Image description

কুমিল্লার মুরাদনগরে সম্পত্তির নিয়ে বিরোধের জের ধরে হোসনা আক্তার (৩৫) নামের এক নারীকে টেঁটাবিদ্ধ করে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। ওই নারীর আপন চাচা মজিবুর রহমানের এমন হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

এ সময় হোসনা আক্তারের বোনের মেয়ে আফসানা আক্তার লিজাও টেঁটাবিদ্ধ হন। হোসনা আক্তার মজিবুর রহমানের ভাই লিল মিয়ার মেয়ে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদর ইউনিয়নের হীরারকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার রাতেই হোসনা আক্তারের বোন আছমা বেগম বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছেন বলে নিশ্চিত করেন মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুর রহমান।

 

স্থানীয় ও পারিবার সূত্রে জানা যায়, গুরুতর আহত হোসনা আক্তারের বাবা লিল মিয়া গত চার বছর আগে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পূর্বে লিল মিয়া তার স্ত্রী জামেনা বেগমের নামে বাড়ির জায়গা দলিল করে দেন। লিল মিয়ার মৃত্যুর পর ভাই মুজিব মিয়া বাড়িটি দখল করার জন্য বিভিন্ন সময় জামেনা বেগমের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করে আসছেন। ঘটনার দিন জামেনা বেগম নিজের বাড়ির জায়গায় লাকড়ি শুকাতে দিলে এটি তার জায়গা নয় বলে মজিবুর রহমান, তার স্ত্রী রহিমা বেগম,  ছেলে আনিছুর রহমান, মেয়ে ডালিয়া আক্তার জামেনা বেগমকে বাধা দেন এবং গালমন্দ করতে থাকেন। এতে জামেনা বেগম প্রতিবাদ করলে মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী সন্তানরা ক্ষিপ্ত হয়ে জামেনা বেগমকে মারধর করতে থাকেন।

 

জামেনা বেগমের আর্তচিৎকার শুনে পার্শ্ববর্তী শ্বশুরবাড়ি থেকে জামেনা বেগমের মেয়ে হোসনা আক্তার ও নাতনি আফসানা আক্তার লিজা তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরও মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে মজিবুর রহমান ঘর থেকে মাছ ধরার টেঁটা এনে আফসানা আক্তার লিজাকে আক্রমণ করেন। লিজাকে বাঁচাতে গিয়ে হোসনা আক্তারের হাতে টেঁটাবিদ্ধ হয়।

 

টেঁটা হোসনা আক্তারের হাতের একপাশ দিয়ে ঢুকে অপর পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। এ সময় আফসানা আক্তার লিজার হাতেও টেঁটাবিদ্ধ হয়। এলাকাবাসী টেঁটাবিদ্ধ অবস্থায় হোসনা আক্তারকে এবং আহত লিজা ও জামেনা বেগমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে আফসানা আক্তার লিজা ও জামেনা বেগমকে চিকিৎসা দেওয়া হলেও হোসনা আক্তারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

 

আহত আফসানা আক্তার লিজা বলেন, আমার নানার মৃত্যুর পর বাড়িটি দখল করার জন্য এর আগেও মজিবুর রহমান কয়েকবার আমার নানিকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমার মা-খালারাও মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী সন্তানদের হাতে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। আজকে মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী ছেলেমেয়েরা আমার নানি ও আমাদের মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমরা এই মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী ছেলেমেয়েদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

 

মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। রাতেই দুজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।