মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদকালে দেশটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম বড় তিনটি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা বিপুল জয় পেয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন হয়। ‘বিশ্বের রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত এই শহরের মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী জোহরান মামদানি।
মামদানি নিউইয়র্ক শহরের ১১১ তম মেয়র নির্বাচিত হলেন। তিনি নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর, স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমো ও রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করে ইতিহাস গড়েছেন। এই জয়ের মধ্য দিয়ে মামদানি নিউইয়র্ক শহরের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন।
মামদানি নিউইয়র্ক শহরের প্রথম দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত ও আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী মেয়র। এক শতাব্দীর মধ্যে তিনি নিউইয়র্ক শহরের সর্বকনিষ্ঠ মেয়র।
নিউইয়র্কের আদি বাসিন্দা ট্রাম্প কোনোভাবেই চাননি, মামদানি এই শহরের মেয়র নির্বাচিত হোন। তিনি আগেই হুমকি দিয়েছেন, মামদানির মতো লোক নির্বাচিত হলে তিনি নিউইয়র্ক শহরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল আটকে দেবেন। মামদানি অবৈধ অভিবাসী বলেও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। এ নিয়েও তিনি হুমকি দিয়েছেন।
গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি ও ভার্জিনিয়ায় গভর্নর নির্বাচন হয়। এই দুই নির্বাচনেও ডেমোক্র্যাট প্রার্থীরা জয়ী হচ্ছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এই আভাস দিয়েছে।
নিউজার্সিতে শেরিল
সিএনএনের আভাস অনুযায়ী, নিউজার্সির গভর্নর পদে জয়ী হচ্ছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী মাইকি শেরিল।
শেরিল নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের ইতিহাসে প্রথম নারী ডেমোক্র্যাট গভর্নর হতে যাচ্ছেন। তিনি রিপাবলিকান প্রার্থী জ্যাক সিয়াতারেল্লিকে পরাজিত করতে যাচ্ছেন।
সিয়াতারেল্লি অঙ্গরাজ্যের সাবেক আইনপ্রণেতা। তিনি ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তিনি তৃতীয়বারের মতো গভর্নর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেন।
ভার্জিনিয়ায় স্প্যানবার্গার
সিএনএনের আভাস অনুযায়ী, ভার্জিনিয়ায় গভর্নর পদে নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী এবিগেইল স্প্যানবার্গার জয়ী হচ্ছেন।
স্প্যানবার্গার সাবেক ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য। তিনি সিআইএর সাবেক কর্মকর্তা। স্প্যানবার্গার হতে যাচ্ছেন ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রথম নারী গভর্নর।
রিপাবলিকান লেফটেন্যান্ট গভর্নর উইনসাম আর্ল-সিয়ার্সকে পরাজিত করছেন স্প্যানবার্গার। তাঁর নির্বাচনী প্রচারের কেন্দ্রে ছিল মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয় রাখা। ফেডারেল চাকরিতে কাটছাঁটসহ শাটডাউনের প্রভাব নিয়ে অঙ্গরাজ্যের মানুষের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর করা।
স্প্যানবার্গার তাঁর প্রচারে প্রায়ই উল্লেখ করেছেন যে, আর্ল-সিয়ার্স রিপাবলিকান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ, তাঁর অনুসারী। তবে ট্রাম্প নিজে এই নির্বাচনে আর্ল-সিয়ার্সকে সমর্থন জানাননি।
নিউজার্সি ও ভার্জিনিয়া—উভয় অঙ্গরাজ্য ডেমোক্রেটিক রাজনীতির সমর্থক, বা ‘ব্লু স্টেট’। তবে গত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই দুই অঙ্গরাজ্যেই ট্রাম্প হারেন। কিন্তু ২০১৬ সালের তুলনায় ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প ভালো ফল করেন।