উপজেলার একটি প্রকল্প থেকে প্রকৌশলীর কাছে ১০ শতাংশ টাকা চাওয়া হচ্ছে। টাকা দিলে প্রকল্পের কাজ যেনতেনভাবে করলেও সমস্যা নাই। এমন কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। অডিওটিতে চাঁদা চাওয়া কণ্ঠস্বর স্থানীয় বিএনপি ও যুবদলের একাধিক নেতার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে হুবহু মিলে যাচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চাঁদা দাবির এই অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মধ্যে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে যে নেতাদের কণ্ঠস্বর মিল পাওয়া যাচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছেন জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার চরপাকেরদহ ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শফিউল ইসলাম স্বপন এবং ফরহাদ হোসেন লিটন নামে স্থানীয় এক যুবদল নেতা।
৭ মিনিট ১৭ সেকেন্ডের ভাইরাল অডিও অনুযায়ী, মাদারগঞ্জ উপজেলার একটি প্রকল্পের প্রকৌশলীর সাথে কথা বলছেন স্বপনসহ বেশ কয়েকজন নেতা। ৩৭ লাখ টাকার ওই প্রকল্প থেকে ১০ শতাংশ চাঁদা দাবি করেন তারা। ওই প্রকৌশলী প্রথমে অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে চান। এরপর কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে টাকা দিতে রাজি হন সেই প্রকৌশলী। টাকা দেয়ার পর প্রকল্পের কাজ যেনতেনভাবে শেষ করলেও অসুবিধা নেই বলে জানান বিএনপির ওই নেতা।
অডিওটির বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা শফিউল ইসলাম স্বপন বলেন ‘এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমাকে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আওয়ামী লীগসহ একটি পক্ষ সুপার এডিট করে এই অডিও ভাইরাল করছে। আমি এই ঘটনায় ইতিমধ্যে মাদারগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছি। আমি চাই, যারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এই কাজ করেছে, তাদের বিচার হোক।’
প্রকল্পটির প্রকৌশলী আবু রায়হান আবির মুঠোফোনে জানান, ‘প্রভাতী প্রকল্পের আওতায় তেঘরিয়া বাজারে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। এই কথোপকথন কবে হয়েছে আমার মনে নেই। মনে হচ্ছে, এটি এআই দিয়ে করা। আমিও রেকর্ডটি খতিয়ে দেখছি।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চরপাকেরদহ ইউনিয়ন বিএনপির একাধিক নেতারা বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা যখন দলকে সুসংগঠিত চাই এবং দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাই। ঠিক সেই সময়ে এমন অডিও ফাঁস হওয়া খুবই দুঃখজনক। দল বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। শফিউল ইসলাম স্বপন যদি দোষী হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। আর তিনি যদি দোষী না হন, তাহলে এই অডিওর পেছনে যারা রয়েছে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনুক।’
মাদারগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট মঞ্জুরুল কাদের বাবুল বলেন, বিষয়টি আমরা দেখেছি। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে আলোচনা করে দোষীদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
