Image description

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ডে ট্রাম্পের ২০ দফা প্রস্তাব মেনেই গেল অক্টোবরে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। তবে ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল মুসলিম দেশগুলোর সমন্বয়ে গাজায় একটি স্ট্যাবিলাইজেনশন ফোর্স বা স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠন করা। আর এ বাহিনী গঠন নিয়ে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে জোর তৎপরতা চললেও আলোচনায় উঠে এসেছে পাকিস্তান। কারণ ট্রাম্পের চাওয়া পাকিস্তান এ বাহিনীতে সেনা পাঠাবে। তবে এ বিষয়টি নিয়ে গভীর এক সংকটে পড়েছে ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে এই কঠিন সংকটের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। কীভাবে তিনি এই পরিস্থিতি সামাল দেবেন সেটি এখন দেখার বিষয়। কারণ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ওয়াশিংটন সফরে যাচ্ছেন আসিম মুনির। সেখানে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাত করবেন। আর এতে গাজার স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হবে। আসিম মুনির ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন, যা ওয়াশিংটন ও ইসলামাবাদের মধ্যে দীর্ঘ দিনের অবিশ্বাস দূর করতে সাহায্য করছে। গত জুন মাসে তাকে হোয়াইট হাউসে লাঞ্চের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। যা ছিল এক বিরল ঘটনা।

পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্রসম্পন্ন একমাত্র মুসলিম দেশ। দেশটির সেনাবাহিনী যুদ্ধে পাকা। তারা এ পর্যন্ত তিনবার বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। গেল মে মাসেও দেশদুটি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এছাড়া দেশটির সেনাবাহিনী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্রোহ দমন করছে। পাশাপাশি তারা চরমপন্থিদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। আর এ জন্যই ট্রাম্পের চোখ এখন পাকিস্তানের দিকে। এ অবস্থার মধ্যে গত কয়েক সপ্তাহে আসিম মুনির ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, তুরস্ক, জর্ডান, মিসর ও কাতারের মতো দেশগুলোর সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেছেন বলে দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে। যার উদ্দেশ্য ছিল গাজায় স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠন নিয়ে আলোচনা।

ওয়াশিংটনভিত্তিক আটলান্টিক কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র ফেলো মাইকেল কুগেলম্যান রয়টার্সকে বলেন, গাজার স্থিতিশীলতা বাহিনীতে অবদান না রাখলে ট্রাম্প রেগে যেতে পারেন। আর পাকিস্তানের জন্য এটি কোনো ছোট বিষয় নয়, কারণ দেশটি মার্কিন বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা সাহায্য নিশ্চিত করতে ট্রাম্পের সদয় দৃষ্টিতে থাকতে চায়। কিন্তু বড় উদ্বেগ হলো, যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত পরিকল্পনার অধীনে পাকিস্তানি সেনাদের গাজায় অংশগ্রহণ পাকিস্তানের ইসলামপন্থি দলগুলোকে নতুন করে উসকে দিতে পারে। এসব দল যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বিরোধী।