ইসরাইলের যুদ্ধবাজ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার উগ্র ইহুদিপন্থি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচকে খুশি রাখতেই এবার পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে সামরিক অভিযান জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সেই সঙ্গে তিনি নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে, অধিকৃত পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে হামলা জোরদার করা হবে। তার এই প্রতিশ্রুতি পেয়েই অর্থমন্ত্রী স্মোটরিচ পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।
হিব্রু ভাষার বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম মঙ্গলবার নেতানিয়াহুর এ সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি ফাঁস করে দিয়েছে।
এসব গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়ার কারণে স্মোটরিচ মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করার এবং সরকার পতনের যে হুমকি দিয়েছিলেন, তা বাস্তবায়ন করা থেকে তাকে বিরত রাখার জন্য নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি পশ্চিম তীরে ব্যাপক মাত্রায় হামলা বাড়িয়ে দেবেন।
স্মোটরিচ গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির ঘোরতর বিরোধী ছিলেন এবং তিনি শুরু থেকেই বলে আসছিলেন যে, যুদ্ধবিরতির অর্থ হবে হামাাসের কাছে ইসরাইলের ‘আত্মসমর্পণ’।
তা সত্ত্বেও দখলদার ইসরাইল বহির্বিশ্বের চাপের মুখে গত ১৫ জানুয়ারি হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত করে। এরপর ১৭ জানুয়ারি নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভা চুক্তিটি অনুমোদন দেয়। এর পর ১৮ জানুয়ারি স্মোটরিচ এক বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতির তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি দাবি করেন, নেতানিয়াহু একটি ‘খারাপ ও বিপর্যকর’ চুক্তির প্রতি সবুজ সংকেত দিয়েছেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে চুক্তির বিপক্ষে ভোটও দেন স্মোটরিচ। তবে নেতানিয়াহু তাকে তার অন্য কিছু উগ্রবাদী দাবি মেনে নিতে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর অপর কট্টরপন্থি মন্ত্রী বেন-গাভিরের মতো পদত্যাগ করেননি অর্থমন্ত্রী।
তিনি পরবর্তীতে এক বক্তব্যে দাবি করেছেন, গাজায় হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস না করা পর্যন্ত এ যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ করা হবে না বলে নেতানিয়াহু তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, হামাস ইসরাইলের সঙ্গে যে চুক্তি করেছে তাকে ‘যুদ্ধবিরতি’ বলা হলেও তিন ধাপে এটির বাস্তবায়ন হওয়ার পর গাজা যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
এমন আবহের মধ্যে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এমনকি বেশ কয়েকটি পাড়া-মহল্লা থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করার কাজ চালাচ্ছে।
জেনিনে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি বাহিনীর এই অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আয়রন ওয়াল’ নামের এই অভিযানটি কয়েক দিন ধরে চলবে। সূত্র: তাসনিম নিউজ