Image description
 

আসামের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে, ব্রহ্মপুত্র নদীর তীরে অবস্থিত এক রহস্যময় গ্রাম—মায়ং। প্রাচীনকাল থেকে লোককাহিনী, মন্ত্র, তান্ত্রিক আচার এবং জাদুবিদ্যার গল্পে ঘেরা এই গ্রাম আজ পরিচিত ভারতের ‘কালো জাদুর রাজধানী’ হিসেবে।

 

মায়ংয়ের ইতিহাসে মিশে আছে রহস্য আর বিশ্বাসের এক অদ্ভুত মিশ্রণ। স্থানীয়দের মতে, একসময় এই অঞ্চলের ‘ওজা’ বা ‘বেজ’ নামে পরিচিত জাদুকররা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে নিরাময় মন্ত্র ও আচার-অনুষ্ঠানের ঐতিহ্য বহন করে আসছে। জনশ্রুতি আছে, মহাভারতের ঘটোৎকচ নাকি এখানেই জাদু শিখেছিল। এমনকি প্রাচীন সেনাবাহিনী এক রাতে অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার মতো গল্পও প্রচলিত।

 

গ্রামের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে মায়ং সেন্ট্রাল মিউজিয়াম অ্যান্ড এম্পোরিয়াম, যা স্থানীয়ভাবে গ্রাম জাদুঘর নামেও পরিচিত। এখানে রয়েছে বড় তরবারির মতো অস্ত্র এবং সরঞ্জাম (মানব বলিদানের রীতিনীতির অনুরূপ) যা একটি অন্ধকার অতীতের ইঙ্গিত দেয়। এছাড়া আরো রয়েছে বিরল পাণ্ডুলিপি ‘মন্ত্র পুথি’, প্রাচীন অস্ত্র, পোড়ামাটির মূর্তি, ধর্মীয় সরঞ্জাম এবং বিভিন্ন লোকজ নিদর্শন। এগুলো দেখায়, কীভাবে একসময় জাদু, ধর্ম এখানে দৈনন্দিন জীবনে জড়িত ছিল।

তবে আসাম সরকার ২০২৪ সালে ‘আরোগ্য (অমঙ্গল প্রতিরোধ) অনুশীলন বিল’ পাস করে সম্ভাব্য ক্ষতিকর ‘যাদুকরী নিরাময়’ রীতিগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। তবুও মায়ং আজও রহস্য, ঐতিহ্য ও বাস্তবতা মিলেমিশে এক অন্যরকম পরিবেশ গড়ে তুলেছে। সূত্র: এনডিটিভি