
Tanzil Rahman (তানজিল রহমান)
১. - আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় যে বিশ জনের মৃত্যুদন্ড বহাল রয়েছে তারা প্রত্যক্ষভাবে হত্যাকান্ডে জড়িত ছিলো। বাকি ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। বুয়েটের তৎকালীন শিক্ষার্থীরা কয়েক ঘন্টা ধরে সিসি ক্যামেরা ফুটেজ, হত্যাকান্ড ঘটা শেরে বাংলা হল ২০১১ কক্ষের আশেপাশের সবার সাক্ষ্য ও বুয়েট ছাত্রলীগের মেসেঞ্জার গ্রুপের এক্টিভিটি বিশ্লেষণ করে এদেরকে আসামী করা হয়েছিলো। ঐ সময়ে শুধু সিসি ক্যামেরায় দেখা গেলেই কাউকে আসামী করা হয় নি। সারা রাত ধরে দফায় দফায় সবাই মিলে আঘাত করে মেরে ফেললে সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে বিশ জনের মৃত্যুদন্ড হওয়াটা ঠিক কি কারণে আপনাদের কাছে সমীচীন নয় বলে মনে হচ্ছে?
২. মামলার সব আসামীই কিভাবে অভিযুক্ত হয়ে গেলো? কেন একজনও নির্দোষ প্রমানিত হলো না? - আসামী করার ব্যাপারেও যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করেছিলো বুয়েটের শিক্ষার্থীরা ও আবরারের পরিবার। কাউকে আন্দাজে আসামী করে নি। একটা উদাহরণ দিই। ঐ সময়ে বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলো দুর্ধর্ষ ক্যাডার জামিউস সানি। সেও এর আগে অনেক শিক্ষার্থীকে নির্যাতনে জড়িত ছিলো। সিরাজ ভাইসহ আরও অনেকেকে ভয়ংকর ভাবে নির্যাতনের রেকর্ড আছে এদের। কিন্তু আবরারের হত্যাকাণ্ডে জানিউস সানির সরাসরি সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাকে পর্যন্ত আসামী করা হয় নি। এতটাই সতর্কভাবে এই মামলায় আসামী করা হয়েছিলো নির্যাতনকারীদের। এই কারণেই সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমান থাকায় কেউ খালাস পায় নি। তারপরেও হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় বের হলে সেটা পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
৩. আবরারকে সারা রাত পেটানোর পরেও কেন সহপাঠীরা বা প্রশাসন বাঁচাতে গেলো না? -এটা নিয়ে আমার দেশ আজকে বিস্তারিত রিপোর্ট করেছে (লিংক কমেন্টে)। বুয়েটের 'আড়িপাতা' ফেসবুক গ্রুপে এর আগের কয়েক বছর ধরে শিবির ট্যাগে পেটানো জায়েজ করে ছাত্রলীগের নির্যাতনকে সামাজিক বৈধতা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ছাত্রলীগকে ব্লাংক চেক দিয়েছিলো নির্যাতনের। এ কারণে কেউ আবরারকে বাঁচাতে যায় নি, যেমনিভাবে এর আগেও শতাধিক শিক্ষার্থীকে কেউ বাঁচাতে যায় নি।
৪. আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ২০১২-২০১৯ পর্যন্ত সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে নির্যাতনের যে প্যাটার্ন ছিলো সেটা সংঘটিত ও সুপরিকল্পিত ছিলো। এখানে সরাসরি নির্যাতনকারীদেরসহ সুপিরিয়র রেস্পন্সিবিলিটির কারণে যে শাহবাগীরা শিবিরকে ডিহিউম্যানাইজ করে এমন পরিবেশ তৈরি করেছিলো যে নির্যাতন হচ্ছে জেনেও কেউ বাঁচাতে আসতে সাহস করতো না, পুলিশ প্রশাসন যারা নির্যাতনকারীদের শেল্টার দিতো এবং নির্যাতিতদেরই ধরে নিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখতো আর ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের উর্ধতন নেতাদের নির্দেশনা- সবগুলো বিবেচনায় নিয়ে মানবতা বিরোধী অপরাধ ট্রাইবুনালে বিচার হওয়া উচিত।