
নব্বই দশকের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন আবারও স্বরূপে ফিরতে তৎপরতা শুরু করেছেন। জামিনে মুক্তির পর তার বিরুদ্ধে মার্কেট দখল, বাড়ি দখল, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কয়েকটি কিলিং মিশনেও তিনি মাঠে কাজ করেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ আগস্ট জামিনে মুক্তি পেয়ে সুব্রত বাইন তার পুরোনো আস্তানা মগবাজারে চলে যান। সেখানে বসে কদিনের মধ্যেই সহযোগীদের একত্র করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেন। মগবাজারের ‘বিশাল সেন্টার’-এর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় তার নতুন অপরাধ কর্মকাণ্ড। এরপর মেরুল বাড্ডার মাছের আড়ত ও বাড়ি দখলের পাশাপাশি একাধিক চাঁদাবাজির খবর পাওয়া গেছে। কিছু কিছু জায়গায় তিনি নিজেই উপস্থিত থেকেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সুব্রত বাইনের পক্ষে আর্থিক লেনদেন করছেন একটি দলের হাতিরঝিল থানা এলাকার স্থানীয় এক নেতা। আর বিভিন্ন জায়গায় অপারেশনের তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সুব্রত বাইনের সহযোগী বাপ্পি আহমেদ ওরফে বাপ্পি ও ইখতিয়ার উদ্দিন ওরফে ইখতিয়ার।
২০০৩ সালের ১৪ মে রাতে মালিবাগের সানরাইজ হোটেলে ১৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করতে যান জিসান। সেখানে তার বাহিনী পুলিশের ইন্সপেক্টর নুরুল আলম শিকদারসহ দুই পুলিশ সদস্যকে গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনার পর পালানোর সময় মগবাজারে পুলিশের গুলিতে জিসান গ্রুপের ক্যাডার উপল নিহত হন। সেই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী ইখতিয়ার। সে মতিঝিল এজিবি ও ব্যাংক কলোনি এবং আশপাশের এলাকার একক নিয়ন্ত্রক। সে এক সময় শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদ মন্টির ক্যাডার থাকলেও বর্তমানে সে যোগ দিয়েছে আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও শীর্ষ সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদের গ্রুপে। ইখতিয়ার ২০১৪ সালে কলকাতায় এসটিএফের হাতে গ্রেপ্তার হয়। দমদম জেলে থাকা অবস্থায় তার সঙ্গে সখ্য হয় মোল্লা মাসুদের। তখন নারায়ণগঞ্জ সেভেন মার্ডারের অন্যতম আসামি নূর হোসেনও ছিলেন একই জেলে।
মূলত নূর হোসেন ইখতিয়ার ও মোল্লা মাসুদের মাঝে সমঝোতা করান। তারপর ইখতিয়ার জেল থেকে বের হয়ে মোল্লা মাসুদকে জামিনে মুক্ত করেন। তখন মোল্লা মাসুদের জামিনের জন্য ইখতিয়ার বড় অঙ্কের টাকা ব্যয় করেন। ইখতিয়ার তখন কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে আটক সুব্রত বাইনের জন্যও টাকা দেন এবং মাঝেমধ্যে ব্যান্কসাল কোর্টে হাজিরার দিন সুব্রত বাইনের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেন বেশ ক’বার। ইখতিয়ারের ভাগিনা বাপ্পি এখন মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইনের অন্যতম ক্যাশিয়ার। বর্তমানে বাপ্পি মোল্লা মাসুদ ও সুব্রত বাইনের মগবাজারের সব চাঁদার টাকা কালেকশন করেন। তার সহযোগী হিসেবে থাকেন আন্ডারওয়ার্ল্ড-এর আরেক সন্ত্রাসী বিপু ও ফ্যান্সি বাশার।
বাপ্পি তার মামা ইখতিয়ার ও সুব্রত বাইন এবং মোল্লা মাসুদের অস্ত্রভাণ্ডারও দেখাশোনা করেন। মতিঝিল, দিলকুশা, ক্রীড়া ভবনসহ মগবাজারে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ এখন বাপ্পির হাতে।
এই সূত্র আরো জানায়, মগবাজার থেকে সুব্রত বাইন উত্তর বাড্ডার গুদারাঘাট এলাকায় আস্তানা গাড়েন। কিন্তু অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরুর পর তিনি বরিশালের উজিরপুরে চলে যান। প্রতিবেশী দেশের গোয়েন্দা সংস্থার নির্দেশ অনুসারে কিলিং মিশনের অংশ হিসেবে গত ২৬ জানুয়ারি তিনি নয়াটোলায় নিজের আস্তানায় বসে দুপুর ২টার পর মধু বাবু, বিপু, মাহফুজুর রহমান বিপু, নয়াটোলার শরীফ, ইখতিয়ারের ভাগ্নে বাপ্পী, ওসমানের ছেলে নয়ন, ড্রাইভার ওসমান ওরফে জামাই ওসমানকে নিয়ে কিলিং মিশনের মিটিং করেন। তাদের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের দুই সমন্বয়কও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার টার্গেটে রয়েছেন।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, সুব্রত বাইন হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে নিজের মাঠ ফাঁকা করতে চান, যাতে প্রতিটি সরকারি ঠিকাদারি কাজ তার হাতে আসে। এ বিষয়ে গুলশান-২-এ মোটা তারেক নামে একজনের মাধ্যমে বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিককে নিয়ে একাধিক বৈঠকও করেছেন তিনি। সুব্রত বাইন সড়ক ও জনপথ ঠিকাদার সমিতির কমিটি গঠনেও ভূমিকা রেখেছেন। ওই কমিটির সভাপতি পদে আশফাক, সাধারণ সম্পাদক পদে যশোরের মানিকসহ কমিটিতে বিভিন্ন এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীকে স্থান দেওয়া হয়েছে। সুব্রত তার ডানহাত খ্যাত আরেক পুরস্কার ঘোষিত সন্ত্রাসী মোল্লা মাসুদের (বর্তমানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে অবস্থানরত) মাধ্যমে মতিঝিল, গোগীবাগ ও ক্রীড়া পরিষদ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন। সুব্রত বাইন সুইডেন আসলামের সঙ্গে দেখা করে যৌথভাবে কারওয়ান বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে সমঝোতা করেছেন।
গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, সুব্রত বাইন মতিঝিলের শীর্ষ সন্ত্রাসী ইখতিয়ারের (মালিবাগ সানরাইজ হোটেলে ডিবি পুলিশ হত্যামামলার আসামি) মাধ্যমে অস্ত্র ক্রয় করছেন। তার হাতে এখনো থানা থেকে লুট হওয়া প্রায় ১৭টি ছোট-বড় অস্ত্র রয়েছে বলে জানা গেছে। গত দুদিন আগে নেপালে পলাতক বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সহযোগী (পতিত হাসিনা নিজে তার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেন) হাজারীবাগের হারুন অর রশীদ লিটন ওরফে লেদার লিটনের মাধ্যমে যুবলীগের ক্যাসিনো সম্রাট (বর্তমানে কলকাতায় অবস্থানরত) ও খালেদের মাধ্যমে (বর্তমানে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত) কম মূল্যে অস্ত্র কেনার বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছেছেন সুব্রত বাইন।
সুব্রত বাইনের ভারতীয় কানেকশন
নব্বই দশকের শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের বিরুদ্ধে ২০০১ সালে জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর পরোয়ানা জারি করে। তাকে গ্রেপ্তারে সহায়তা করলে লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এরপরই তিনি ভারতে আশ্রয় নেন। সেখানে বসে সুব্রত বাইন দীর্ঘদিন ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন। একসময় ভারতেও তিনি অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়লে সেখানকার পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালায়। ওই অভিযানের একপর্যায়ে পুলিশ তাকে ধাওয়া করলে তিনি নেপালে ঢুকে পড়েন। নেপাল পুলিশ তখন সুব্রত বাইন ও তাকে ধাওয়াকারী ভারতীয় তিন পুলিশ সদস্যকে আটক করে। দুই দেশের সমঝোতায় ভারতীয় তিন পুলিশ সদস্যকে মুক্তি দেয় নেপাল। আর সুব্রত বাইনকে অবৈধ প্রবেশের দায়ে সাজা দেওয়া হয়। ২০১২ সালে নেপালের জেল থেকে পালিয়ে গিয়ে সুব্রত বাইন ভারতে অবস্থান নেন।
২০১৬ সালে বাংলাদেশের একটি সংস্থা সুব্রত বাইনকে ভারত থেকে নিয়ে এসে তাদের জিম্মায় রাখে। জানা গেছে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর সমঝোতায় ভারত থেকে সুব্রত বাইনকে ঢাকায় আনা হয়। উদ্দেশ্য ছিল কিছু অভিযানে তাকে কাজে লাগানো। সে থেকেই সুব্রত বাইন একটি বিশেষ সংস্থার কাছে বন্দি ছিলেন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার সফল বিপ্লবের পর আওয়ামী লীগের পতন হলে মুক্তি পান সুব্রত বাইন। অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরুর পর তিনি ঢাকা ছেড়ে বরিশালের উজিরপুরে আশ্রয় নেন। পুলিশের একটি সূত্র বলছে, সুব্রত বাইনের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হচ্ছে।
গোয়েন্দা তথ্য অনুসারে, সুব্রত বাইন দীর্ঘদিন ভারতে অবস্থান করায় দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। বাংলাদেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নেপালের জেলপলাতক এ সন্ত্রাসীকে ‘র’কাজে লাগাতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, সুব্রত বাইন ‘র’-এর কমান্ডো জেড ক্লাস এনএসজি টাইপ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। গ্রেনেডের মতো ভারী অস্ত্র চালানোতেও পারদর্শী তিনি। এজন্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা ‘এমআই’ ও ‘র’ তাকে সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করছে।
বাংলাদেশে বন্দি থাকা অবস্থায় সুব্রত বাইনের সঙ্গে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার যোগাযোগের মাধ্যম ছিলেন মানিকগঞ্জ আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর (বর্তমানে মানিকগঞ্জ কারাগারে) রয়েছেন সুভাষ সরকার। এই সুভাষ সরকার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গুরু্। মূলত সুভাষ সরকারের প্রভাবেই ভারতীয় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে ওবায়দুল কাদের টানা দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। এছাড়া সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের সব ভারতীয় যোগাযোগ রক্ষা করতেন এই সুভাষ। বিশেষ করে আজিজের বড় ভাই হারিছ আহমেদের ভারতে অবস্থান ও বিভিন্ন সুবিধা প্রদান সুভাষের মাধ্যমেই সম্পন্ন করা হতো।
কলকাতায় সুব্রত, হারিছ, মোল্লা মাসুদ, হান্নানসহ (লিয়াকতের ছোট ভাই) অনেকের স্থানীয় অভিভাবক ছিলেন গৌর গোপাল সাহা, যিনি করোনায় মারা যান। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে সুভাষ সরকার সুব্রত বাইনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিলেন এবং জোসেফ ও হারিছের মোহাম্মদপুরের সাম্রাজ্য বাইনের কাছে দিতে চেয়েছিলেন, যাতে সেখানে ইমন বা পিচ্চি হেলাল আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে। এর পরপরই সুভাষ সরকার গ্রেপ্তার হন।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা সুব্রতকে সরকার পতনে ভূমিকা রাখা দুই সমন্বয়ককে হত্যার টার্গেট দিয়েছে। সুব্রত বাইনের সঙ্গে ভারতীয় হাইকমিশনে ২০০১-০৫ সাল পর্যন্ত প্রেসের সেকেন্ড সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করা শৈবাল রায় চৌধুরী এবং ২০০৫-১০ সাল পর্যন্ত একই পদে দায়িত্ব পালন করা সমীর কুমার দিক্ষিত এখন নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন।
সুব্রতকে কাজে লাগাচ্ছে অপরাধচক্র
এদিকে নিজের হারানো সাম্রাজ্য ফিরে পেতে মরিয়া আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী আমিন রসুল সাগর ওরফে টোকাই সাগর। তিনি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে মাথায় পুরস্কার ও হুলিয়া নিয়ে কানাডা থেকে ফিরে এসেছেন। অস্ত্র কেনার জন্য তিনি সুব্রতকে বড় অঙ্কের টাকা দিয়েছেন। এছাড়া আরেক সন্ত্রাসী গোল্ডেন মনিরও সুব্রতকে কাজে লাগাচ্ছেন। তারা বিমানবন্দর (স্বর্ণ চোরাচালান, অনান্য চোরাচালান, পার্কিং) গাবতলী, সায়েদাবাদ, মহাখালী টার্মিনাল দখলের জন্য মহড়াও দিয়েছেন। এমনকি সুব্রত নিজে সুইডেন আসলামের সঙ্গে দুদিন বৈঠক করেছেন কারওয়ান বাজার একক দখলে নেওয়ার জন্য। তাদের এ প্রচেষ্টা সফল হলে সুইডেন আসলাম চাঁদার ৪০ শতাংশ পাবেন বলে সমঝোতা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, সুব্রত বাইন এখন তার কথিত তিন শত্রুকে শেষ করতে চান। তারা হলেন রনি, যিনি একসময় তার সবকিছু দেখভাল করতেন। দ্বিতীয়ত, উজ্জ্বল ওরফে ভিপি উজ্জ্বল; যিনি একসময় তার রাজনৈতিক যোগাযোগ রক্ষা করতেন। আর তৃতীয়ত, বিপ্লব ওরফে হোকো বিপ্লব, যিনি একসময় তার অনুগত ছিলেন। এ তিনজন এখন স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন এবং সুব্রত বাইনের বিরুদ্ধে শহরে নিজেদের অবস্থান তৈরি করছেন। এ কারণে এ তিনজনকে সুব্রত বাইন হত্যার জন্য টার্গেট করছেন বলে জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, সুব্রত বাইনের লোকজন তার নির্দেশে সম্প্রতি নয়াটোলার এক ফ্ল্যাট মালিকের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। এ নিয়ে একটি ভিডিও ফাঁস হয়েছে। ভিডিওতে প্রথম ব্যক্তি বাশার ওরফে ফ্যান্সি বাশার, দ্বিতীয় ব্যক্তি ‘মালগাড়ি’ নামে পরিচিত আর তৃতীয় ব্যক্তি সাগরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। চাঁদা দাবি নিয়ে ভুক্তভোগী মৌখিকভাবে হাতিরঝিল থানাকে অবহিত করলে পুলিশ তাকে বুঝিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। চাঁদা দাবির ফুটেজটি হাতিরঝিল থানার ওসিও দেখেছেন।