
বর্তমানে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির বেশ কয়েকটি সূচক সন্তোষজনক অবস্থায় নেই। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে রাজস্ব আদায় পৃথিবীর অন্যতম সর্বনিম্ন। এছাড়া আছে ব্যাংক খাতের উচ্চ খেলাপি ঋণ। বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। দেশ থেকে বিভিন্নভাবে অর্থ পাচার হচ্ছে। বিনিয়োগ বাড়ছে না। এ অবস্থায় আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ রাজস্ব আয় বাড়ানো। যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এসব কথা বলেন। তার মতে, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির গতিধারা কোনদিকে যাবে, বাজেটে সে ব্যাপারে একটি দিকনির্দেশনা থাকে। ফলে আগামী বাজেটে এসব বিষয়ে দিকনির্দেশনা জরুরি। সরকারের আয়ের ক্ষেত্রে করের হার না বাড়িয়ে আওতা বাড়াতে হবে। পাশাপাশি ব্যয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বাড়ানো এবং ঘাটতি মোকাবিলায় ব্যাংক ঋণের ওপর নির্ভরতা কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মনির হোসেন।
যুগান্তর : ভিন্ন বাস্তবতায় এবারের বাজেট। রাজনৈতিক সরকার নেই। বাজেট ঘোষণা হচ্ছে, সংসদের বাইরে। রাষ্ট্র সংস্কার আলোচনা চলছে। সবকিছু মিলে পুরো পরিস্থিতি আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করছেন?
মির্জ্জা আজিজ : দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির গতিধারা কোনদিকে যাবে, বাজেটে সে ব্যাপারে একটি দিকনির্দেশনা থাকে। সে বিবেচনায় বাজেটে অনেক কিছুই আলোচনা করা যেতে পারে। তবে অর্থনৈতিক বিষয়গুলোতে আমি জোর দেব। সহজ করে বললে বাজেট হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট সময়ের আয়-ব্যয়ের খতিয়ান। সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে প্রতিটি দেশই চায় কীভাবে সর্বাধিক জনকল্যাণ নিশ্চিত করা যায়। কিন্তু বাজেট প্রণয়নের সময় বিভিন্ন রকম চাপ থাকে। অনেক সময় সরকার সে চাপের সামনে নতি স্বীকার করে। এতে বাজেট থেকে যেভাবে কাঙ্ক্ষিত সুফল পাওয়ার কথা, তা অনেক সময়ই পাওয়া যায় না। বিপরীতে বিভিন্ন খাতে সরকারের ব্যয় বাড়ানোর দরকার আছে। সেক্ষেত্রে ঋণ না নিয়ে কীভাবে রাজস্ব আহরণের মাধ্যমে বাড়তি ব্যয় মেটানো যায়, সেটি সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে রাজস্ব বাড়াতে করের হার না বাড়িয়ে আওতা বাড়াতে হবে। প্রথমত, দেশে এখনো করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) আছে, কিন্তু কর দেন না এ সংখ্যাটা বিশাল। এদের কাছ থেকে কর আদায়ের ব্যবস্থা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, ভ্যাটের ক্ষেত্রেও আদায়ের ঘাটতি আছে। অনেক পণ্য কিনলে ভ্যাটের রসিদ দেওয়া হয় না। এই রসিদ প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। তৃতীয়ত, বর্তমানে দেশের তৃণমূল পর্যায়ের দোকানপাটেও ভালো বেচাকেনা হয়। তারা ভ্যাটের আওতায় আসার যোগ্য। তাই তাদের ভ্যাটের আওতায় আনতে হবে। এভাবেই করের পরিধি বাড়াতে হবে।
যুগান্তর : এবারের বাজেটে সুনির্দিষ্ট কী কী চ্যালেঞ্জ থাকছে?
মির্জ্জা আজিজ : এবারের বাজেটে অন্যতম চ্যালেঞ্জ রাজস্ব আদায়। দেশে জিডিপির তুলনায় কর আদায়ের যে হার তা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। পৃথিবীর যেসব দেশের কর-জিডিপি অনুপাত সবচেয়ে কম, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কর আদায়ের হার বাড়ছে না, বরং আরও কমছে। এটি খুবই উদ্বেগজনক। রাজস্ব খাতে ব্যর্থতার কারণে বাজেটে যেসব খাতে বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন, সেখানে ব্যয় বাড়ানো যাচ্ছে না। দেশে বিদ্যমান আর্থসামাজিক অবস্থায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন। কিন্তু আর্থিক স্বল্পতায় তা বাড়ছে না।
যুগান্তর : ব্যয় ও ঘাটতি মোকাবিলায় আপনার পরামর্শ কী?
মির্জ্জা আজিজ : ব্যয়ের ক্ষেত্রেও অনেক সমস্যা আছে। প্রায় দেখা যায়, উন্নয়ন বাজেটের বিরাট অংশ সময়মতো ব্যয় করা হয় না। বছরের ৭-৮ মাসে বরাদ্দকৃত অর্থের মাত্র ৪০ শতাংশ ব্যয় হয়। আর শেষের দিকে তাড়াহুড়া করে এটাকে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশে নেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রে কাজ ছাড়াই বিল দেওয়া হয়। ফলে সরকারের উন্নয়নের ব্যয় থেকে যে সুফল আশা করি, তা পাওয়া যায় না। অপরদিকে তথাকথিত উন্নয়ন খাতের বাইরে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয় বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আছে। যেমন স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় বাড়ানো দরকার। কিন্তু এর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, স্বাস্থ্য খাতে প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ অনেক কম। এরপর যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, সেটিও ব্যয় হয় না। ফলে সরকারি অর্থ ব্যবহারের জন্য যেসব প্রতিষ্ঠানের ওপর দায়িত্ব আছে, ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের জবাবহিদিতার আওতায় আনতে হবে। এর ফলে বরাদ্দকৃত অর্থের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হবে। ঘাটতি মোকাবিলায় ব্যাংকের ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। কারণ সরকারি বাজেট বাস্তবায়নে ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবাহ কমে যাবে। এতে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এর ফলে উৎপাদন ও কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
যুগান্তর : বর্তমানে দেশের সামষ্টিক পরিস্থিতি কীভাবে মূল্যায়ন করছেন?
মির্জ্জা আজিজ : সামষ্টিক অর্থনীতির কিছু সূচক, বর্তমানে সন্তোষজনক পরিস্থিতিতে নেই। রাজস্ব পরিস্থিতি আগেই বলেছি। এরপর রয়েছে ব্যাংক খাতের উচ্চ খেলাপি ঋণ। বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। বর্তমানে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে। এ কারণে মানুষ সঞ্চয় করতে পারছে না। নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্বের অনেক দেশে মূল্যস্ফীতি কমছে। কারণ উন্নত দেশগুলো তাদের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যবস্থা নিচ্ছে। এছাড়া দেশ থেকে বিভিন্নভাবে অর্থ পাচার হচ্ছে। বিনিয়োগ বাড়ছে না। রপ্তানি আয় কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের নিচে। অনেক দিন থেকে প্রবৃদ্ধি ৭-৮ শতাংশে ছিল। বর্তমানে এই হার অনেক কমে গেছে। আরেকটি বিষয় হলো আমাদের মুদ্রার বিনিময় হার বেশি। অর্থাৎ ডলারের বিপরীতে ক্রমেই দুর্বল হচ্ছে টাকা। তবে ডলারের দাম মূল্যস্ফীতি আমাদের প্রভাবিত করে। কাঁচামাল, মধ্যবর্তীপণ্য, মূলধনী যন্ত্রপাতি এবং কিছু খাদ্যও আমরা আমদানি করে থাকি। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে আমরা সম্পৃক্ত। তবে অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ কাম্য নয়। মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের যাতে ক্ষতি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। অন্যদিকে দেশে বৈষম্য বাড়ছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো আঞ্চলিক বৈষম্য। সেক্ষেত্রে সামাজিক নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। তবে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে যেসব বরাদ্দ দেওয়া হয়, তার সুবিধা প্রকৃত লোকজন পায় না। তাই এখানে দুর্নীতি বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।
যুগান্তর : অর্থনীতির অবস্থা তেমন ভালো নয়। এ অবস্থায় রাজস্ব আদায়ে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত?
মির্জ্জা আজিজ : রাজস্ব বাড়ানোর জন্য অবশ্যই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এজন্য বর্তমান করদাতাদের ওপর চাপ না বাড়িয়ে নতুন করদাতা শনাক্ত করা জরুরি। তাদের কর নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে হবে। অর্থাৎ করের হার না বাড়িয়ে আওতা বাড়াতে হবে। অন্যদিকে কর ফাঁকি রয়েছে। যেমন ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে অনেক দোকানদার রসিদ দেয় না। তারা টাকা আদায় করলেও সরকারের কোষাগারে জমা দেয় না। আয়করের ক্ষেত্রে যাদের টিআইএন (করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর) যাদের আছে, আয়কর রিটার্ন জমা দেয় তার অর্ধেক। বাকি অর্ধেককে কেন পাওয়া যাচ্ছে না, তা আমার কাছে বোধগম্য নয়। ফলে আমাদের করদাতা বাড়ানো জরুরি। তবে এক্ষেত্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের দক্ষতার অভাব, না তারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সেটি ভেবে দেখা দরকার।
যুগান্তর : অনেকেই বলছেন, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় আছে। আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করছেন?
মির্জ্জা আজিজ : আমাদের বহির্খাতে সমস্যা রয়েছে। যে কারণে রিজার্ভ কমছে। রিজার্ভ বাড়ানোর জন্য আমাদের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক নয়। ফলে রপ্তানি আরও বাড়াতে হবে। এর আগে কানাডা, কোরিয়া ও জাপানে আমাদের নতুন বাজার সৃষ্টি হয়েছিল। সেসব দেশে রপ্তানি বাড়াতে চেষ্টা করতে হবে। এক্ষেত্রে পণ্যের বহুমুখীকরণ জরুরি। কারণ এখনো আমাদের রপ্তানি আয়ের ৮০ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। ফলে এখানে নতুন নতুন পণ্য কীভাবে যোগ করা যায়, সেজন্য চেষ্টা করতে হবে। আমাদের রিজার্ভ বৃদ্ধির আরেকটি খাত হলো রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়)। এই রেমিট্যান্সের অবস্থা ভালো নয়। যদিও জনশক্তি রপ্তানি অনেক বাড়ছে, কিন্তু রেমিট্যান্স বাড়ছে না। বর্তমানে রেমিট্যান্স পাঠালে প্রণোদনা দেওয়া হয়। এটিও তেমন কাজ করছে না। এই রেমিট্যান্স বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে কীভাবে সহজে রেমিট্যান্স পাঠানো যায়, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে। এক্ষেত্রে বিদেশে আমাদের দূতাবাসগুলো কীভাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া দরকার।
যুগান্তর : এবার সংস্কারের উদ্যোগটি সামনে আসছে। ইতোমধ্যে এনবিআর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, আপনি কীভাবে দেখছেন?
মির্জ্জা আজিজ : আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শে সাম্প্রতিক সময়ে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যা হলো রাজস্ব নীতি ও প্রশাসন আলাদা করেছে। পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে এই পদ্ধতি আছে। কিন্তু এটি বাংলাদেশের জন্য কতটা উপযোগী হবে, তা নিয়ে আরও আলোচনা হওয়া উচিত। অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনরা এ বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরবে। সেই মতামতের আলোকে সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। তবে আর্থিক খাতে নিঃসন্দেহে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ অর্থনীতিতে বড় সমস্যা হলো খেলাপি ঋণ। এটি ক্রমেই বাড়ছে।
যুগান্তর : গত কয়েক বছরে আর্থিক খাতে সংকটের বিষয়টি সামনে আসছে। এর মধ্যে ব্যাংক খাত ও শেয়ারবাজারের অবস্থা ভালো নয়। বর্তমানে ব্যাংক মার্জারের কথা বলা হচ্ছে। এটি দেশের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদে কী ধরনের বাস্তবতা তৈরি করবে?
মির্জ্জা আজিজ : এটি অবশ্যই বড় সমস্যা। দেশের ব্যাংক খাতে সুশাসনের অভাব। ফলে খেলাপি ঋণ বেপরোয়াভাবে বেড়েছে। ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে পারস্পারিক আঁতাত ছিল। এর মানে হলো পারস্পরিক যোগাযোগের মাধ্যমে এক ব্যাংকের মালিকপক্ষ অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে। তারাও আবার নিজেদের ব্যাংক থেকে ওই মালিকদের ঋণ দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত কোনো পক্ষই এই ঋণ পরিশোধ করেনি। রাজনৈতিক নেতা, ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ঋণ গ্রহীতার পারস্পরিক যোগসাজশে এসব ঋণ দেওয়া হয়েছে। এসব কারণে ব্যাংকিং খাতে বড় সংকট তৈরি হয়েছে। অপরদিকে দেশের পুঁজিবাজার শিল্পায়নের ক্ষেত্রে মূলধনের জোগান দেওয়ার বড় মাধ্যম হয়ে ওঠেনি। এই বাজারের প্রতি বিনিয়োগকারীর আস্থার ঘাটতি আছে। এক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করা জরুরি।
যুগান্তর : আরেকটি বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা আছে। তা হলো দেশ থেকে বেপরোয়াভাবে অর্থ পাচার হয়েছে। পাচার বন্ধ ও অর্থ উদ্ধারে করণীয় কী?
মির্জ্জা আজিজ : দেশ থেকে নানাভাবে অর্থ পাচার হয়েছে। এর মধ্যে আমদানিতে মূল্য বেশি দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং) এবং রপ্তানিতে পণ্যমূল্য কম দেখানো (আন্ডার ইনভয়েসিং) অন্যতম। বৈশ্বিক সংস্থা জিএফআইর (গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি) রিপোর্টে বাংলাদেশ থেকে বাণিজ্যের আড়ালে টাকা পাচারের কথা বলা হয়েছে। এগুলো চিহ্নিত করা খুব বেশি কঠিন কাজ নয়। কারণ কোন পণ্যের কী দাম তা অনলাইনের মাধ্যমে জানা যায়। ফলে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে যে ঘোষণা দেওয়া হয়, তা বাস্তবসম্মত কিনা চিহ্নিত করা যায়। তবে একবার বিদেশে টাকা গেলে তা আদায় করা কঠিন। সবকিছু মিলে বাজেটে এ ব্যাপারে একটি দিকনির্দেশনা থাকা উচিত।