Image description

ফ্যাসিস্ট সরকারের হস্তক্ষেপে দীর্ঘদিন দেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন হয়নি। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পুরো জাতি এখন মুখিয়ে আছে একটি সুন্দর নির্বাচনের অপেক্ষায়। এরইমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোও নির্বাচনী তোড়জোড় শুরু করেছে। দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় চলতি বছরের মাঝামাঝি এই নির্বাচন করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চাপ দিয়েছে বিএনপি। এরই মধ্যে জামায়াতে ইসলামী বেশ কয়েকজন প্রার্থীও ঠিক করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে চলতি বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের জুনে এই নির্বাচন করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ, গত সোমবার বিএনপির একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আশ্বস্ত করেছেন যে, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। সরকার আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে ‘সর্বকালের সেরা এবং ঐতিহাসিক’ করার পরিকল্পনা করছে বলেও জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। নির্বাচন কমিশনও ডিসেম্বরকে লক্ষ্য করেই প্রস্তুতি শুরু করেছে।

এমন পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক নাকি অন্তর্বর্তী—কোন সরকারের অধীনে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিকদলসহ সর্বস্তরে শুরু হয়েছে আলোচনা। রাজনীতিবিদরা বলছেন, নির্বাচন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই হতে পারে। কারণ, সুপ্রিমকোর্টের রেফারেন্স অনুযায়ী গঠিত সাংবিধানিকভাবে একটি বৈধ সরকার অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব পালন করছেন। সেক্ষেত্রে শুধু রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রয়োজন। অন্যদিকে কেউ কেউ মনে করছেন, সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকলে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবি জোরালো হতে পারে। তারা বলছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বৈধভাবে গঠিত হলেও নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কথা বলা আছে। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বৈধতার বিষয়টি ঝুলে আছে সর্বোচ্চ আদালতে। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক ফেরানোর দাবিতে পৃথক চারটি রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। খুব দ্রুতই এগুলো নিষ্পত্তি হওয়ার কথা। গতকাল মঙ্গলবারও এই রিভিউ আবেদনগুলো শুনানির জন্য ধার্য ছিলো। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। সে কারণে দুই সপ্তাহ শুনানি পেছানো হয়েছে। তিনি দেশে ফেরার পরই হয়তো রিভিউ আবেদনগুলোর নিষ্পত্তি হবে। এটা নিষ্পত্তি করে সর্বোচ্চ আদালত যে পর্যবেক্ষণ দেবেন, সেই পর্যবেক্ষণ অনুযায়ীও আগামী নির্বাচন হতে পারে।

তবে আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোর পক্ষে মত দিলেও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে বাধা থাকবে না বলে মনে করছেন শীর্ষ রাজনীতিবিদরা। তারা বলছেন, এ সরকার রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে সংবিধানের অধীনে দায়িত্ব পালন করছেন। আবার সংবিধানের বাইরে গিয়েও কিছু ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। এসব সিদ্ধান্তের বৈধতার জন্য আগামী জাতীয় সংসদে অনুমোদনের প্রয়োজন হবে। তাই তত্ত্বাবধায়কের বিকল্প হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে নির্বাচন হতেই পারে।

এ ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আপিল বিভাগের রায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে হলেও সেটা বর্তমান সরকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না। এ সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে পারে। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। আর নিরপেক্ষ না থাকলে বা নিরপেক্ষতা নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকলে তখন নতুন কিছু চিন্তা বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা ভাবতে হবে।’

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘সবার দাবি নির্দলীয়, নিরপেক্ষ একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। যার অধীনেই হোক নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও নিরপেক্ষ থাকলে তাদের অধীনে নির্বাচনে আপত্তি নেই। তবে সেটা জনগণের সামনে পরিষ্কার করতে হবে। তারা যে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম এবং সেই দায়িত্ব তারা পালন করতে চান, সেটা তাদের বলতে হবে। বল এখন সরকারের কোর্টে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানাক, নিজেরা নির্বাচন করবে নাকি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করবে।’

বিল্পবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘নির্বাচনের বিষয়টি প্রথমত অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝাপড়ার ওপর নির্ভর করছে। বোঝাপড়া ভালো থাকলে এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে কোন বাধা নেই। কারণ, বিদ্যামান সংবিধানের অধীনে এই সরকার কাজ করছে। আবার সংবিধানের বাইরে গিয়েও কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে। আগামী জাতীয় সংসদে এসব কাজের বৈধতার প্রয়োজন হবে।

তবে শঙ্কার বিষয় অন্যখানে উল্লেখ করে এই রাজনীতিবিদ বলেন, বর্তমান সরকারের নির্দলীয় নিরপেক্ষ চরিত্র বহাল থাকলে নির্বাচন হতে বাধা থাকবে না; কিন্তু নিরপেক্ষতা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে। ছাত্রদের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ উঠেছে। এটা নিয়ে রাজনীতিবিদদের মধ্যে মনস্তাত্বিক দূরত্ব বাড়ছে। এটা বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জোরালো হবে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আগামী নির্বাচন এই সরকারের অধীনেই হবে। অন্তর্বর্তীকলীন সরকার তার নিরপেক্ষ চরিত্র বহাল রাখবে। আর সেটা না রাখলে দূরত্ব বাড়তে থাকবে। তখন কিন্তু নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জোরালো হয়ে উঠবে।

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, আমি মনে করি এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে। এই সরকার সাংবিধানিকভাবে বৈধ সরকার। তাই আলাদা নির্বাচনকালীন সরকারের দরকার নেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকেই বলা হয়েছে, কারও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সে পদত্যাগ করবে।’

‘সংবিধান যা বলছে’

প্রায় তিন দশকের বেশি সময় ধরে দেশের রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল নির্বাচন পদ্ধতি। নির্বাচিত দলীয় সরকারের অধীনে, নাকি অনির্বাচিত নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে– এ নিয়ে দফায় দফায় উত্তাপ ছড়িয়েছে দেশের রাজনীতিতে। এ অবস্থায় ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে স্বৈরশাসক এরশাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। কোনো সাংবিধানিক সংশোধনী ছাড়াই সে বছর তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়। এরপর ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রণয়ন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন কোন সরকারের অধীনে হবে সেই বিতর্কের অনেকটায় অবসান ঘটে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে চারটি সংসদ নির্বাচন হয়। সে সময় এই ব্যবস্থার বেশ কিছু দুর্বলতা চিহ্নিত হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হওয়া নির্বাচনগুলো দেশে-বিদেশে গ্রহণযোগ্যতা পায়।

এরই মধ্যে ২০০৮ সালে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবলিত ত্রয়োদশ সংশোধনীর পাসের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিন আইনজীবী দুটি মামলা করেন। হাইকোর্ট সেগুলো খারিজ করে দেন; কিন্তু হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণের পর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকসহ সাত বিচারপতির আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ আপিলের শুনানি করে ২০১১ সালের ১০ই মে ত্রয়োদশ সংশোধনী অসাংবিধানিক ঘোষণা করে সংক্ষিপ্ত, বিভক্ত আদেশ দেন সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিরা। সংক্ষিপ্ত রায়ে বলা হয়, পরবর্তী দুটি নির্বাচন পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে পারে। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে বিচারপতিদের রাখার বিষয়টি সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়।

ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশের আগেই আওয়ামী লীগ সরকার ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাস হয়। এর মধ্য দিয়ে স্থায়ীভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়ে যায়। তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপির অনুপস্থিতিতে এই সংশোধনী পাশ হয় সংসদে। এই সংশোধনীতে সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে দলীয় সরকারে অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা পোক্ত করে আওয়ামী লীগ। ফলে রায় অনুযায়ী পরবর্তী দুটি নির্বাচন আর তত্ত্বাবধায়কের অধীনে হয়নি।

রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পঞ্চদশ সংশোধনী আইন চ্যালেঞ্জ করে গত ১৮ আগস্ট সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট ব্যক্তি হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ১৯ আগস্ট রুল দেন। রুলে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এই রুলে ইন্টারভেনার (আদালতকে সহায়তাকারী) হিসেবে বিএনপি, গণফোরাম, জামায়াতে ইসলামী এবং একটি বেসরকারি সংস্থা ও কয়েকজন ব্যক্তি যুক্ত হন। এরপর পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের ১৬টি ধারার বৈধতা নিয়ে নওগাঁর রানীনগরের নারায়ণপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেন গত অক্টোবরে আরেকটি রিট করেন। এসব রিটের পরিপ্রেক্ষিতে জারি করা রুলের ওপর গত ৪ ডিসেম্বর শুনানি শেষ হয়। হাইকোর্ট গত ১৭ ডিসেম্বর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলুপ্ত করা-সংক্রান্ত পঞ্চদশ সংশোধনী আইনের দুটি ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে বাতিল ঘোষণা করেন।

এ রায়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করার আওয়ামী সরকারের সিদ্ধান্ত অবৈধ হয়। তবে এই ব্যবস্থা পুরোপুরি ফেরার বিষয়টি আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে বলে জানান আইনজীবীরা। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের বিষয়ে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন বিচারাধীন। এখন এই রায়ের (হাইকোর্টের রায়ের) ফাইন্ডিংসগুলো সেখানে তুলে ধরা হবে। সবকিছু মিলিয়ে আপিল বিভাগ তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’

অন্যদিকে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী ড. শরিফ ভূঁইয়া বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরে আসার ক্ষেত্রে বড় বাধা দূর হলো। তবে সেটা এখনই ফিরে এসেছে বলা যাবে না; কারণ, সেটা বাতিল করা হয়েছিল দুইভাবে। আদালতের রায় ও সংসদ কর্তৃক সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে। তিনি বলেন, বদিউল আলম মজুমদার ও আরও চারজন এ বিষয়ে আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করেছেন। এখন রিভিউয়ের শুনানি হবে। সেটা আবেদনকারীদের পক্ষে নিষ্পত্তি হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরবে।’

‘সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ’

এদিকে সংবিধান সংস্কার কমিশন সব রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচনী প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগের ক্ষেত্র তৈরি করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিধান করার সুপারিশ করেছে। এতে প্রধান উপদেষ্টাসহ ১৫ সদস্যের একটি উপদেষ্টা পরিষদ করারও সুপারিশ রয়েছে।

সংবিধান সংস্কার কমিশন যেসব সুপারিশ করেছে সেগুলো বাস্তবায়নে প্রতিবেদনে তিনটি বিকল্প প্রস্তাব করেছেন। সেগুলো হলো গণপরিষদ, গণভোট কিংবা কী কী সংস্কার হবে তা রাজনৈতিক ঐকমত্যের মাধ্যমে চূড়ান্ত করে পরবর্তী নির্বাচিত সংসদে সংবিধান সংশোধন করা। কমিশনপ্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, এই তিনটির মধ্যে কোন পথ বেছে নেওয়া হবে, তা ঠিক করবে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো। কমিশন সুপারিশে তিনটি বিকল্প প্রস্তাব করেছে মাত্র। প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে ঐকমত্যের মাধ্যমে তৈরি হবে অভ্যুত্থান সনদ। এর ভিত্তিতে হবে পরবর্তী নির্বাচন।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ও জাতীয় ঐকমত্য গঠন মিশনের সহসভাপতির অধ্যাপক আলী রিয়াজ গত সোমবার কালবেলাকে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্স অনুযায়ী এই অন্তর্বর্তী সরকার একটা বৈধ সরকার। বর্তমানে এই সরকারে যারা দায়িত্ব পালন করছেন আপিল বিভাগের রায়ে, তাদের আশু কোন পরিবর্তন করবেন এমন কোনো কারণ দেখি না। ফলে নির্বাচন এই সরকারের অধীনেই হবে বলে আশা করি। তবে এর পাশপাশি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে রিভিউ আবেদনের রায়ে দেখতে পাবো আদালত কিভাবে বলছে। আসলে আদালত যেভাবে বলবে, সেভাবেও নির্বাচনটা হতে পারে। আপিল বিভাগের আগে আসলে কিছুই আগাম বলা সঠিক হবে না। তবে বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে, দেশে একটি বিদ্যমান সংবিধান আছে। সেই সংবিধানের অধীনে একটি অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব পালন করছে। তাদের দায়িত্বগুলোর মধ্যে তারা একটি নির্বাচন করবেন। নির্বাচন করার জন্য তারা একটি সময়সীমাও নির্ধারণ করেছেন।’