Image description
 

ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা বার্তায় ২০২৬ সালে ‘চীনা অলৌকিকতার নতুন অধ্যায়’ রচনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। নতুন বছরে এক নতুন অধ্যায় উন্মোচনের অঙ্গীকার করে তিনি বলেনচীনের মোট অর্থনৈতিক উৎপাদন এ বছর ১৪০ ট্রিলিয়ন ইউয়ানে পৌঁছানোর মধ্য দিয়ে উন্নয়নের নতুন মাইলফলক স্পর্শ করতে যাচ্ছে। গত পাঁচ বছরে চীনের ১৪তম পাঁচসালা পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশটির অর্থনৈতিকপ্রযুক্তিগত ও প্রতিরক্ষা শক্তি এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। শি জিনপিং প্রতিটি পরিশ্রমী নাগরিককে সালাম জানিয়ে বলেনপ্রত্যেকের কঠোর পরিশ্রম ও নিষ্ঠায় একটি সমৃদ্ধ চীন গড়ে উঠছে।

উদ্ভাবনী শক্তির ওপর গুরুত্ব দিয়ে শি জিনপিং বলেনচীনের বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত শক্তি এখন বিশ্বে অনন্য উচ্চতায়। বড় আকারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেলের দ্রুত বিকাশস্বাধীন চিপ নির্মাণে অগ্রগতি এবং থিয়ানওয়েন-২ এর যাত্রা চীনের সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। ইয়াসিয়া জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু এবং প্রথম ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ক্যাটাপল্ট-সজ্জিত বিমানবাহী রণতরী নৌবহরে যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি হিউম্যানয়েড রোবট ও ড্রোন প্রযুক্তিতেও অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তার মতেউদ্ভাবন ও সৃষ্টি নতুন ধরণের উৎপাদনশীলতাকে উৎসাহিত করে জীবনকে আরও সমৃদ্ধ করছে।

সাংস্কৃতিক অঙ্গনে চীনের অর্জনের কথা তুলে ধরে প্রেসিডেন্ট বলেনআধুনিকতার সঙ্গে ঐতিহ্যের মিশেলে চীনা সংস্কৃতি আরও উজ্জ্বল হয়েছে। ‘উখং’ ও ‘ন্যচার’ মতো চরিত্রগুলো এখন বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। দেশের অভ্যন্তরেও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। শিশুসহ পরিবারগুলো এখন প্রতি মাসে অতিরিক্ত ৩০০ ইউয়ান ভর্তুকি পাচ্ছে এবং প্রবীণদের সুরক্ষায় বড় ধরণের সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে। তুষারাবৃত মালভূমি থেকে সিনচিয়াং পর্যন্ত সব জাতিগোষ্ঠীর মানুষ ডালিমের বীজের মতো শক্তভাবে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিশ্ব পরিস্থিতিতে চীনের অবস্থান স্পষ্ট করে শি জিনপিং বলেনচীন সর্বদা ইতিহাসের সঠিক দিকে দাঁড়িয়েছে। বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থাকে আরও ন্যায্য ও সুসংহত করতে চীন ‘বৈশ্বিক ব্যবস্থাপনা প্রস্তাব’ উত্থাপন করেছে। এসসিও শীর্ষ সম্মেলন এবং হাইনান অবাধ বাণিজ্য বন্দরের বিশেষ শুল্ক কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে চীন দু’হাত বাড়িয়ে বিশ্বকে আলিঙ্গন করার নীতি বজায় রেখেছে। অশান্ত এই বিশ্বে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য চীন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে হাতে হাত রেখে কাজ করতে আগ্রহী। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় চীন নতুন করে জাতীয় স্বতন্ত্র অবদানের ঘোষণাও দিয়েছে।

হংকং ও ম্যাকাওয়ের সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার ওপর জোর দিয়ে তিনি ‘এক দেশদুই ব্যবস্থা’ নীতি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার পুনব্যক্ত করেন। তাইওয়ান প্রশ্নে শি জিনপিংয়ের অবস্থান ছিল অত্যন্ত স্পষ্ট। তিনি বলেনতাইওয়ান প্রণালির দুই তীরের মানুষের রক্তের বন্ধন পানির চেয়েও ঘন এবং মাতৃভূমির পুনর্মিলনের ঐতিহাসিক প্রবণতা কেউ ঠেকাতে পারবে না। এছাড়া চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শক্তিশালী করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন২০২৬ সাল হবে পঞ্চদশ পাঁচসালা পরিকল্পনার সূচনালগ্নযেখানে সব মানুষের সাধারণ সমৃদ্ধির জন্য নতুন সাফল্যের গাঁথা তৈরি করতে হবে।

সূত্রসিএমজি