Image description
 

আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আমরা যখন নিন্ম আদালতের সংস্কার করি তখন আমাদের দুঃখ লাগে উচ্চ আদালতের সংস্কার হলো না তাহলে কোনো লাভ হয় না। নিন্ম আদালতে যে মামলাটা নিষ্পিত্তি হয় উচ্চ আদালতে তা বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। শিশু আছিয়ার ঘটনায় আইন পরিবর্তন করে এক মাসে নিন্ম আদালতে বিচার সম্পন্ন হলো কিন্তু উচ্চ আদালতে আগামী কয়েক বছরে নিস্পত্তি হবে কিনা আমরা জানি না। বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে ই-বেইলবন্ড প্রত্যার্বন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

 

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পাবলিক রিলেশন অফিসার ড. মো. রেজাউল করিম, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. আবু শামীম আজাদ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন, সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফজল মুহাম্মদ মুশিউর রহমান, আইজীবী সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ুন কবির ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধান প্রমুখ।

উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জকে জানতাম নির্যাতনের প্রতীক হিসাবে। এখানে অনেক বড় ও কুখ্যাত গডফাদার ছিল। এখানে অনেক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে এবং সাত খুনের মত ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল। আমরা এই নারায়ণগঞ্জকে নির্যাতনের পরিবর্তে মুক্তির জায়গা হিসাবে দেখতে চাই। তারই একটা প্রতীক হিসাবে অনলাইন বেল বন্ডের প্রক্রিঢাটা শুরু করলাম   পাইলট  প্রকল্প হিসাবে। অনলাইন বেইলবন্ড কোন বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপ হিসাবে চালু করা হয়নি।

 

ড. আসিফ নজরুল বলেন, উচ্চ আদালতের বিচারকরা পরিদর্শনে যান নিন্ম আদালতের বিচারকরা কাজ করছেন কিনা দেখার জন্য। কিন্তু এটা পরিদর্শনে থাকে না আনন্দ ভ্রমণে পরিণত হয়। এমন ঘটনাও শুনেছি, বগুড়াতে তৎকালিন প্রধান বিচারপতি পরিদর্শনের কাজে গিয়েছিলেন ২ লাখ ৬৩ হাজার টাকার খাবারের বিল হয়েছে। কারণ উনার সাথে বিরাট একটি টিম গিয়েছিল। এ টাকার যোগান দিতে হয় নিন্ম আদালতের বিচারকদের। পরিদর্শনের কথা শুনলে নিন্ম আদালতের বিচারকরা ভয়ে থাকে। কারণ টাকাটা কোথাও সেন্সন নাই। উনাদের খাওয়ানো দাওয়ানোর অন্য নাম হয়ে গেছে পরিদর্শন। কিন্তু এটা হওয়ার কথা ছিল না।

 

তিনি বলেন, আমাদের বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন উচ্চ আদালতের সংস্কারের জন্য ১৫টা প্রস্তাব করেছেন। এটা প্রস্তাবও বাস্তবায়িত হয়নি। বিবেচিত হয়েছে কিনা জানি না। আমি মনে করি, নিন্ম ও উচ্চ আদালতকে বিচ্ছিন্নভাবে থাকলে হবে না। নিন্ম আদালতে অনেক সংস্কার করবো কিন্তু উচ্চ আদালত আগের মতো থাকবে তাহলে লাভ হবে না। বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হবে না। আশাকরি, এ সংশ্লিষ্টরা সচেতন হবেন। তিনি বলেন, বাধ্যতামূলক লিগ্যাল আইডের ব্যবস্থা করেছি। যাতে ছোটখাট বিরোধের জন্য আদালতে না গিয়েই সমাধা করা যায়। সেলক্ষ্য আমরা অনেকগুলো সংস্কার করেছিল, এটাও পাইলট পর্যায়ে রয়েছে। আশাকরি দুই-তিন মাসে অনলাইন বেইল বন্ড ও লিগ্যাল আইড সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারবো।

সরকারি কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তনের বিষয়ে ড. আসিফ নজরুল বলেন, ডাক্তার, ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশসহ সরকারি কর্মকর্তাদের সাক্ষ্যকে দ্রুত সময়ের করার জন্য আমরা অনলাইন ভিত্তিক সাক্ষ্য প্রবর্তনের উদ্যোগ নিচ্ছি।