ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বর্তমান নেতৃত্ব ও নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, সবার চোখের সামনেই ইইউ ভেঙে পড়ছে এবং দ্রুত ও গভীর পুনর্গঠন না হলে এই জোটের অস্তিত্বও বিলুপ্ত হতে পারে।
হাঙ্গেরির প্রভাবশালী দৈনিক মাগয়ার নেমজেটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অরবান বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন বর্তমানে ভাঙনের মুখে। ব্রাসেলসের সাম্রাজ্যবাদী উচ্চাকাঙ্ক্ষাই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।’
তিনি বলেন, ইইউর সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া বাস্তবতা বিবর্জিত। ব্রাসেলসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কিন্তু সেগুলো কার্যকর হয় না। প্রথমে একটি দেশ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়, এরপর দুটি, তিনটি এভাবেই একটি ইউনিয়ন ভেঙে যায় মন্তব্য করেন তিনি।
ইইউ নেতৃত্বের দুর্বলতা বোঝাতে একটি উপমা ব্যবহার করে অরবান বলেন, ‘এটা যেন এমন একজন ভারোত্তোলক, যে বারবেল তুলতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত তা ফেলে দেয়।’
ইউরোপীয় কমিশনের শিল্পনীতি নিয়েও সমালোচনা করেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সদস্য দেশগুলোর ইচ্ছার বিরুদ্ধে এমন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, যা ইউরোপীয় শিল্প, বিশেষ করে রাসায়নিক ও মোটরগাড়ি খাতকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি ২০৩৫ সাল থেকে প্রচলিত ইঞ্জিনচালিত গাড়ি উৎপাদন বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করেন। অরবানের ভাষ্য অনুযায়ী, সিদ্ধান্তটি অবাস্তব প্রমাণিত হওয়ায় পরে কমিশনকে পিছু হটতে হয়েছে।
অভিবাসন নীতির ক্ষেত্রেও ইইউর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ব্রাসেলস ধারাবাহিকভাবে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর সার্বভৌমত্ব খর্ব করছে এবং নিজেদের ক্ষমতা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছে না।
সাক্ষাৎকারের শেষাংশে ভিক্টর অরবান সতর্ক করে বলেন, ‘দ্রুত ও গভীর পুনর্গঠন ছাড়া ইইউর পতন এক চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাবে, যেখান থেকে আর ফিরে আসার সুযোগ থাকবে না।’