ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কত সময় লাগবে সে বিষয়ে আমার নির্দিষ্ট কোনো ধারণা নেই এবং আমি কোনো ধরনের নিশ্চয়তাও দিতে পারি না। বিষয়টি বাংলাদেশের ওপর নির্ভরশীল এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহযোগিতায় এটি বাস্তবায়ন করতে হবে। সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, যত দ্রুত সম্ভব এই প্রক্রিয়া শুরু হবে। রোহিঙ্গারা আট বছর ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করছে, তাই প্রত্যাবাসনে আর দেরি করা উচিত নয়।
রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের জন্য ২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা সংক্রান্ত এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ইয়াও ওয়েন বলেন, এ ক্ষেত্রে আমাদের বাস্তববাদী হতে হবে। নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য নানা শর্ত ও নিশ্চয়তা প্রয়োজন। তাই চীন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, প্রতিবেশী দেশ, আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। এটি সব স্টেকহোল্ডারের একটি যৌথ প্রচেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যাবাসনই চূড়ান্ত সমাধান—এটি শুধু চীনের নয়, বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশেরও অভিন্ন অবস্থান। তাঁর বিশ্বাস, দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের দিকেও অগ্রগতি হচ্ছে। বিষয়টি কেবল বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার নয়; এটি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার সঙ্গেও জড়িত। এ লক্ষ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় কাঠামো রয়েছে, যেখানে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে একযোগে কাজ করতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ বলেও তিনি মন্তব্য করেন। প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে চীন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে বলেও জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সবাই প্রত্যাবাসন চায়, তবে বাস্তবতা বিবেচনায় নিতে হবে। বর্তমানে আরাকান রাজ্যের স্থল পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাবাসন কার্যকর করা কঠিন। তাই মিয়ানমারের অভ্যন্তরে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে আরও প্রচেষ্টা প্রয়োজন। পাশাপাশি বাংলাদেশ ও রাখাইনে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে ইউএন এজেন্সি ও দাতাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যাবাসনের টেকসই সমাধান খুঁজে পেতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এটি সব স্টেকহোল্ডারের অভিন্ন দায়িত্ব ও লক্ষ্য। এ প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগবে, এটি আমার পর্যবেক্ষণ।