Image description
আপাতত মহিলা কারাগার চালু হচ্ছে না, দুই বছরের জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়েছে, ঈদের পর চালু হওয়ার কথা

দুর্ধর্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ বন্দিদের রাখার জন্য ঢাকায় তৈরি হচ্ছে স্পেশাল কারাগার। কেরানীগঞ্জের চলমান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশেই হবে এ কারাগারের অবস্থান। ভবন তৈরি করাই আছে। সেই ভবনেই যাত্রা শুরু হবে স্পেশাল কারাগারের।

মহিলা কারাগার করার জন্যই এ ভবনগুলো তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু কৌশলগত কারণে আপাতত মহিলা কারাগার চালু না করে সেটাকে স্পেশাল কারাগার করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। কারা কর্তৃপক্ষ কিছুদিন আগে কেরানীগঞ্জের মহিলা কারাগারটিকে স্পেশাল কারাগার করার প্রস্তাব পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।

প্রস্তাব পাওয়ার পর মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে সভাও হয়েছে। জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্পেশাল কারগারের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজানুর রহমান গতকাল বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে ১৭৬৫ সালে ১০টি ওয়ার্ড নির্মাণ করে সাধারণ বন্দিদের রাখা হতো। ১৭৮৮ সালে ওয়ার্ডগুলোতে বড় অপরাধীদের রাখা শুরু হয়। সেই থেকে শুরু হয় ঢাকা কারাগারের যাত্রা। ১৯০২ সালে ৩৯ একর জমি নিয়ে বড় পরিসরে যাত্রা শুরু করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার। ১৯৮০ সালে আশপাশে বড় ভবন হওয়ার কারণে কারাগারটি সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। শেষ পর্যন্ত কেরানীগঞ্জে বিশাল এলাকা নিয়ে কারাগারটি নির্মাণ করা হয়।

এ সময় পুরুষদের জন্য আলাদা ও মহিলা কারাগারের জন্য আলাদা ভবন বানানো হয়। পুরুষ কারাগারটিতে ২০১৬ সালে নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগার থেকে বন্দিদের সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর নির্মাণ শুরু হয় মহিলা কারাগার। ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর কেরানীগঞ্জে মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই উদ্বোধন পর্যন্তই।

জানা যায়, নারী কর্মকর্তা ও নারী রক্ষীর অভাবে কারাগারটি চালু করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে সেই কারাগারটিই স্পেশাল কারাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। তবে প্রয়োজনে কিছু অংশে মহিলা বন্দিদের আবাসও করা হবে বলে জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আইজি প্রিজনস ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোহাম্মদ মোতাহের হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, বিশেষ এই কারাগারে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থার আয়োজন থাকবে। কারাগারটিকে দুর্নীতিমুক্ত ও আধুনিক কারাগার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। এতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে। তিনি বলেন, অনুমোদন পাওয়ার পর কারাগারের বাছাই করা কর্মকর্তা ও কারারক্ষীদের দিয়ে স্পেশাল এই কারাগার পরিচালনা করা হবে। আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি জানান, ঈদুল ফিতরের পর স্পেশাল কারগারটি চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। কারাগারটিতে যেসব বন্দি ঝুঁকিপূর্ণ তাদের রাখা হবে। এ ছাড়া এমন অনেক বন্দি রয়েছে, যারা বাইরের জন্য হুমকি, সেসব বন্দিকেও রাখা হবে।

জানা যায়, পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে আলাদা ইউনিটে মহিলা বন্দিদেরও রাখা হতো। সেই কারাগার থেকে বন্দিদের সরিয়ে নেওয়ার সময় মহিলা বন্দিদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় কাশিমপুর মহিলা কারাগারে। আর পুরুষ বন্দিদের পাঠানো হয় কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে। কেরানীগঞ্জে মহিলা কারাগার চালু না হওয়ায় মহিলা বন্দিদের কাশিমপুর মহিলা কারাগারে রাখা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, মহিলা বন্দিদের নিয়ে সমস্যা হচ্ছে না। সে কারণেই আপাতত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মহিলা কারাগার চালু করা হচ্ছে না। স্পেশাল কারাগার দুই বছরের জন্য অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। এটার কার্যকারিতা দেখে ভবিষ্যতে মেয়াদ বাড়ানোর চিন্তা করা হবে।