহমান চৌধুরী বলেন , ‘ নতুন ভিসি নিয়োগ হয়েছেন । এটা উনাকে জিজ্ঞেস করেন । ’ এসএমইউর নবনিযুক্ত ভিসি অধ্যাপক ডা . মো . ইসমাইল পাটোয়ারি বলেন , ‘ এটা তো আগে থেকেই চলে আসতেছে । পরীক্ষা কনটিনিউ ( অব্যাহত ) করার জন্য ডেইলি বেসিসে কয়েকজনকে রাখা হয়েছে । ”

নগরের লামাবাজারের উদয়ন অফসেট সাভারে চলন্ত প্রেসকে । ২ লাখ ৯৯ হাজার ২৫০ টাকার এই টেন্ডারের দরপত্র মূল্যায়নে ৭ সদস্যের কমিটির মধ্যে শুধু ভিসি আর রেজিস্ট্রার স্বাক্ষর করেছেন । একইভাবে দরপত্র উন্মুক্তকরণে তিন সদস্যের কমিটির মধ্যে রেজিস্ট্রার ও সদস্য স্বাক্ষর করেছেন । ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই এই টাকাও পরিশোধ করেন । অভিযোগ উঠেছে , কাগজ কেনার টাকায় বিলালকে তাঁর বেতন উশুল করার সুযোগ দেন উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার । অগ্রিম টাকা উত্তোলন : বিলাল চৌধুরী ‘ সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ' হিসেবে পরীক্ষাসংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের জন্য ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর ৩ লাখ , ৩০ ডিসেম্বর ২ লাখ ও ২০২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি ৩ লাখ টাকা অগ্রিম উত্তোলন করেন । পরিদর্শনের নামে অর্থ আত্মসাৎ :

থাকা ১৪ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন এবং হাতে ছুরিকাঘাত করেন । এরপর তাঁরা বাসের প্রায় সব যাত্রীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন , নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুটে নিয়ে বাস থেকে নেমে যান । ' এর আগে ২ মার্চ সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকার সেতু থেকে একটু সামনে রাজধানী পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে । সাভার থানার এসআই আব্দুল হাই বলেন , ‘ তিনজনকে আটকের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের হেফাজতে দিয়েছে । ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে । '