Image description

প্রকৃত নাম শেফালী বেগম। কিন্তু পরিচয় দিতেন রোকসানা নামে। বাসায় বাসায় করতেন গৃহপরিচারিকার কাজ। কিন্তু আদতে তিনি ভিন্ন এক মানুষ। টঙ্গিতে তার রয়েছে শত কোটি টাকার স্বপ্নবিলাস নামের একটি সমিতি। বিলাসী জীবন যাপন করেন তিনি। তাহলে বাসায় বাসায় বুয়ার কাজ কেন করেন এই শেফালী? সেই রহস্যই উদঘাটন করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।

গত জানুয়ারি মাসের ঘটনা। রাজধানীর ধানমন্ডির একটি বাসায় বুয়ার কাজ নেন শেফালী। সেখানে তিনি নিজেকে পরিচয় দেন রোকসানা হিসেবে। এই নামেই একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও জমা দেন ওই বাসায়। কিছুদিন কাজ করেন। তারপরই ঘটে অঘটন।

 

গত ১৯ জানুয়ারি যথারীতি কাজে যান রোকসানা। এরপর সুযোগ বুঝে বাসিন্দার খাবারে মিশিয়ে দেন চেতনানাশক। এরপর বাসার স্বর্ণালংকার, টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান রোকসানা। চেতনা ফেরার পর ঘটনায় আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে যান বাসিন্দারা। রোকসানাকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে তারা ছুটে যান ধানমন্ডি থানায়।

সেখানে একটি মামলা দায়ের করা হয়। তদন্তে নামে পুলিশ। বেরিয়ে আসে রোকসানার থলের বিড়াল।

প্রথমেই সংগ্রহ করা হয় ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ। সেগুলো বিশ্লেষণ করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে শনাক্ত করা হয় আসামিকে। রোকসানার আসল নাম শেফালী বেগম। কিন্তু রোকসানা নামে একটি আইডির ফটোকপি করে সেটি নিজের নামে চালাতেন। বিভিন্ন বাসায় কাজের সময় নকল পরিচয়পত্রটি দেখাতেন।

শনাক্ত হওয়ার পর শেফালীতে ধরতে শুরু হয় অভিযান। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ফিরোজ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঢাকা ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে শেফালীকে।

এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসে চমকপ্রদ সব তথ্য। শেফালী জানান, বুয়া সেজে তিনি বিভিন্ন বাসায় কাজ নিলেও তার আসল লক্ষ্য ছিল চুরি করা। রাজধানীর অভিজাত বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই এই কাজ চালিয়ে আসছিলেন তিনি। আর নিপুণ চৌর্যবৃত্তির দক্ষতায় তিনি বনে গেছেন কোটিপতি। টঙ্গিতে দামি ফ্ল্যাটে তার বসবাস। গলায় পড়েন মুক্তোর মালা।

ডিএমপির রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন,শেফালীকে গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা, একটি মুক্তার হার, নয়টি মোবাইল ফোন, চারটি দামি ভ্যানিটি ব্যাগ। এছাড়া চেতনানাশক ট্যাবলেটও উদ্ধার করা হয়েছে ওই নারীর কাছ থেকে।