
শরীয়তপুর জেলা আদালতে কর্মচারীদের ঘুষ ও ফি নির্ধারণ নিয়ে চলমান বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে অভিযোগ বাক্স স্থাপন করার আদেশ দিয়েছেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
আদালতের বিভিন্ন শাখায় ঘুষ নেওয়া ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আজ সোমবার এই সিদ্ধান্ত আসে।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাসের সামনে এই অভিযোগ বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি মোবাইল ফোন, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইমেইলে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।
সম্প্রতি শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির এক সভায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের জন্য ঘুষের নির্ধারিত হার ঠিক করার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কে সৃষ্টি হয়। পরে আদালত ঘুষ ও দুর্নীতি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
শরীয়তপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সামছুল হক সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সামছুল হক সরকার দাবি করেন, 'আদালতের কোনো কর্মচারী ঘুষ বা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। বরং আইনজীবী সমিতি তাদের বদনাম করার জন্য বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করেছে।'
তিনি বলেন, 'আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আছি। আদালতের কর্মচারীদের নাম ব্যবহার করে কেউ বিচারপ্রার্থীদের হয়রানি করতে পারে। তাই অভিযোগ গ্রহণ করতে ও প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে অভিযোগ বাক্স বসানো হয়েছে।'
বিজ্ঞপ্তিতে বিচারপ্রার্থী, আইনজীবী ও সাধারণ মানুষের জন্য অভিযোগ জানানোর সুবিধার্থে ঘুষ গ্রহণ বা প্রদানের ঘটনার ভিডিও, অডিও, ছবি বা অন্য কোনো প্রমাণসহ অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে।
প্রতিটি অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়।
আদালতের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গত ৬ মার্চ শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির এক সভায় আদালতের পেশকার, পিয়ন ও কোর্ট পুলিশের জন্য ঘুষের হার নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত ঘিরে ব্যাপক বিতর্কের তৈরি হয়। বিষয়টি সামনে আসার পর আদালত ঘুষ ও দুর্নীতি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন।
ওই সভার কার্যবিবরণী আদালতের কর্মচারী, আইনজীবী ও তাদের সহকারীদের কাছে পাঠানো হয়, যা পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল শরীয়তপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম কাশেম এবং সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুল হাসানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানো হয়।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবুল বাশার মিঞার সই করা নোটিশে আইনজীবী সমিতির এই সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।