বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা’ নিয়ে আসামের রাজনীতিতে তোলপাড় চলছে। কংগ্রেসের এক অনুষ্ঠানে এই সঙ্গীত এক সদস্য গাওয়া নিয়ে বিজেপি-কংগ্রেস কথার লড়াই চলছে। তার ওপর বুধবার আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা শ্রীভূমি জেলায় কংগ্রেসের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার নির্দেশ দিয়েছেন। এতে করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সোমবার এক সভার ভিডিওতে দেখা যায় কংগ্রেসের এক সিনিয়র নেতা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাইছেন। হিমান্ত বিশ্ব শর্মা এই ঘটনাকে ‘জাতীয় অনুভূতির প্রতি গুরুতর অপমান’ বলে নিন্দা করেন। তিনি বলেন, ‘ওই গানটি ভারতের জাতীয় সংগীতের মতোই শ্রদ্ধার সঙ্গে গাওয়া হয়েছে।’ এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বিতর্কের সূত্রপাত হয় যখন কংগ্রেস নেতা বিদ্যু ভূষণ দাস কংগ্রেস সেবা দলের এক সভায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গান ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গেয়ে শোনান। গানটি ১৯০৫ সালে বৃটিশ আমলে বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতায় স্বদেশি আন্দোলনের সময় লেখা হয়েছিল এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ এটি জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করে। হিমান্ত বিশ্ব শর্মা এ ঘটনাকে ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ তত্ত্বের সঙ্গে যুক্ত করেন, যা তিনি পাকিস্তান-সমর্থিত একটি প্রকল্প বলে দাবি করেন। তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, ঢাকায় সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের চিফস অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে ‘আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামের একটি বই উপহার দেন। এর প্রচ্ছদে এমন একটি বিমূর্ত মানচিত্র ছিল, যাতে উত্তর-পূর্ব ভারতের অংশও অন্তর্ভুক্ত বলে মনে হয়। হিমান্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘পদক্ষেপ নেয়ার বদলে গৌরব গগৈ যেন এতে খুশিই।’
লোকসভার কংগ্রেসের উপনেতা গৌরব গগৈ এ ঘটনাকে সমর্থন করে বলেন, গানটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগেই লেখা হয়েছিল এবং এটি বাঙালির আবেগ ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীক। তিনি বলেন, বিজেপির আইটি সেলের ক্ষোভই প্রমাণ করে তারা রবীন্দ্রনাথের উত্তরাধিকার সম্পর্কে অজ্ঞ।
গগৈ অভিযোগ করেন, বিজেপি একদিকে বাঙালি ভাষা ও সংস্কৃতিকে অবমূল্যায়ন করে, আবার অন্যদিকে নির্বাচনী স্বার্থে বাঙালি ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীকে ব্যবহার করে।