গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে হামাসের হাতে বন্দি ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে। তাদের মধ্যে ২৫ জন বর্তমানে জীবিত এবং বাকি ৮ জন নিহত বলে মনে করছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।
এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ইয়ানেট।
ইসরাইলি কর্মকর্তারা শনিবার জানিয়েছেন, হামাসের বন্দিত্ব থেকে মুক্তির জন্য নির্ধারিত ৩৩ জন জিম্মির মধ্যে ২৫ জন জীবিত বলে তাদের ধারণা। এই মুক্তি চুক্তির প্রথম ধাপে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে, ইতোমধ্যে ইসরাইলি সরকার এটি অনুমোদন দিয়েছে।
হামাসের সঙ্গে চুক্তির অধীনে, ইসরাইল ৭৩৭ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে। যাদের নাম সরকার অনুমোদনের পরপরই বিচার মন্ত্রণালয় প্রকাশ করেছে। এর পাশাপাশি গাজার আরও ১ হাজার ১৬৭ বাসিন্দাকে মুক্তি দেওয়া হবে, যাদের কেউই ৭ অক্টোবরের হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়নি। ফলে মোট ১,৯০৪ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
তবে চুক্তির বিরোধিতাকারী কিছু মন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছ বলেছেন, এত বেশি সংখ্যক বন্দি মুক্তি দেওয়া নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে। তাদের মতে, হামাসের হাতে আটক আইডিএফ সেনাদের মুক্ত করতে হলে ভবিষ্যতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত সব সন্ত্রাসীকেও মুক্তি দেওয়া লাগতে পারে।
জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ (এনএসসি) সরকারের অনুমোদনের সঙ্গে একটি মতামত সংযুক্ত করেছে। এতে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মতে, চুক্তিটি গ্রহণ করা এখন জরুরি এবং অত্যাবশ্যক। কৌশলগত ও নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি ইসরাইলের বিস্তৃত স্বার্থে উপকারী হবে।
চুক্তিটি ইসরাইলের নিরাপত্তাসংক্রান্ত মন্ত্রিসভার পাস হয়ে রাজনৈতিক অর্জনও করেছে। এর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এক চিঠিতে যেখানে তিনি বলেছেন, চুক্তির পরবর্তী ধাপ যদি বাস্তবায়িত না হয়, তবে ইসরাইলের গাজায় যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার অধিকার থাকবে।
অন্যদিকে, চুক্তি অনুযায়ী আইডিএফ সীমান্তে এক মাইল চওড়া একটি নিরাপত্তা অঞ্চল ৫০ দিনের জন্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে।
হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে টানা ১৫ মাস ধরে লড়াই শেষে এই চুক্তির অগ্রগতি মূলত বাইডেন ও ট্রাম্প প্রশাসনের পরিবর্তনের সময় হয়েছে। হামাস চুক্তিটি সম্পন্ন করার জন্য ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের আগে বিশেষভাবে উদগ্রীব ছিল। এছাড়া ইসরাইলি কর্মকর্তারা আরও বলেছেন, এই সময়ে চুক্তি না হলে ভবিষ্যতে এটি সম্পন্ন করার সম্ভাবনা অনেক কমে যেত।