
ভারতে মুসলমানদের ওপর প্রশাসনিক চাপ ও অভিযান ক্রমেই বাড়ছে। সম্প্রতি “আই লাভ মোহাম্মদ (I Love Mohammad)” লেখা পোস্টার, টি-শার্ট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে। শুধু গ্রেপ্তারই নয়, বহু মুসলমানের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে — বিশেষ করে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে।
ঘটনার সূত্রপাত উত্তরপ্রদেশের কানপুরে, যেখানে গত ৪ সেপ্টেম্বর নবীজির (সা.) জন্মদিন উপলক্ষে মিলাদ আয়োজন করা হয়। সেখানে মুসলমানরা “আই লাভ মোহাম্মদ” লেখা বোর্ড প্রদর্শন করলে স্থানীয় কিছু হিন্দু সংগঠন অভিযোগ তোলে—এটি নাকি ধর্মীয় উসকানি এবং রাজ্যের উৎসবের নিয়ম লঙ্ঘন।
এরপরই পুলিশ “ধর্মীয় উত্তেজনা ছড়ানোর” অভিযোগে একাধিক মুসলমানের বিরুদ্ধে মামলা করে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, এসব অভিযানের কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। ভারতের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে নিজের ধর্ম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী, যতক্ষণ কোনো বক্তব্য বা প্রতীক সহিংসতা বা ঘৃণা উসকে না দেয়, ততক্ষণ তা অপরাধ নয়।
অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রোটেকশন অব সিভিল রাইটস (APCR) জানিয়েছে, মাত্র এক মাসে ২২টি মামলায় ২,৫০০-র বেশি মুসলমানকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, গ্রেপ্তার হয়েছেন অন্তত ৪০ জন।
নাগরিক অধিকারকর্মীদের দাবি, “আই লাভ মোহাম্মদ” প্রচারণা ছিল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ও অহিংস, কিন্তু সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে একে ‘জনশৃঙ্খলা ভঙ্গের মামলা’ হিসেবে ব্যবহার করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মোদি সরকারের হিন্দুত্ববাদী নীতি মুসলমানদের প্রান্তিকীকরণকে আরও ত্বরান্বিত করছে। ২০১৪ সালে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও আইনি হয়রানি বেড়েছে বলেও তাদের পর্যবেক্ষণ।