
সরকারি চিকিৎসায় সমস্যা হচ্ছে যা চাচ্ছেন সেটা পাচ্ছেন না। আমাদের কাছে বহু হাসপাতাল পড়ে আছে ডাক্তার নাই। খামোখা এত টাকা খরচ করে দালান তৈরি করে যন্ত্রপাতি বসায়ে এত কষ্টের মধ্যে যাওয়ার দরকার কি! আজকে যারা যারা যা যা প্রস্তাব করলেন প্রতিটি জিনিস নিজ উদ্যোগে করা সম্ভব। কক্সবাজারের মানুষের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মাথার মধ্যে কিছু একটা ঢুকলে শেষ না করে উঠে না বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) কক্সবাজারে বিয়াম অডিটোরিয়ামে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এই মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সব জায়গায় হাসপাতাল দরকার এতে কোনও সন্দেহ নাই। আমার পরামর্শ সরকারের জন্য অপেক্ষা না করেন। সরকারের হাসপাতাল মানে বিপদের বোঝা আরেক ঘাড়ে চাপবে। ডাক্তার থাকবে না, ওষুধ থাকবে না, বই থাকবে না। এরকম অবস্থায় কেন যাবেন। কক্সবাজারে লোকের অভাব আছে, টাকার অভাব আছে, দুইজন লোক নিজেই বলতে পারে ‘আমি একাই দিবো’ । দান করার জন্য না, বিনা পয়সায় চিকিৎসার জন্যও না, যেটুকু খরচ সেটুকু তুলে আনবেন। তাতে আপনার টাকা আপনার কাছে ফেরত চলে আসবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট ভাগ্যবান, কারণ আমাদের একটি সমুদ্র আছে। ব্যবসার জন্য সমুদ্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সামুদ্রিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশের একটি দীর্ঘ সমুদ্রতীর রয়েছে এবং চট্টগ্রামের সমুদ্রতীরের যেকোনও স্থানে সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা সম্ভব।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, কক্সবাজারে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। এটি কেবল একটি পর্যটন শহরই নয়, বরং অর্থনীতিরও কেন্দ্র।
নেপাল ও ভারতের সেভেন সিস্টার্সের কোনও সমুদ্র নেই উল্লেখ করে ড. ইউনূস পারস্পরিক সুবিধার্থে বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসা করতে পারলে সবার ভাগ্য বদলে যাবে।’
তিনি লবণ উৎপাদনকারীদের কাছে জানতে চান, বিদেশি আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে আগ্রহী কি না। কেননা কক্সবাজারের কৃষকদের উৎপাদিত লবণ এখন রফতানি করার সক্ষমতা রয়েছে।
তিনি পাইলট ভিত্তিতে কক্সবাজারে বায়ু বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি বায়ুশক্তির (বায়ুপ্রবাহের শক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন) সম্ভাবনা সম্পর্কে খোঁজ নেন। তিনি বলেন, কক্সবাজার থেকে আরও দক্ষিণে বায়ু বিদ্যুতের সম্ভাবনা আছে। এখানে উন্নত প্রযুক্তি আরও কি কাজে লাগানো যায় সেই বিষয়ে দেখতে হবে।
স্থানীয় জনগণকে ভবিষ্যতে সুযোগগুলো কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কক্সবাজার অর্থনীতির একটি বৃহৎ শক্তি এবং এটি তথ্যপ্রযুক্তিরও একটি শহর হতে পারে।
তিনি স্থানীয় জনগণের কাছে তাদের ওপর রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের প্রভাব সম্পর্কে জানতে চান।
মতবিনিময় সভায় কক্সবাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রধান উপদেষ্টার সামনে বিভিন্ন প্রস্তাব ও দাবি পেশ করেন।