![Image description](https://content.bdtoday.net/files/img/202502/27825596a4f0fe80feacc139eb665dcb.jpg)
অর্থনৈতিক শক্ত ভীত প্রতিটি রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য। এ জন্য প্রয়োজন দেশি- বিদেশি নতুন নতুন বিনিয়োগ। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ভারত শত্রুতা করলেও ড. মুহাম্মদ ইউনূস আন্তর্জাতিক মহলে সাড়া ফেলেছেন। জাতিসংঘের অধিবেশনে তার প্রকাশ ঘটেছে। দাতাদেশ, সংস্থাসহ সবাই ড. ইউনূসের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ‘বন্ধুত্ব’ ‘সহায়তা’ আর ‘বিনিয়োগ’ এক জিনিস নয়। অর্থনীতির ভীত মজবুতে দেশে নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি, বিনিয়োগ অপরিহার্য। অথচ বিনিয়োগে খড়া চলছে। দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের আগে দেখতে চায় রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, বিনিয়োগের পর লাভসহ মুনাফা তুলে নেয়ার নিশ্চয়তা। অস্থায়ী, অন্তর্বর্তী ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার সে নিশ্চয়তা দিতে পারে না ব্যবসায়ীদের। সে জন্যই প্রয়োজন নির্বাচিত সরকার। এ বাস্তবতা বুঝেই নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যেই ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংস্কারের পাশাপাশি নির্বাচনের পথে হাঁটতে শুরু করেছেন। নির্বাচনের আকাশে ষড়যন্ত্রের ‘কালোমেঘ’ সরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। কিছু সংস্কার করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের ইঙ্গিত দেয়ায় সারাদেশে নির্বাচনের ঢেউ উঠে গেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও প্রখ্যাত দার্শনিক প্রফেসর ড. সলিমুল্লাহ খান ইনকিলাবকে বলেছেন, ‘হাসিনা পালানোর পর ’৭২-এর সংবিধান কার্যত বাতিল হয়ে গেছে। নতুন সংবিধানের প্রয়োজনেও জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়া দরকার।
৫ আগস্ট পালানোর আগে শেখ হাসিনা প্রতিটি সেক্টরের মতোই দেশের অর্থনীতির মেরুদ- ভেঙে দিয়ে গেছেন। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের মাধ্যমে ব্যাংকিং সেক্টরকে বিপন্ন করেছে। কয়েকটি ব্যাংকের এখন পঙ্গুদশা। অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তায় প্রবাসীরা রেমিট্যান্সের ¯্রােত বাড়ালেও বিদেশি ঋণ-সুদ পরিশোধে সরকারকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এজন্য আর্থিক সেক্টরে তেমন ‘সুখবর নেই’। সরকার অস্থায়ী (অন্তর্বর্তী) হওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগ করার সাহস পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় হিন্দুত্ববাদী ভারতের চক্রে পড়ে কেউ কেউ সংস্কারের নামে অন্তর্বর্তী সরকারকে দীর্ঘমেয়াদি করার চেষ্টা করলেও অর্থনৈতিকভাবে দেশকে স্বাবলম্বী করতে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর দাবি জোরালো হচ্ছে। এ দাবিতে নেটিজেনরা সোশ্যাল মিডিয়া উত্তাল করে তুলেছেন। প্রভাবশালী দেশগুলোও চায় নির্বাচন দ্রুত হোক। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশ নিয়ে হিন্দুত্ববাদী ভারত যে চক্রান্ত করছে তাতে সংস্কারের নামে অন্তর্বর্তী সরকার দীর্ঘমেয়াদে থাকলে ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হতে পারে। দিল্লির দাদারা এবং শেখ হাসিনা পাচার করা টাকা ব্যয়ে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সারাবিশ্বে জোরালো ক্যাম্পেইন করছে। নোবেল পুরস্কার পাওয়া ক্ষুদ্রঋণের জনক ড. ইউনূস ভারতীয় ষড়যন্ত্র ধরে ফেলেছেন। নির্বাচিত সরকার ছাড়া বিনিয়োগকারীদের নতুন নতুন বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা যাবে না বুঝতে পেরেছেন তিনি। ফলে তিনি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নিরপেক্ষ-গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের বার্তা দিয়েছেন। আবার দেশের সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবিতে সারাদেশে কর্মসূচি পালন করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহিদ উর রহমান বলেন, যতই সংস্কার করি না কেন নির্বাচনের পর রাজনৈতিক দলগুলো না চাইলে সেটা থাকবে না। ওয়ান- ইলেভেনের সরকার ১৪০টি সংস্কার করেছিল; কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে ৪০টি বাস্তবায়ন করলেও ১০০টি প্রস্তাব ফেলে দিয়েছে। নির্বাচন করতে হবে। তবে তার আগে বিএনপিসহ সব দলকে নিয়ে আলোচনা করতে হবে নির্বাচনের পর ক্ষমতায় গিয়ে তারা যেন সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন করেন।
গত ১২ জানুয়ারি নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হ্যাকন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশে আগামীতে যে সাধারণ নির্বাচন হবে, সেটিকে ইতিহাসের সেরা এবং ঐতিহাসিক করার পরিকল্পনা করছি, যেন এ নির্বাচন দেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি ঐতিহাসিক দলিল হয়ে থাকে’। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের পর জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেছেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভালো নির্বাচন’। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১৮টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও তাদের প্রতিনিধিরা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও ইউএনডিপির প্রতিনিধি এমন বক্তব্যে পরিষ্কার কোনো ধরনের নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।
গতকালও অস্ট্রেলিয়া আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবি করেছেন। এর আগে গত এক যুগ ধরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা দিল্লির নীলনকশায় নির্বাচনের নামে নাটক করেছে। এমনকি ২০০৮ সালের নির্বাচনে জনগণ ভোট দিলেও দিল্লির এজেন্ডা বাস্তবায়নে গোয়েন্দাদের তৈরি ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছিল। ভারতের ষড়যন্ত্র এবং হাসিনার অলিগার্করা প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে থাকায় নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের অনেকেই ভারতীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নে ‘আগে সংস্কার পরে নির্বাচন’ স্লোগান তুলে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন দেখছিলেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বসেরা ব্যক্তিত্ব ও সুনাম ধরে রাখতে দেশে-বিদেশে ইতিহাস হয়ে থাকতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ‘টাইমফ্রেম’ করে দিতে যাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন আগামী জুলাই মাসের মধ্যে নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। গতকালও নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন, তারা ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে নির্বাচনী রোডম্যাপ করবেন। ফলে সারাদেশে শুরু হয়ে গেছে নির্বাচনী ঢেউ।
হাসিনার পালানোর পর রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের কার্যত ‘সাংগঠনিক মৃত্যু’ ঘটেছে। বিদেশে পাচার করা টাকা খরচ করে হাসিনা হিন্দুত্ববাদী ভারতের সহায়তায় নানাভাবে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী লীগের পতনের পর জনগণের ভোটে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার মতো একমাত্র দল বিএনপি। ১০ ফেব্রুয়ারি এবি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, ‘এ মুহর্তে নির্বাচন হলে বিএনপি ছাড়া বিজয়ী হওয়ার মতো দল নেই। তবে বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশ আসন নিয়ে ক্ষমতায় এলে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে’।
বিএনপি যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সে জন্য দিল্লির নীলনকশা বাস্তবায়নে চতুর্মুখী শক্তি কাজ করছে। হিন্দুত্ববাদী ভারত চায় সংস্কারের নামে অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দীর্ঘায়িত করে বিধ্বস্ত আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করে নির্বাচনের মাঠে নামাতে। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে তথাকথিত প্রগতিশীলতার চেনতাধারী কিছু উপদেষ্টা চায় সংস্কারের নামে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে। নিষিদ্ধতা থেকে বের হয়ে এসে দিশাহীন জামায়াতসহ কিছু দল ‘মুই কি হনুরে’ মানসিকতায় দিল্লির ফাঁদে পা দিয়ে বিএনপিকে ঠেকাতে সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। হাসিনা পালানোর পর হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ‘আফসোস লীগ’ নামের কিছু সুশীল সংস্কার, মানবাধিকার, আইনের শাসন ইত্যাদি ধুয়া তুলে ‘সংস্কার’ না করে নির্বাচন হলে দেশ ‘রসতলে’ যাবে আওয়াজ তুলছে। কিন্তু নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূস বুঝে গেছেন, আন্তর্জাতিক মহল যতই তার পাশে থাকুক; নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় না এলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে না। তাই তিনি প্রথমে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে যে কথা বলেছেন, ‘নির্বাচনের ট্রেন লাইনে উঠেছে, এ ট্রেন থাকবে না’ সেটাই ধরে রেখেছেন। এবি পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, সংস্কারের রূপরেখায় নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে। সংস্কারের সঙ্গে নির্বাচনের বিরোধ দেখছি না। ড. ইউনূসকে বলছি, ঐকমত্যের ভিক্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আলাপ-আলোচনা-তর্ক-বিতর্কের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের পথে এগিয়ে যেতে হবে।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। এ সময় বিএনপি থেকে ডিসেম্বরে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে কিছু লিখিত প্রস্তাব দেয়া হয়। ওই সব প্রস্তাবে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর পূর্ণ আস্থা জানালেও বলা হয় দেশে এখন যে বিশৃঙ্খলা ঘটছে সে দায় সরকার এড়াতে পারে না। আলোচনায় বিএনপি নেতাদের সাথে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকে ডিসেম্বরেই নির্বাচনের বিষয়ে একমত হওয়ার বার্তা দেন। ওই বৈঠকের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেছেন। তবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ব্রিফিংয়ে বলেছেন, বিএনপির পক্ষে বলা হয়েছে যেন তাড়াতাড়ি নির্বাচন হয়।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচিসহ (ইউএনডিপি) ১৮টি উন্নয়ন সহযোগী দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসকে ধরেই জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা গত ১৬ ডিসেম্বরের বক্তব্যে বলেছিলেন, যদি অল্প পরিমাণে সংস্কারসহ নির্বাচন করতে হয়, সেখানে যদি রাজনৈতিক মতৈক্য গিয়ে দাঁড়ায়, তাহলে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ ডিসেম্বরে নির্বাচন; আর যদি আরেকটু সংস্কার করার সুযোগ দেয়া হয় তাহলে ২০২৬ সালের জুন নাগাদ নির্বাচন করা সম্ভব।’ আমরা ডিসেম্বরকে ধরে নিয়েই আমাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করছি।
জানতে চাইলে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও প্রখ্যাত দার্শনিক প্রফেসর ড. সলিমুল্লাহ খান ইনকিলাবকে বলেন, কিসের ভিত্তিতে নির্বাচন হবে সে ব্যাপারে ফ্রেমওয়ার্ক করা প্রয়োজন। বহুদিন ভোট দিতে না পারায় মানুষ ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। নির্বাচনের আয়োজনের আগে আগে ঠিক করতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদ প্রথম কি কাজ করবে। শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে ’৭২-এর সংবিধান কার্যত বাতিল হয়ে গেছে। নির্বাচনের মাধ্যমে যারা জয়ী হবেন তাদের প্রথম কাজ হচ্ছে সংবিধান রচনা করা। সংসদ এক কক্ষবিশিষ্ট হবে নাকি দুই কক্ষবিশিষ্ট হবে তা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সংসদে ঠিক করবেন। অন্তর্বর্তী সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকার কোনোটাই ওই সংবিধানে নেই। সরকারপ্রধান বলেছেন, ১৭ বছর বয়স হলেই ভোটার করা হবে সেটা কিসের ভিত্তিতে বলছেন? কাজেই সংসদ নেই, সংবিধান কার্যত বাতিল অবস্থায়। এখন নতুন নির্বাচনের দায়িত্ব হচ্ছে সংবিধান রচনা করা। নির্বাচনের পর সংসদে প্রথমত, সংবিধান করতে হবে, দ্বিতীয়ত, সরকার পরিচালনার জন্য সরকার গঠন করতে হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদে সংবিধান রচনার পর দ্বিতীয়বার সরকার গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচন করা যেতে পারে; আবার আগের নির্বাচিতদের নিয়ে সরকার গঠন করা যায়। কি করবে সেটা তাদের বিষয়। তবে সংবিধান রচনার জন্যই নির্বাচন হওয়া দরকার।
নির্বাচন ইস্যুতে সংবিধান সংশোধন কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মঈন ফিরোজী বলেন, ফ্যাসিজম না চাইলে নির্বাচনের আগে কিছু সংস্কার করা প্রয়োজন। রাজনৈতিক দলগুলো সেটা চাচ্ছে। সংস্কারের জন্য নির্বাচন পেছানো প্রয়োজন নেই। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে কমিটমেন্ট নিতে হবে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গেলে তারা সংস্কার করবেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাদের সঙ্গে চা-চক্রের আয়োজন করেছেন। আজ বুধবার সে চা-চক্র অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, সামনে নির্বাচন। চাইলেই সব দলকে ঐক্যবদ্ধ করা যাবে না। ছাত্র সংগঠনগুলো নতুন দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। আমি বিএনপি ও ওই ছাত্রনেতাদের চায়ের দাওয়াত দিয়েছি। তিনি বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে যতটা সংস্কার দরকার সেটুকু করেই সরকারের উচিত নির্বাচন আয়োজনে মনোনিবেশ করা। নির্বাচনের সময় ঠিক করার পর সরকারের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত একটি ভালো ভোটার তালিকা করে সুষ্ঠু নির্বাচন দেয়া, যাতে মানুষ নির্বিঘেœ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে।