ধর্ম অবমাননা ও কূটুক্তির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর একই ঘটনায় দুজনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে দুয়েকদিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া একজনের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের ঘটনা উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করে বার্তা দেওয়া হবে।
জানা গেছে, ধর্ষণ ও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের মামলায় কারাগারে থাকা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ছাত্র শ্রীশান্ত রায়ের সঙ্গে ধর্ম অবমাননা ও হিজাব পরা নারীদের প্রতি যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে ঢাবির তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা হলেন আইবিএর বিবিএ-৩০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহতাজুর রহমান ও তাসনিয়া ইসলাম এবং ২০২১-২০২২ সেশনের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) শিক্ষার্থী বিভাগের আবরার ফাইয়াজ।
এর মধ্যে আবরার ফাইয়াজকে গতকাল বুধবার (২৯ অক্টোবর) ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, নিজ বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে ইসলাম এবং সনাতন ধর্ম বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করে। আল্লাহ, নবী (সা.) ও তাঁর স্ত্রীদের নামে মিথ্যা, অশালীন এবং বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের মন্তব্য গর্হিত অপরাধ, বিদ্বেষমূলক এবং ধর্ম অবমাননার শামীল আপনার এ অপতৎপরতা সাধারণ ধর্মপ্রাণ ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ক্রোধের জন্য দেয়। আবেদনকারী শিক্ষার্থীগণ আপনার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রক্টর বরাবর গত ২৬ তারিখে লিখিত আবেদন করেন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে ওদিনই ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করেন। তথ্যানুসন্ধান কমিটির সুপারিশ এবং ভিসির অনুমোদনের প্রেক্ষিতে আবরার ফাইয়াজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হলো।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ ঘটনায় একজনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি তাকে ডাকা হবে এবং বক্তব্য জানতে চাওয়া হবে। বাকি দুইজনের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন দেখে তাদের বিরুদ্ধে শিগগির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া আরও একজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ পেয়েছে প্রক্টর অফিস। এ বিষয়ে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, সনাতন ধর্ম নিয়ে অবমাননার অভিযোগে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এটিও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এ ধরনের অভিযোগগুলো আসার সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অনেক সময় দেখা যায়, ব্যবস্থা নিতে গিয়ে দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেতে হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেওয়া আমার ক্ষমতা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করি।