Image description

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসন রোধে একাধিক নির্বাহী আদেশ জারির পর থেকেই দেশটির বিভিন্ন শহরে অবস্থানরত অবৈধ অভিবাসীরা আতঙ্কে রয়েছেন। ইতিমধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তার অভিযানও শুরু হয়েছে। নিউইয়র্কে দুই বাংলাদেশি গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া গেছে। একদিকে তীব্র শীত, সঙ্গে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের অভিযানের কারণে অনেক এলাকাতেই গা ঢাকা দিচ্ছেন বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের অবৈধ অভিবাসীরা।

নিউইয়র্কে দুজনের গ্রেপ্তার তথ্য আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন দেশটিতে বসবাসরত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন। তিনি জানান, এখানে বসবাসরত বাঙালিরা জানতে পেরেছেন, দুজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে কেন গ্রেপ্তার হয়েছেন, সেটা জানার চেষ্টা করছেন কমিউনিটির নেতারা।

অভিযানের কারণে আতঙ্ক বিভিন্ন স্থানেই ছড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্রেসি নাউয়ের খবরে বলা হচ্ছে, জনসাধারণকে দাঁড় করিয়ে নথি পরীক্ষা করা হচ্ছে। গণমাধ্যমটির ভিডিওতে দেখা যায়, অনেকেই অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তাদের নথি দেখাচ্ছেন। নথি না

থাকা অনেকেই কাঁদছেন।

নিউইয়র্কের ব্রংকস এলাকায় থাকেন মো. আকুনজি। ২০০০ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। বলেন, অবৈধ অভিবাসীদের ভেতরে একটা আতঙ্ক কাজ করছে। একে তো শীত, তাপমাত্রা সেলসিয়াস স্কেলে মাইনাসে রয়েছে, তার ওপর এই অভিযানের আতঙ্ক। এ কারণে রাস্তাঘাট খানিকটা ফাঁকা। তিনি জানান, ট্রাম্পের এর আগের আমলেও এতটা আতঙ্কে ছিলেন না অবৈধ অভিবাসীরা।

এদিকে ইব্রাহীম চৌধুরী খোকন বলেন, বাঙালি ও বাংলাদেশিদের মধ্যে চাপা আতঙ্ক আছে। তবে গণমাধ্যমে যতটা প্রচার চলছে ততটা নয়।

নিউইয়র্কের আইনি ব্যবস্থা তুলে ধরেই ইব্রাহীম চৌধুরী বলেন, অবৈধদের সুরক্ষা দেওয়ার আইন ছিল নিউইয়র্ক শহর ও অঙ্গরাজ্যে। তবে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ জারির পর নিউইয়র্ক মেয়র মেয়র এরিক অ‍্যাডামস অভিবাসন বিভাগকে সাহায্য করার বিষয়ে পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছেন। এতে ডেমোক্র্যাটরা চটেছেন মেয়রের ওপর।

তবে অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন কমিউনিটির নেতারা। ইব্রাহীম চৌধুরী বলেন, যেসব ফ্ল্যাটে অবৈধ অভিবাসীরা থাকেন, অভিবাসন বিভাগ থেকে কেউ কড়া নাড়লে দরজা না খুলতে নিষেধ করেছেন নেতারা। কারণ তল্লাশি চালাতে সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে কেউ বাধ্য নন।

আর মো. আকুনজি বলেন, অভিবাসী হিসেবে যাঁরা সেখানে অবস্থান করছেন, তাঁরা সঙ্গে যেন একটি পরিচয়পত্র রাখেন, সেই পরামর্শ কমিউনিটি নেতারা দিয়েছেন।

ক্ষমা চাওয়ায় খেপেছেন ট্রাম্প

এদিকে অবৈধ অভিবাসীদের বের না করে দিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন ওয়াশিংটন ন্যাশনাল ক্যাথেড্রালের এক আর্চ বিশপ। ওই ক্যাথেড্রালে ট্রাম্প তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গিয়েছিলেন প্রার্থনার জন্য। সেখানে ট্রাম্পের উদ্দেশে ওই বিশপ বলেন, আপনি অভিবাসী ও সমকামীদের ক্ষমা করে দিন। অবৈধ অভিবাসী সবাই অপরাধের সঙ্গে জড়িত নন।

বিশপের এই বক্তব্যের ভিডিও ভাইরালও হয়েছে। তবে এর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ট্রাম্প। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ওই বিশপ কাজে ভালো না। তাঁর প্রার্থনাও খুব একটা আনন্দদায়ক নয়। এ ছাড়া ওই বিশপকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন তিনি।

অবৈধ অভিবাসন রোধে বেশ কিছু নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন ট্রাম্প। এ ছাড়া অবৈধদের ধরতে শুরু হয়েছে অভিযানও। তাই নথি হালনাগাদ করতে অভিবাসন বিভাগের কার্যালয়ে ভিড়। গত মঙ্গলবার নর্থ ক্যারোলাইনার শার্টল শহরে। ছবি: এএফপি