![Image description](https://content.bdtoday.net/files/img/202502/0643f76e9b2c858e2c80c7b0d6092e4a.jpg)
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে শৃঙ্খলা ফেরেনি। দুই একজন উপদেষ্টার কারণে প্রশাসনে গতি ফিরছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। অবশেষে প্রশাসনে বদলি নিয়োগ বাণিজ্য ঠেকাতে কঠোর হয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গত ১৭ বছর রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় চাকরিচ্যুত প্রশাসনে বঞ্চিত ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে অবশেষে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে সচিব পদে ১১৯ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে ৫২৮ জন, গ্রেড-১ পদে ৪১ জন, যুগ্ম সচিব পদে ৭২ জন এবং উপসচিব পদে ৪ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। আবার জনপ্রশাসনে নিয়মিত কাজের বাইরে বিভিন্ন পর্যায়ে বদলি-পদায়ন এখনও চলছে। প্রশাসনে পদোন্নতি বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদায়ন ও বদলি করা হচ্ছে না। কিন্তু বঞ্চিত কর্মকর্তাদের এখনো পদায়ন করা হচ্ছে না। গত ৫ আগস্টের পর প্রতিদিন জনপ্রশাসনে বিভিন্ন পদে নতুন কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া চলমান। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া সচিব থেকে উপ-সচিব পর্যন্ত প্রশাসনে রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিভিন্ন পদে এখনো ফ্যাসিবাদী আমলারা। জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের নাম থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ক্ষতিকর। অপরদিকে একটি নিয়োগ সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত এক উপদেষ্টার আধা-সরকারি পত্র (ডিওলেটার) নিয়ে বিতর্ক উঠায় সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
প্রশাসনের কোটা কমানোর সুপারিশ বাস্তবায়ন না করার অনুরোধ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসনিক সার্ভিসের (প্রশাসন ক্যাডার) কোটা কমিয়ে ৫০ শতাংশ করতে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করেছে, তা বাস্তবায়ন না করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। প্রশাসন ক্যাডারের সংগঠনটি বলেছে, এটি উচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি হওয়া বিষয়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। একটি দক্ষ, জনমুখী, নিরপেক্ষ ও জবাবদিহিমূলক জনপ্রশাসন গড়তে সরকারের এ উদ্যোগকে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা শুরু থেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু বিভিন্ন গোষ্ঠী বৃহত্তর কল্যাণ চিন্তার পরিবর্তে নিজ নিজ স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে বিভিন্ন সার্ভিসের সদস্যদের মধ্যে সৌহার্দ্যরে পরিবর্তে বিভেদ সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারের সদিচ্ছাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে। গত সোমবার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম এবং মহাসচিব ও ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী এক বিবৃতিতে এ অনুরোধ জানিয়েছেন।
এদিকে প্রশাসনে কর্মকর্তাদের পছন্দ অনুযায়ী বদলির জন্য উপদেষ্টা-সিনিয়র সচিব-সচিব এবং অন্যান্য পর্যায় থেকে আধা-সরকারি পত্র-মৌখিকভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করছেন যা সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা-১৯৭৯ এর ২০ এর পর্যায়ভুক্ত অপরাধ বলে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলাজনিত বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ। এতে বলা হয়েছে যে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থায় কর্মরত প্রশাসন ক্যাডার ও অন্যান্য ক্যাডার হতে আগত উপসচিব এবং নন-ক্যাডার কর্মকর্তাদের অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে বদলি/পদায়ন সংক্রান্ত কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়ে থাকে। ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কিছু কর্মকর্তা তাদের পছন্দ অনুযায়ী বদলির জন্য উপদেষ্টা-সিনিয়র সচিব-সচিব-অন্যান্য পর্যায় হতে আধা-সরকারি পত্র-মৌখিকভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করছেন যা সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর ২০ এর পর্যায়ভুক্ত অপরাধ। কয়েকজন উপদেষ্টা তাদের আওতাধীন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বদলি বা পদায়নের আগে সম্মতি নেয়ার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন। অস্বাভাবিক বদলিকে কেন্দ্র করে জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর একটি চক্র অর্থ লেনদেন করেছে। রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার করা এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এক চিঠিতে উপদেষ্টারা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন হুট করে কর্মকর্তাদের বদলি করায় কাজ করতে সমস্যায় পড়ছেন তারা। অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের বদলি করে নতুন যাদের দেয়া হচ্ছে, তাদের বেশিরভাগই দায়িত্বপ্রাপ্ত পদের কার্যক্রম সম্পর্কে আগে থেকে অবহিত নন। এর ফলে কার্যক্রমে গতি আসছে না। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এনজিও’র প্রধান মোহাম্মদ এজাজকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দুই বছরের জন্য নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার পাঠানো একটি সুপারিশকে ঘিরে এই বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পাঠানো সুপারিশের একটি চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের পর থেকেই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্থানীয় সরকারের উপদেষ্টার সুপারিশের কপিটি ভাইরাল হওয়ার পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরস্পর পরস্পরকে দোষারোপ করছে।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দ্বন্দ্বের বিষয়টি অনেকটা ওপেন সিক্রেট। সম্প্রতি চলতি দায়িত্বে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী প্রতিষ্ঠানটির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নিয়োগ কতোটা স্বচ্ছ ছিল- এটা নিয়েও রয়েছে বিতর্ক। এলজিইডি’র মানবসম্পদ উন্নয়ন, মান নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশ ইউনিটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (গ্রেড-৩) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। যোগ্যতা অনুযায়ী কয়েক গ্রেড টপকে তাকে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি নিয়ে চলছে সমালোচনা।
গত ২৩শে জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমানের কাছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পাঠানো এক চিঠিতে এ সুপারিশ জানানো হয়। সুপারিশ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, ‘প্রিয় সিনিয়র সচিব। আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, আমি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে নিয়োজিত আছি। আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, স্থানীয় সরকার বিভাগের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কার্যাদি সম্পন্ন করণের জন্য প্রশাসক হিসেবে একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তা পদায়ন করা প্রয়োজন। রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্স সেন্টার, শেরেবাংলা নগর, ঢাকা এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তা। তিনি কর্মজীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে পদায়ন করা হলে এই প্রতিষ্ঠানের কাজের গতি বৃদ্ধিসহ প্রতিষ্ঠানের ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল হবে বলে আমি মনে করি। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একাধিক যোগ্য কর্মকর্তা (সচিব) রয়েছেন। তাদের বাদ দিয়ে একাধিক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার পছন্দের এই এনজিও প্রধানকে নিয়োগ দিতে যে সুপারিশ করা হয়েছে এতে ক্ষুব্ধ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, সুপারিশ তিনি করতেই পারেন। কিন্তু একজন এনজিও কর্মকর্তা কিভাবে প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি তো এ বিষয়ে যোগ্য ব্যক্তি নন। এখানে উপদেষ্টা তার মন্ত্রণালয় থেকেই বরং যোগ্য একাধিক সচিবকে নিয়োগ দিতে পারতেন। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা সমালোচনা চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এটি প্রকাশের বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে দুষছে। আরেক কর্মকর্তা বলেন, সুপারিশের চিঠিটি আমরা পেয়েছি কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে এটি নথিভুক্ত হয়নি। এটা অনেক প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যেতে হবে। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে তাই এটা বিভিন্নভাবে যাচাই-বাছাই করা হবে। পরবর্তীতে এটা চূড়ান্ত হবে। এক্ষেত্রে নিয়োগটি না-ও হতে পারে। অর্থাৎ বাতিল হতে পারে। প্রসঙ্গত, মোহাম্মদ এজাজ জাতীয় নাগরিক কমিটির পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক সেলের সদস্য। সরকারের আমলে ক্ষমতাধর রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রভাব, ক্ষমতাধর আমলার প্রভাব এবং পদ বাণিজ্যের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্যাডারের ঊর্ধ্বতন লাভজনক পদে প্রশাসনের ডিসি-কমিশনার, সচিব পদে নিয়োগ দেয়া হতো। এ সরকারের আমলেও সমন্বয়ক, উপদেষ্টা বা ক্ষমতাধর আমলার অনুগ্রহ ছাড়া সচিবসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার সুযোগ নেই। পদ বাণিজ্যের মাধ্যমে আগের সরকারের আমলে যেভাবে নিয়োগ পাওয়া যেত, সেটি এখনো চলমান আছে কিনা, খতিয়ে দেখার অবকাশ আছে। তবে সে সময়কার দালাল চক্রের সদস্যের আনাগোনা এখনো সচিবালয়সহ বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সেদিন পরিচিত এক আমলার কাছে জানা গেল, তার চেনামতে এক দালাল একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের বারান্দায় অপেক্ষা করছে। সে অন্তত একজনকে ওএসডি হওয়া বা শৃঙ্খলাজনিত শাস্তি থেকে রক্ষার জন্য অনেক উঁচু পর্যায়ের একজনের সাক্ষাতের সময়সূচি নিয়ে এসেছে। সেই দালাল তাকে বলেছে, পদ্ধতি একই আছে, ব্যক্তি এবং পরিমাণে পরিবর্তন হয়েছে মাত্র। গত সরকারের সময় বিভিন্ন লাভজনক পদের বিপরীতে নিলামে যে ডাক উঠেছে, সম্প্রতি ডিসি পদায়নের সময় তার ঝলকানির নমুনা প্রশাসনে বিতর্ক রয়েছে।
জনপ্রশাসন কমিটি: প্রশাসনে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, যুগ্ম সচিব ও তার উপরের পদের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, বদলি ও শৃঙ্খলাসংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ দিতে ছয় সদস্যের ‘জনপ্রশাসন বিষয়ক কমিটি’ করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি করা হয়েছে অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদকে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন সচিব। কমিটির সদস্যসচিব তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এ কমিটির সদস্য। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ জানিয়েছে, এ কমিটি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে তথ্য চাইতে পারবে।
সম্প্রতি নিউএইজ সম্পাদক নুরুল কবিরকে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা কার্যসম্পাদনের দায়-দায়িত্ব বা সামর্থ্যরে জায়গার কথা বলতে গিয়ে আমলাদের কিছু নিয়মকানুনের সীমাবদ্ধতার দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, আমলারা নিয়মকানুনের দুর্বল দিক তুলে ধরে ওই কাজ বাধাগ্রস্ত করতে। তারা যে সবসময়েই এমনটা করে, তা নয়। তবে কোনো কাজে যদি তাদের স্বার্থ থাকে, সেখানে তারা নিয়মকানুনের বাধা বা দুর্বলতা তাদের খোঁড়া যুক্তির আড়ালে ফেলে দিয়ে কাজ হাসিল করে। আবার কোনো কাজ তাদের স্বার্থের বাইরে হলে তা যতই জনস্বার্থমূলক হোক, তাকে তারা বাধা দেবেই। তখন আইনের, নিয়মের পাহাড় তুলবে। রাজনৈতিক পর্যায় বা মন্ত্রী বা উপদেষ্টা পর্যায় থেকে যদি সেই যুক্তি খ-ানো না যায়, তাহলেই আমলাদের পোয়াবারো। রাজনৈতিক সরকারের মন্ত্রীরা বুঝেও না বোঝার ভাণ করত তাদের নিজস্ব ধান্দা হাসিলের লক্ষ্যে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিশ্চয়ই তা করবে না। তাই নিয়মকানুন যা আছে, তা গোড়া থেকে বুঝে কাজ করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, এটা চাইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সরাসরি নিয়োগ দিতে পারেন। সে আমলে নেয়া হয়নি। সে জায়গায় প্রশাসন ক্যাডারে কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এপিডি অনুবিভাগ) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বদলি-পদায়ন করা আমাদের রুটিন কাজ। যেহেতু এ ধরনের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনেকগুলো ধাপ পার হয়ে চূড়ান্ত করা হয়, তাই সর্বসম্মতিক্রমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাসের মধ্যে বর্তমান সরকার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে শৃঙ্খলা ফেরাতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। সব বাস্তবায়ন হতে একটু সময় লাগবে।