
রমনা বিভাগের সাবেক এডিসি হারুন অর রশিদ ওরফে এডিসি হারুনের নাম শুনলে পল্টন শাহবাগ এলাকায় বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খেত। যেকোনো প্রকার আন্দোলন মানেই দমন করতে মাঠে নামতেন হারুন। তার দমন প্রক্রিয়ায় পড়ে অনেকের অবস্থা কাহিলও হয়েছে। অথচ এখন প্রতিদিন কোনো না কোনো আন্দোলন হচ্ছে; কিন্তু সেই আন্দোলন দমাতে ব্যর্থ বর্তমান পুলিশ কর্মকর্তারা। এ কারণে অনেকেই বলছেন, এডিসি হারুনের মতো পুলিশ অফিসার দরকার।
সম্প্রতি শাহবাগ, জাতীয় প্রেস ক্লাব পল্টন এবং ইন্টারকন্টিনেন্টাল এলাকায় আন্দোলন চলাকালে জিম্মি সাধারণ মানুষের কাছ থেকে এ রকম মন্তব্যই পাওয়া গেছে। তবে আরেক অংশ বলছে, হারুন পুলিশ অফিসার হিসেবে একেবারেই অমানবিক ছিলেন। তার কোনো দয়া-মায়া ছিল না। তিনি দোষী-নির্দোষ সবাইকে অমানুষিক নির্যাতন করতেন। তিনি নির্দয় মানুষের মত আচরণ করতেন। এরকম অফিসার বিদায় হয়েছে, মানে ভালো হয়েছে।
হারুন-সানজিদা কাণ্ডের পর প্রথমে হারুনকে বদলি করা হয় রংপুর রেঞ্জ পুলিশে। এর পর সেখান থেকে প্রত্যাহার করে ঢাকায় আনা হয়। ৫ আগস্টের পর তাকে ওএসডি করা হয়। একই ঘটনায় ডিএমপির এডিসি সানজিদাকে প্রথমে রংপুর রেঞ্জে বদলি করা হলেও তিনি সেখান যোগদান না করায় ডিএমপিতেই রেখে দেওয়া হয়েছিল। ৫ আগস্টের পর তাকেও ওএসডি করা হয়। একই কারণে রাষ্ট্রপতির সাবেক এপিএস মামুনকে (সানজিদার স্বামী) কোনো প্রকার শাস্তি দেওয়া না হলেও ৫ আগস্টের পর তাকেও ওএসডি করা হয়।
পুলিশ সূত্র বলছে, ওএসডি হওয়ায় তিনজনই ঢাকাতেই রয়েছেন। এডিসি সানজিদা ও হারুন নিয়মিত পুলিশ কমান্ড সেন্টারে গিয়ে হাজিরা দিয়ে আসেন। অন্যদিকে, এপিএস মামুন ওএসডি হয়ে ঢাকাতেই রয়েছেন বলে জানা গেছে। আর পুলিশ বলছে, মামুন আর সানজিদা এখন একসঙ্গেই রয়েছেন।
এডিসি সানজিদার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এডিসি সানজিদা বর্তমানে ওএসডি অবস্থায় আছেন। তিনি ডিএমপির কোনো বিভাগেই দায়িত্বে নেই।’
এডিসি হারুনের বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া ) ইনামুল হক সাগর সারাবাংলাকে বলেন, ‘হারুন অর রশিদ সবশেষ রংপুর রেঞ্জে চাকরি করেছেন। এর পর তাকে প্রত্যাহার করে ঢাকায় আনা হয়। সবশেষ তাকে ওএসডি করা হয়েছে। তিনি এখন নিয়মিত হাজিরা দিয়ে চলে যাচ্ছেন।’