
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রাপ্যতার অতিরিক্ত অর্থ ঋণ দেওয়ার সংবাদ প্রকাশের জেরে ‘মব’ সৃষ্টি করে এক সাংবাদিকের ওপর হামলাচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওস্থ কমিশনের ৫ম তলায় লিফটের সামনে কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক এ ঘটনা ঘটেছে। পরে কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে ওই সাংবাদিক হামলা থেকে রক্ষা পান।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকের নাম মো. শিহাব উদ্দিন। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। অন্যদিকে, অভিযুক্তরা হলেন ইউজিসি চেয়ারম্যানের দপ্তরে দায়িত্ব পালন করা সিনিয়র সহকারী সচিব মোহা. মামুনুর রশিদ খান ও পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের অফিস সহায়ক আমিনুল খোকন (খোকন খান)। এছাড়াও ঘটনার সময় ১০ থেকে ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী তাদের সঙ্গে ছিলেন বলে জানান ভুক্তভোগী সাংবাদিক।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক শিহাব জানান, দুপুরের দিকে সচিব ড. ফখরুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে ইউজিসি চেয়ারম্যানের রুমে ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীদের অবস্থান নেওয়ার খবর সংগ্রহ করতে কমিশনে যান তিনি। পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় ইউজিসির অফিস সহায়ক খোকন খান তাকে জেরা করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে ‘মব’ সৃষ্টি করে তার ওপর হামলার চেষ্টা চালান। এসময় কর্মকর্তা মামুনসহ ১০ থেকে ১৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক শিহাব উদ্দিন বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে ইউজিসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে কমিশনে গিয়েছিলাম। এ সময় আমার করা আগের একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে ইউজিসির অফিস সহায়ক খোকন খান, ইউজিসি চেয়ারম্যানের রুমে দায়িত্ব পালন করা সিনিয়র সহকারী সচিব মোহা. মামুনুর রশিদ খান আমাকে জেরা শুরু করেন। আমি কেন প্রতিবেদন করেছি সে বিষয়ে জানতে চান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করি, আমার করা প্রতিবেদনে ভুল থাকলে আপনারা মামলা করুন। মামলার কথা শুনে তারা আরও উত্তেজিত হয়ে আমার ওপর হামলার চেষ্টা করে। এ সময় আমাকে মারার হুমকি দেওয়া হয়। পরে তারা আমাকে কমিশনের চেয়ারম্যানের রুমে নিয়ে যায়। পরে ইউজিসি সচিব ফখরুল এবং জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক শামসুল আরেফিনের সহযোগিতায় আমাকে ইউজিসির গাড়িতে আগারগাঁওয়ের মেট্রো স্টেশনের নিচে নামিয়ে দেয়।’
এ বিষয়ে ইউজিসির সিনিয়র সহকারী সচিব মোহা. মামুনুর রশিদ খান বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যান দপ্তরে কর্মরত আছি। এজন্য ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিককে চেয়ারম্যানের রুমে নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম। তবে তিনি ‘মব’ সৃষ্টিতে জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করেন।’
অভিযুক্ত অফিস সহায়ক খোকন খান বলেন, ‘কয়েকজনের ভিড় ও চেঁচামেচি দেখে ঘটনাস্থলে গেলে সাংবাদিক শিহাবকে চিনতে পারি। তখন আমি তাকে জিজ্ঞেস করি (আগে যে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হয়েছিল) এ তথ্য কে দিয়েছে, এই সংবাদ কেন করেছেন? শুধু সেটা জানতে চেয়েছি। তবে তিনি হামলাচেষ্টার বিষয়টি অস্বীকার করেন।’
এ বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ বলেন, ‘ইউজিসিতে সাংবাদিককে হেনস্থার যে ঘটনা ঘটেছে সেটি অপ্রত্যাশিত। আমরা ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করছি। ফুটেজ দেখে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’