Image description
 

সিরিয়ার নতুন নেতা আহমেদ আল-শারাকে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা এ তথ্য জানিয়েছে। সাত সপ্তাহ আগে তিনি বিদ্রোহী অভিযানের নেতৃত্ব দেন, যার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হন।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

এতে বলা হয়েছে, বিদ্রোহী সামরিক কমান্ডার হাসান আবদুল ঘানি সিরিয়ার ২০১২ সালের সংবিধান বাতিল এবং আসাদ সরকারের সংসদ, সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর বিলুপ্তি ঘোষণা করেছেন।

নতুন প্রেসিডেন্ট শারা জানিয়েছেন, তিনি একটি অন্তর্বর্তীকালীন আইনসভা গঠন করবেন, যা দেশের শাসন পরিচালনা করবে যতক্ষণ না একটি নতুন সংবিধান অনুমোদিত হয়।

 

তিনি আরও বলেন, আসাদবিরোধী সব বিদ্রোহী গোষ্ঠী ভেঙে ফেলা হবে এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একীভূত করা হবে।

সেনা কমান্ডারদের উদ্দেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে শারা বলেন, নতুন নেতৃত্বের সামনে রয়েছে ‘একটি বিশাল দায়িত্ব ও কঠিন চ্যালেঞ্জ’।

ডিসেম্বরে আল-আরাবিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শারা বলেছিলেন, নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চার বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, প্রথমে একটি নতুন জনগণনার (সেন্সাস) প্রয়োজন, যা সময়সাপেক্ষ হবে। এছাড়া, একটি নতুন সংবিধান রচনায় তিন বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

শারা আরও ঘোষণা করেন, তিনি ‘জাতীয় সংলাপ সম্মেলন’ আহ্বান করবেন, যেখানে সিরিয়ার সকল গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক পক্ষের প্রতিনিধিরা অংশ নেবে।

২০১১ সালে বাশার আল-আসাদ সরকার গণতন্ত্রপন্থিদের সরকার পতনের আন্দোলন কঠোরভাবে দমন করে।  যা পরে দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের রূপ নেয়। এতে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয় এবং প্রায় ১.২ কোটি সিরিয়ান তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়।

বিগত বছরগুলোতে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে আল-কায়েদার সাবেক শাখা হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ছিল সবচেয়ে প্রভাবশালী, যা জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাজ্যের মতে এখনো একটি সন্ত্রাসী সংগঠন।

৮ ডিসেম্বর, বিদ্রোহীরা মাত্র ১২ দিনের মধ্যে আসাদের সেনাবাহিনীকে পরাজিত করে রাজধানী দামেস্ক দখল করে। ওইদিনই আসাদ প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং রাশিয়ায় পালিয়ে যান।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আল-শারার নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার সিরিয়ার রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটিকে নতুন পথের দিকে এগিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ও আর্থিক সহায়তা অপরিহার্য হবে।