হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি ওরফে আহমদ আল-শারা সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েই দেশটির সংবিধান ও পার্লামেন্ট বাতিল ঘোষণা করেছেন। সিরিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা সানার বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এই তথ্য জানিয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট শারার নির্দেশক্রমে বিদ্রোহী সামরিক কমান্ডার হাসান আবদুল গনি সিরিয়ার ২০১২ সালের সংবিধান এবং পূর্ববর্তী পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। পাশাপাশি, দেশটির সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
হাসান আবদুল গনি জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে শারা একটি অন্তর্বর্তী আইনসভা পরিষদ গঠন করবেন। এটি নতুন সংবিধান অনুমোদিত হওয়া পর্যন্ত শাসনকার্যে সহায়তা করবে। পাশাপাশি, ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধে আসাদবিরোধী সকল বিদ্রোহী গোষ্ঠী বিলুপ্ত করা হবে এবং তাদের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে একীভূত করা হবে।
হাসান আব্দুল গনি গত বুধবার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে হায়াত তাহরির আল-শাম ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর শীর্ষ কমান্ডারদের নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান এই ঘোষণা দেন। এই অনুষ্ঠানটির নাম ছিল ‘সিরিয়ার বিপ্লবের বিজয় ঘোষণার সম্মেলন।’
অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট শারা বলেন, ‘সিরিয়ার নতুন নেতৃত্বের কাঁধে গুরুদায়িত্ব এবং বিশাল দায়িত্ববোধ অর্পিত হয়েছে। তাদের প্রথম কাজ হলো একটি বৈধ ও আইনি পদ্ধতিতে ক্ষমতার শূন্যতা পূরণ করা। দ্বিতীয়ত, সংক্রমণকালীন ন্যায়বিচারের মাধ্যমে প্রতিশোধমূলক হামলা রোধ করে নাগরিক শান্তি বজায় রাখা।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন করতে হবে। বিশেষ করে সামরিক বাহিনী, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো, পুলিশ ও অর্থনৈতিক অবকাঠামোকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে।’
এর আগে এক সাক্ষাৎকারে শারা বলেছিলেন, নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চার বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সে সময় তিনি জানান, নির্বাচনের আগে একটি হালনাগাদ আদমশুমারি প্রয়োজন এবং এটি সময়সাপেক্ষ। এ ছাড়া, নতুন সংবিধান রচনা করতেই তিন বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। একই সাক্ষাৎকারে শারা আরও বলেন, তিনি একটি জাতীয় সংলাপ আয়োজনের পরিকল্পনা করছেন। এই সংলাপে সিরিয়ার সমাজের ‘সব উপাদানকে’ একত্র করা হবে।