Image description

Khomenee Ehsan (খোমেনি এহসান)


 
হাসনাত আবদুল্লাহর স্ট্যাটাসকে ভিন্নভাবে পাঠ করা এ সময়ের রাজনীতির জন্য জরুরি৷ তাহলে অনেক গোপন খেলা স্পষ্ট হয়ে যাবে।
 
খেয়াল করে দেখুনতো হাসনাত যে সময়ে ক্যান্টনমেন্টে বৈঠক করার কথা বলেছে সে সময়েই তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম একের পর এক জামায়াত বিরোধী প্রচারণা চালিয়েছিল কি না। এমনকি নাহিদ ইসলামও ভারতীয় মিডিয়ায় জামায়াত বিরোধী কথা বলেছিল।
 
হ্যা, হাসনাতের পোস্টের অন্তর্নিহিত ম্যাসেজ পড়লে বুঝবেন মাহফুজ, নাহিদ কেন জামায়াতকে যুদ্ধাপরাধের সহযোগী বলেছে। এরা একটি প্রক্রিয়াকে এনডোর্স করেছিল যা মূলতঃ জামায়াতে ইসলামীকে মাইনাস করার প্রক্রিয়া। এরই অংশ আবার জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমানের এআই ভিডিও তথা চুমুর কুৎসিত প্রচারণা। মানে জামায়াতকে মাইনাস করার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নে যুদ্ধাপরাধের অপবাদ দেওয়া এবং দলের আমীরের ইমেজহানি করে এমন একটা পারসেপশন তৈরি করা যে জামায়াত একাত্তরের পাপে এবং আমীরের আচার আচরণের কারণেই মাইনাস হয়ে গেছে।
 
কিন্তু আমরা হাসনাত আবদুল্লাহর স্ট্যাটাস থেকে জানলাম যে ক্যান্টনমেন্টে আলোচনা হয়েছে আগামী নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি করে বিরোধী দল নির্ধারণ করা হবে এবং এতে জামায়াতকে মাইনাস করা হবে।
 
মানে ক্ষমতায় যাবে বিএনপি। আর ভোট কেটে আসন ভাগাভাগি করে বিরোধী দল বানানো হবে আওয়ামী লীগ ও এনসিপিকে। কিন্তু এনসিপি চায় লীগ নির্বাচনে না আসুক। তাহলে এনসিপি একাই বিরোধী দল হবে।
 
অথচ ফেয়ার ভোটের হিসাব অনুযায়ী বিএনপি ক্ষমতায় যাবে এবং জামায়াতে ইসলামীই বিরোধী দল হবে। কিন্তু জামায়াতকে মাইনাস করে লীগ ও এনসিপির মধ্যে আসন ভাগ করা হচ্ছে!
 
জামায়াতকে এ মাইনাস করাটা যে কতবড় ষড়যন্ত্র তার আভাস পাবেন ইসলাম বিদ্বেষী সেক্যুলার বিএনপিপন্থী মারুৈ মল্লিকের প্রচারণায়। হাসনাতদের ক্যান্টনমেন্টের বৈঠকের সময়েই মারুফ মল্লিক জামায়াতকে নির্বাচন কমিশন থেকে নিবন্ধন না দেওয়ার জন্য ফেসবুকে প্রচারণা চালায়। সহজ কথায় ভোট জালিয়াতি করে করে জামায়াতকে বাদ দেওয়ার আগেই নিবন্ধন মাইনাস করে মাইনাসের আবহটা জোরালো করা।
 
এখন প্রশ্ন হলো, জামায়াতকে মাইনাস করার ব্যাপারটা কি স্রেফ লোকাল পাওয়ারের ফটকাবাজি?
না।
 
এটি ইসলাম ও মুসলমান বিরোধী আন্তর্জাতিক খেলার অংশ। এ খেলাকে বাংলাদেশের জায়গা থেকে বুঝবেন না। কারণ তাহলে মনে হবে জামায়াতের রাজনীতি হয় না, তাদের নেতারা বেকুব, অযোগ্য, অদক্ষ- তাই তারা হারছে। আর হারের সব দোষ তাদেরই।
কিন্তু ফিলিস্তিনের গাজার দিকে তাকান। সেখানে সবাই মিলে মুসলমানদের, ইসলামী নেতাদের হত্যা করছে। এত লাশ, এত নিষ্ঠুরতার পরেও কিন্তু গণহত্যা বন্ধ হয়নি, শত্রুতার অবসান হয়নি। নেতৃবৃন্দ হত্যাও কয়েকজনকে দিয়ে থেমে থাকেনি। বরং একের পর এক হত্যা চলছে। বয়স্ক পঙ্গু অন্ধ হওয়ার পরেও যেমন শেখ আহমদ ইয়াসিন রেহাই পাননি এবং তাকে দিয়ে শুরু হত্যা মিশন দুই দশক ধরেই চলমান আছে।
 
একইভাবে জামায়াত নেতাদের ফাঁসিতে হত্যা করেই সব থেমে যায়নি। ষোল বছর ধরে জুলুম করেও ক্ষান্ত হয়নি। তিনটা নির্বাচনে নিবন্ধন বাতিল করেও সাধ মিটেনি। বরং শত্রুরা চায় হাসিনা পালিয়ে গেলেও এটিএম আজহার জেলখানাতেই মরুক। শত্রুরা চায় জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলই থাকুক। দলীয় বিচারপতি আর মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েও জামায়াতের যুদ্ধাপরাধ প্রমাণ করতে না পারলেও দলটি যুদ্ধাপরাধী হিসেবেই চিহ্নিত থাকুক। এবং এসব কিছুর মূলে হলো জামায়াতকে জনগণ পছন্দ করলেও তারা বিরোধী দল না হোক, ক্ষমতায় না বসুক।
 
মানে ফিলিস্তিনের মতোই জামায়াত টার্গেট।
আমরা জামায়াতকে বলব, আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করুন যে আপনার শত্রুদের বিষয়ে সিরিয়াস না হলেও আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা'য়ালা আপনাদেরকে শত্রুদের গোপন পরিকল্পনা আগেভাগেই জানিয়ে দিয়েছেন। নির্বাচন হওয়ার অন্তত নয় মাস আগেই নির্বাচন জালিয়াতি ও আসন ভাগাভাগির পরিকল্পনা জানিয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে আমাদের মাধ্যমে সকল ষড়যন্ত্র ভণ্ডুল করে দেওয়ার সুযোগও তৈরি করে রেখেছেন।
 
এখন জামায়াতের উচিত হবে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সঠিক কৌশল গ্রহণ করা।
যার প্রথমেই রয়েছে ভোট জালিয়াতি করে আওয়ামী লীগকে বিরোধী দল বানানোর ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা। এজন্য আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধদের রাজনীতিকে জামাতের উচিত হবে সর্বাত্মক সমর্থন দেওয়া। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে জামায়াতের মোটেই ছাড় দেওয়া উচিত হবে না।
দ্বিতীয়তঃ একটি ফ্রি এন্ড ফেয়ার ইলেকশনের জন্য জামাতের উচিত হবে প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা৷ এজন্য সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে জামায়াতকে সিরিয়াস হতে হবে।
 
তৃতীয়ত জামায়াতকে মাঠের লোকদের সঙ্গে কার্যকর মৈত্রী গড়ে তুলতে হবে। এর মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিলোপের রাজনীতি বিকশিত করতে হবে। শত্রুপক্ষের প্রচারণা- কৌশল- অ্যাকশনকে জোরালো ভাবে মোকাবেলা করতে হবে।