Image description
 

সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে আরেক ১/১১ আনার পরিকল্পনা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন। 

এই সরকার ব্যর্থ হলে আরেকটি ১/১১ ফিরে আসবে। যার ভুক্তভোগী হবে রাজনৈতিক দলগুলো: রাশেদ খাঁন 

আ.লীগকে নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে শনিবার দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এই কর্মসূচির আয়োজন করে। এ সময় অনেকে গণস্বাক্ষর বইতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে স্বাক্ষর করেন।

রাশেদ খাঁন বলেন, আওয়ামী লীগের বিষয়ে জিরো টলারেন্স। কোনো ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। অবশ্যই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা সেই পথে না হেটে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন। জনগণ তার বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলব, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়ে জাতীয় সংলাপ ডাকুন। আমরা দেখতে চাই, কারা নিষিদ্ধ চায় না। আমরা মনে করি, সব দল জনগণের সেন্টিমেন্টের আলোকে সিদ্ধান্ত জানাবে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করে কারো পক্ষে রাজনীতি করা সম্ভবপর নয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে এই ষড়যন্ত্র আরও ঘনীভূত হবে। বিশেষ করে এই সরকার ব্যর্থ হলে আরেকটি ১/১১ ফিরে আসবে। যার ভুক্তভোগী হবে রাজনৈতিক দল ও জনগণ। সুতরাং সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করাবেন না। আমাদের সন্দেহ লাগছে, সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে আরেকটি ১/১১ আনার পরিকল্পনা করছে কেউ কেউ। গণঅভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর অপরিসীম ভূমিকা।সেনাবাহিনীর বন্দুকের নল আওয়ামী লীগের দিকে তাক না হলে কোনোভাবেই গণঅভ্যুত্থান হতো না। সেনাবাহিনীর জুনিয়র অফিসাররা মাঠপর্যায়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের দমন করা শুরু করলে জনগণ সাহস পেয়েছে। এটি ভুলে গেলে চলবে না। সুতরাং কোনোভাবেই সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা যাবে না।

রাশেদ বলেন, যেহেতু ছাত্রনেতারা দল গঠন করেছে, সুতরাং সরকারে থাকা ছাত্রনেতারা পদত্যাগ না করলে সরকারের নিরপেক্ষতা নষ্ট হবে। অনেকেই এখন সরকারের নিরপেক্ষতার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের আহ্বান করছে। আমরা মনে করি, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব পক্ষকে নিয়ে ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা দরকার।

গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলে সব দলকে সঙ্গে নিয়ে জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। সরকারের উপদেষ্টাদের কারণে অনৈক্য সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের মধ্যে অনেকে আওয়ামী প্রেতাত্মা রয়েছে। এদের বিতাড়িত না করলে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভবপর নয়।

গণঅধিকার পরিষদ উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ গণহত্যাকারী দল। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশে গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে। যারা এই দেশের মানুষের ওপর গণহত্যা চালায়, তাদের এই দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। ৫ আগস্ট আমাদের রক্ত দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ লেখা হয়ে গেছে। আমাদের রক্ত দিয়ে যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ লেখা হয়ে গেছে, সেই আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনতে হলে আমাদের লাশের ওপর দিয়ে ফিরিয়ে আনতে হবে। 

গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিলের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন- গণঅধিকার পরিষদ উচ্চতর পরিষদ সদস্য শ হাবিবুর রহমান রিজু, সহ-নিরাপত্তা বিষয়ক সম্পাদক আলাউদ্দিন আজাদ, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, ঢাকা বার আইনজীবী সমিতির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মমিনুল ইসলাম প্রমুখ।