Image description

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে নিয়ে আবারও তীব্র কটাক্ষ করেছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে মে মাসের সংঘর্ষে ভারতের সাতটি নতুন যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়। এটা মোদি সরকারের জন্য ‘একটি বড় লজ্জাজনক পরাজয়’। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে হস্তক্ষেপ না করলে এই সংঘর্ষ পারমাণবিক যুদ্ধে রূপ নিতে পারত। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ। জাপানে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে এক ডিনারে বক্তৃতা দেয়ার সময় ট্রাম্প বলেন, তিনি যে বহু যুদ্ধ বন্ধ করেছেন তার নেপথ্যে কারণ তার আরোপিত বাণিজ্য শুল্ক। তার ভাষায়, আমি বিশ্বের জন্য দারুণ একটা কাজ করেছি। যদি আপনি ভারত ও পাকিস্তানের দিকে তাকান, তারা তখন যুদ্ধের মুখে ছিল। সাতটা একদম নতুন, দারুণ সুন্দর বিমান গুলি করে নামানো হয়। আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী (শেহবাজ শরিফ)- খুবই ভদ্র, ভালো মানুষ- এবং ফিল্ড মার্শাল (অসিম মুনির)- তাকেও বলেছিলাম, ‘দেখো, তোমরা যদি যুদ্ধ করো, তাহলে কোনো বাণিজ্য হবে না।’

ট্রাম্প যোগ করেন, আমি বলেছিলাম, ‘যদি লড়াই করো, তাহলে আমরা কোনো চুক্তি করব না।’ আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই যুদ্ধ থেমে গেল। অবিশ্বাস্য ছিল এটা। আমি মনে করি, বাণিজ্যই ৭০ শতাংশ কারণ যে কারণে যুদ্ধ হয়নি।

২২ অক্টোবর হোয়াইট হাউসে দীপাবলি উদযাপনের সময় ট্রাম্প বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে বলেছিলেন যেন পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ না হয়। তিনি দাবি করেন, কূটনীতি ও বাণিজ্যিক চাপের মাধ্যমে তিনি বহু সংঘর্ষ ঠেকাতে পেরেছেন। ট্রাম্প আরও বলেন, আমরা কিছুক্ষণ আগেই কথা বলেছি- চল, পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো যুদ্ধ না করি। বাণিজ্য জড়িত ছিল বলেই আমি সেটা নিয়ে কথা বলতে পেরেছিলাম। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আর এখন পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে কোনো যুদ্ধ নেই। এটা খুবই ভালো ব্যাপার। এরপর মোদিকে প্রশংসা করে বলেন, তিনি দারুণ একজন মানুষ এবং বছরের পর বছর ধরে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে উঠেছেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, তিনি এ পর্যন্ত আটটি যুদ্ধ ঠেকিয়েছেন, যা সম্ভব হয়েছে তার তথাকথিত ‘চুক্তি ও বাণিজ্য কৌশলের’ মাধ্যমে। এর মধ্যে পাকিস্তান-ভারত সংঘর্ষও রয়েছে। ট্রাম্প আগেও বহুবার দাবি করেছেন যে, তিনি এই দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে ভূমিকা রেখেছেন। ভারত ও পাকিস্তান স্বাধীনতার পর তিনটি যুদ্ধ করেছে এবং আজও কাশ্মীরের বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে তীব্র বিরোধে লিপ্ত রয়েছে। মে মাসে দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল সেই সংঘর্ষ। এটি শুরু হয় জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় পর্যটকদের ওপর হামলার পর। এ জন্য নয়াদিল্লি পাকিস্তানকে দায়ী করে। ইসলামাবাদ ওই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং জানায়, কাশ্মীরে ২৬ জন নিহতের এই হামলায় তাদের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। এটি ২০০৮ সালের মুম্বই হামলার পর ভারতের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সবচেয়ে বড় আক্রমণ। এই ঘটনার পর ভারত তিন দিন ধরে পাকিস্তানে নির্বিচারে হামলা চালায়, যাতে বহু নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। এরপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রতিরক্ষামূলক অভিযানে নামে- ‘অপারেশন বুনইয়ান-উম-মারসুস’। যার মাধ্যমে পাকিস্তান ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান (এর মধ্যে তিনটি রাফাল) ও বহু ড্রোন ভূপাতিত করে।