
নতুন করে আলোচনায় বসতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি অভিযোগে করেন, যুক্তরাষ্ট্র গায়ের জোরে সবাইকে চুক্তিতে রাজি করাতে চায়। একই বক্তব্যে, তেহরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংসে ট্রাম্পের দাবিও অস্বীকার করেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে সোমবার (২০ অক্টোবর) প্রচারিত ভাষণে খামেনি বলেন, ট্রাম্প নিজেকে ডিল মেকার (যিনি চুক্তি করতে পারেন) দাবি করেন। কিন্তু নিজেদের মনোমতো ফল পাওয়ার জন্য জোরজবরদস্তি করে কিছু আদায় করলে সেটাকে চুক্তি বলে না। সেটা হয়ে যায় বলপ্রয়োগ করে দমন।
গত সপ্তাহে ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ভাষণ দেন ট্রাম্প। গাজায় যুদ্ধবিরতির কথিত সাফল্য নিয়ে নিজেরাই নিজেদের পিঠ চাপড়ে দেওয়ার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, এবার তেহরানের সঙ্গে ওয়াশিংটন শান্তি চুক্তি করতে পারলে তা দারুণ একটা ব্যাপার হবে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বহুদিন ধরেই ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের রেষারেষি বেঁধেই আছে। তাদের দাবি, গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য অনুমোদিত সীমার বাইরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে তেহরান। তবে তাদের দাবির বিপরীতে ইরান বরাবরই বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির পেছনে সামরিক কোনও উদ্দেশ্য নেই। তারা কেবল শান্তিপূর্ণ কারণে (বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো বেসামরিক কাজ) কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।
পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত জুনে তেহরানে যৌথ বিমানহামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল। সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানোর আগে তেহরান-ওয়াশিংটনের মধ্যে পাঁচ দফা পরোক্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই হামলার পর অবশ্য আলোচনার পথ অনেকটাই রুদ্ধ হয়ে যায়।
বিমান হামলার 'সাফল্য' নিয়ে ট্রাম্প বরাবরই দাবি করে আসছেন, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। তবে হোয়াইট হাউজের দাবি অস্বীকার করে আসছে তেহরানের শাসকগোষ্ঠী।
সোমবার প্রচারিত ভাষণে এ বিষয়ের উল্লেখ করে খামেনি বলেন, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা ধ্বংসের দাবি নিয়ে খুব বড়াই করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। খুব ভালো, দিবাস্বপ্ন দেখতে থাকুন!
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে মার্কিন অবস্থানের বিরোধিতা করে তিনি আরও বলেন, তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনা আছে কি নেই, এটার সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কটা কি! এসব হস্তক্ষেপ অনুচিত, অন্যায় ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ।