Image description
 

রাশিয়া চলতি বছর এক লাখ ২০ হাজার গ্লাইড বোমা তৈরির পরিকল্পনা করেছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের এক জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তা। ওই বোমাগুলো তৈরির খরচ তুলনামূলক কম হলেও বিধ্বংসী ক্ষমতা যথেষ্ট। পাশাপাশি এর মধ্যে রয়েছে দূরের নগরে আঘাত হানতে সক্ষম দীর্ঘপাল্লায় ছুঁড়ে দেওয়ার মতো অন্তত পাঁচশ’ বোমা। খবর কিয়েভ টাইমসের।
গ্লাইড বোমাতে ডানা এবং কখনো ইঞ্জিন যুক্ত থাকে, যা এগুলোকে লক্ষ্যবস্তুর দিকে কয়েক ডজন কিলোমিটার পর্যন্ত এগিয়ে নিতে পারে। ২০২২ সালের পূর্ণ আক্রমণ শুরুর পর রাশিয়া ব্যাপকহারে অস্ত্র উৎপাদন বাড়িয়েছে। অবশ্য রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ও গোপন তথ্য বলে এসব তথ্য সবার কাছে প্রকাশ করা হয় না। তাই ইউক্রেনের দাবি করা বোমার সংখ্যার সত্যতা রয়টার্স স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি। ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের উপপ্রধান মেজর জেনারেল ভাদিম স্কিবিতস্কি এক রাশিয়ার উৎপাদন লক্ষ্যের কথা জানালেও, তার তথ্য প্রাপ্তি বা আগের উৎপাদন কত ছিল, সে বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। তিনি দাবি করেন, এক লাখ ২০ হাজারের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে নতুন বোমা ছাড়াও পুরোনো বিস্ফোরকগুলোকে গ্লাইড প্রযুক্তিতে রূপান্তর করা সংখ্যাও অন্তর্ভুক্ত আছে।

 

তিনি আরও বলেন, রুশ বাহিনী দৈনিক ২০০ থেকে ২৫০টি গ্লাইড বোমা নিক্ষেপ করছে, যা গত মাসে ছিল প্রায় ১৭০টি। গ্লাইড বোমার আগের আনুমানিক পাল্লা ছিল সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার। এতে রাশিয়ার যুদ্ধবিমানগুলো সম্মুখ সারির কাছে না গিয়েও ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা ভেদ করে বোমা নিক্ষেপ করতে পারত, ফলে বিমান ভূপাতিত হওয়ার ঝুঁকিও কমে। মিসাইলের তুলনায় এগুলোর তৈরি অনেক সস্তা এবং উৎপাদন করা যায় বেশি সংখ্যায়। কয়েকশ’ কেজি বিস্ফোরণ শক্তির কারণে এগুলো সহজেই ভবন গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম। খারকিভ ও খেরসনের মতো ফ্রন্টলাইনের শহরগুলোতে এর তীব্র আঘাত দেখা গেছে। স্কিবিতস্কি জানান, রাশিয়া এমন একটি নতুন গ্লাইড বোমার ব্যাপক উৎপাদন শুরু করছে, যা যুদ্ধবিমান থেকে ফেললে সর্বোচ্চ ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভেসে আগাতে পারে।

এ বছরের মধ্যেই এমন প্রায় ৫০০ বোমা উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনের ধারণা রাশিয়া এমন পরিবর্তনও আনছে যেন বোমাগুলো ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভেসে যেতে পারে। এতে মিসাইল ব্যবহার না করেও আরও দূরের ইউক্রেনীয় শহরগুলো লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবে। গত অক্টোবরে মাইকোলাইভ, পোলতাভা ও ওডেসা অঞ্চলে গ্লাইড বোমা হামলার ঘটনা যেগুলো ফ্রন্টলাইন থেকে বহু দূরে ইতোমধ্যেই এই বাড়তি পাল্লার সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তাদের দাবি- রাশিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় না, যদিও আগ্রাসনে হাজারো মানুষ হতাহত হয়েছেন।