খালেদা জিয়াকে বাংলাদেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি স্মরণ করবে তার স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় তার অবদানের জন্য। ডয়েচে ভ্যালেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান একথা বলেন। সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন, লড়াই-সংগ্রাম নিয়ে আলাপ করে বার্গম্যান।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে সর্বপ্রথম স্মরণ করা হবে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের জন্য। আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য দলের সঙ্গে স্বৈরাচার বিরোধী তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। ওই আন্দোলনে এরশাদের পতন হয় এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়। স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর প্রথম নির্বাচনে বিজয়ী হন খালেদা জিয়। বার্গম্যানের মনে, এটা ছিল বিস্ময়কর। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে জয়ী হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, তবে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে জয়ী হয় বিএনপি।
এছাড়াও শেখ হাসিনার সঙ্গে তার তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্যও তাকে স্মরণ করা হবে বলে মনে করেন এই সাংবাদিক।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং নারী অধিকার রক্ষায় খালেদা জিয়ার অবদান প্রশংসিত। তবে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে। এ বিষয়ে বার্গম্যান বলেন, দ্বিতীয় মেয়াদে খালেদা জিয়া ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। তার মতে, সেসময় দুর্নীতি বেড়ে যায়। তবে তিনি কখনই তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেসব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। খালেদা জিয়া একটি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত হন এবং আওয়ামী লীগের আমলে কারাবন্দি হন। তবে বার্গম্যানের মতে, সে মামলা ছিল খুবই দুর্বল ও অযৌক্তিক। খালেদা জিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তেমন কোনো সম্পদের খোঁজ কখনো পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘কাজেই আমি মনে করি না, দুর্নীতি সত্যিকার অর্থে খালেদা জিয়ার লিগেসির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো ইস্যু হতে পারে।’
সামনের বছরগুলোতে বিএনপিতে খালেদা জিয়া কতটা প্রভাব রাখবেন বলে মনে হয়, এমন প্রশ্নে বার্গম্যান বলেন, অসুস্থ্যতার কারণে বিএনপিতে তার প্রভাব আগেই কমেছিল। তারপরও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছিলেন। লন্ডনে থাকা তার লেলে তারেক রহমান দলে তার প্রভাব বাড়াচ্ছিলেন। তবে অসুস্থ্যতার জন্য বিএনপি কোথায় যাচ্ছে সে বিষয়ে তার তেমন ভূমিকা ছিল বলে আমি মনে করি না।
বার্গম্যানের মতে, তারেক রহমানের ওপর তার মায়ের কতটা প্রভাব পড়বে তা অনিশ্চিত। তবে বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে তার সামনে রয়েছে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।