
এক বখাটের যৌন হয়রানির শিকার হয়ে ১০ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ওই ছাত্রীর নাম নাজনিন জাহান কুমকুম (১৪) তার বাড়ি বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা গ্রামে। তার বাবার নাম নজরুল ইসলাম খান। আজ শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার আগে ওই ছাত্রী একটি চিরকুট লিখে গেছেন। সেই চিরকুটে তিনি উল্লেখ করেন "আমি আমার নিজের ইচ্ছায় কিছু করিনি ,আমাকে বাধ্য করা হয়েছে । ওই ছেলের জন্য ওর পরিবারের জন্য আমার জীবন থেকে মনে হয় সব সুখ সাতি (শান্তি) চলে (গেছে)"
জানা গেছে, নাজনিন জাহান কুমকুম পূর্ব কালাইয়া হাসান সিদ্দিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির পড়াশুনা করতো। তিনি বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে একই বিদ্যালয়ের রিয়াদুল ইসলাম তৌসিফ (১৬) একই এসএসসি পরীক্ষার্থী তাকে যৌন হয়রানি করতো। কুমকুমের পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে কুমকুমকে প্রতিবেশী কিশোর তৌসিফ যৌন হয়রানি (উত্যক্ত) করতো। বিষয়টি তারা তৌসিফের চাচা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্ত তৌসিফ শুক্রবার(১৪ মার্চ) শিক্ষার্থী কুমকুমের সাথে ও তার এক সহপাঠীর তোলা একটি ছবি নোংরা ভাষায় কমেন্ট করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় । এরপরে কুমকুম তার খাতায় একটি চিরকুট লিখে ওই দিন বিকেল ৪টার দিকে গলায় ফাস দেয়।
স্বজনরা ঘটনাটি টের পেয়ে কুমকুমকে কালাইয়া সাহেদা গফুর হাসপাতালে নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগের চিকিৎক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর স্বজনরা তার মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে রাতেই দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল । তখন স্থানীয়রা লাশের গলায় ফাঁসের মত চিহ্ন দেখতে পায়। অন্যদিকে, কুমকুমের রুমে খাতায় লেখা চিরকুটের সন্ধান পায় স্বজনরা । তখনই ঘটনাটি থানা পুলিশকে অবহিত করে তারা। ওই দিন রাত ১০টার দিকে পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বাউফল থানার ওসি (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম বলেন, একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ওই চিরকুটে স্পষ্ট করে কিছু লেখা হয়নি। কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে ছাত্রীটি আত্মহত্যা করেছেন। এবিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ দেয়া হয়নি।