উচ্চ মাত্রার রাসায়নিকের উপস্থিতি পাওয়ায় এবার যুক্তরাজ্যের পানীয় পণ্য বাজার থেকে কোকা-কোলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর আগে ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশ থেকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।কোকা-কোলার কোম্পানিটি জানিয়েছে, উচ্চ মাত্রার ক্লোরেট নামক রাসায়নিক শনাক্ত করার পর যুক্তরাজ্যে বেশ কয়েকটি কোকা-কোলা পণ্য বাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে।ক্যাফে ও রেস্তোরাঁয় পাঠানো কোকা-কোলা অরিজিনাল টেস্ট, কোকা-কোলা জিরো সুগার, ডায়েট কোক এবং স্প্রাইট জিরো-এর ক্যান প্রত্যাহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, যুক্তরাজ্যের সুপারমার্কেটে পাঠানো ৬x২৫০ মিলিলিটারের অ্যাপলটাইজার মাল্টিপ্যাকও প্রত্যাহারের অন্তর্ভুক্ত।গত সোমবার ইউরোপ জুড়ে কোকা-কোলা পণ্য প্রত্যাহারের ঘোষণার পর এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
কোকা-কোলা ইউরোপ্যাসিফিক পার্টনারস, যারা কোম্পানির বোতলজাতকরণের দায়িত্বে রয়েছে তারা জানিয়েছে, এই রাসায়নিকের কারণে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি খুবই কম।তবে কোকা-কোলা নিশ্চিত করেছে যে যুক্তরাজ্যে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ পণ্য, যার মধ্যে সাধারণ ক্যান, কাঁচের বোতল ও প্লাস্টিক বোতল অন্তর্ভুক্ত, এই প্রত্যাহারের আওতায় পড়ে না।বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ এবং নেদারল্যান্ডসে সোমবার কোকা-কোলা পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার করা হয়। বেলজিয়ামের গেন্ট শহরের উৎপাদন কেন্দ্রে নিয়মিত পরীক্ষার সময় ক্লোরেটের উচ্চ মাত্রা শনাক্ত হয় বলে এএফপি নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।প্রাথমিকভাবে কোকা-কোলা জানায়, মাত্র পাঁচটি পণ্য ব্রিটেনে পাঠানো হয়েছিল এবং সেগুলো ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। তবে কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলে সংস্থাটি জানায়। কিন্তু বুধবার কোম্পানিটি নিশ্চিত করে যে যুক্তরাজ্যের খাদ্য মান সংস্থার সঙ্গে চলমান আলোচনার পর তারা আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যে পণ্য প্রত্যাহার শুরু করেছে।
ক্লোরেট সাধারণত ক্লোরিন-ভিত্তিক জীবাণুনাশক ব্যবহার করে পানি পরিশোধন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের সময় উৎপন্ন হতে পারে। উচ্চ মাত্রার ক্লোরেট শরীরে প্রবেশ করলে থাইরয়েডজনিত সমস্যার কারণ হতে পারে, বিশেষ করে শিশু ও নবজাতকদের জন্য এটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।এনএইচএস এবং ব্যক্তিগত পুষ্টিবিদ ক্যারন গ্রাজেট বলেন, আমাদের ভাবতে হবে, আমরা কি এমন রাসায়নিক উপাদানযুক্ত সফট ড্রিংক গ্রহণ করতে চাই, যা আতশবাজি ও জীবাণুনাশক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, যদিও তা খুবই সামান্য পরিমাণে? অতিরিক্ত ক্লোরেট গ্রহণ করলে বমি, ডায়রিয়া, রক্তের অক্সিজেন শোষণের ক্ষমতা হ্রাস এবং শরীরের অসুস্থতা সৃষ্টি হতে পারে।