ইসরাইলি সেনাবাহিনীর অন্তত ৫০ সেনা সদস্যের আত্মহত্যা এবং ২৭৯ জন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত সময়ে এসব ঘটনা ঘটে বলে নতুন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে। গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরাইলের গণহত্যামূলক যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই উদ্বেগজনক তথ্য সামনে এসেছে।
ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটের রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সেন্টার মঙ্গলবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়েছে, প্রতি একজন সেনা যে আত্মহত্যায় প্রাণ হারিয়েছেন, তার বিপরীতে আরও সাতজন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। খবর প্রেস টিভির।
প্রতিবেদনটি আরও জানায়, ২০২৪ সালে আত্মহত্যার ঘটনার প্রকৃতিতে একটি বড় পরিবর্তন দেখা গেছে। সেই বছর আত্মহত্যাকারীদের ৭৮ শতাংশ ছিলেন যুদ্ধরত সেনা। যেখানে ২০১৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এই হার ছিল মাত্র ৪২ থেকে ৪৫ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই হার বৃদ্ধির একটি বড় কারণ হলো ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজায় ইসরাইলের ব্যাপক রিজার্ভ সৈন্য সমাবেশ। যেখানে হাজার হাজার সেনাকে পুনরায় সক্রিয় ডিউটিতে ডাকা হয়।
প্রতিবেদনে ব্যবহৃত অধিকাংশ তথ্য এসেছে ইসরাইলি সামরিক মেডিক্যাল কর্পসের মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং নেসেটের বিভিন্ন কমিটিতে অনুষ্ঠিত আলোচনাগুলো থেকে।
প্রতিবেদনটি স্পষ্ট করে বলেছে, এই পরিসংখ্যান শুধু সেই সেনাদের অন্তর্ভুক্ত করেছে, যারা আত্মহত্যা বা আত্মহত্যার চেষ্টার সময় সক্রিয় বা রিজার্ভ ডিউটিতে ছিলেন— অবসরে গিয়ে আত্মহত্যা করা প্রাক্তন সেনাদের এ তালিকায় তুলে ধরা হয়নি।
প্রতিবেদনটির হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০ জন ইসরাইলি সেনা আত্মহত্যা করে প্রাণ হারিয়েছেন।
এর, আগের রিপোর্টগুলো থেকেও জানা গেছে, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্তত ৪৩ জন ইসরাইলি সেনা আত্মহত্যা করেছেন।
চলতি বছরের জুলাই মাসে ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো জানায়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে প্রায় চার ডজন সেনা আত্মহত্যা করেছেন। যারা গাজার যুদ্ধক্ষেত্রে ভয়াবহ সহিংসতা ও মানসিক আঘাতের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন।
যদিও ইসরাইলি সেনাবাহিনী এসব আত্মহত্যার ঘটনা এবং তার প্রেক্ষাপট গোপন রাখার চেষ্টা করছে, তবু একের পর এক তথ্য ফাঁস হয়ে সামনে আসছে— যা এই সংকটের তীব্রতা ও ব্যাপকতা তুলে ধরছে।
প্রতিবেদনগুলো আরও জানিয়েছে, কিছু সেনাকে সামরিক মর্যাদা ছাড়াই গোপনে দাফন করা হয়েছে। যাতে আত্মহত্যার প্রকৃত সংখ্যা ও তার কারণ প্রকাশ না পায়।